ETV Bharat / bharat

ইনাডু'র 50 বছর ! সামাজিক দায়িত্ব পালনের এক অনন্য অধ্যায় - Eenadu Golden Jubilee - EENADU GOLDEN JUBILEE

50 Years of 'Eenadu': সময়মতো দরকারি খবরটুকু পাঠকের কাছে পৌঁছে দিলেই দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না ৷ সামাজের বহু মানুষের নানা প্রয়োজনে সাহায্য়ের হাত বাড়িয়ে দেওয়াও দরকার ৷ এই মন্ত্র নিয়েই পথ চলেছে ইনাডু ৷ বন্যা থেকে শুরু করে ভূমিকম্পে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে সংবাদপত্র ৷

50 Years of Eenadu
ইনাডুর 50 বছর (নিজস্ব চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Aug 10, 2024, 6:06 AM IST

Updated : Aug 10, 2024, 7:44 AM IST

সংবাদপত্রের কাজ শুধু খবর পরিবেশন করা নয় ৷ সমাজের বিপন্ন শ্রেণির মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের হয়ে সওয়াল করা এমনকী তেমন প্রয়োজনে নেতৃত্ব দেওয়া সংবাদপত্রের কাজ ৷ গত 50 বছর ধরে সেই কাজটাই করে আসছে ইনাডু ৷ ইনাডুতে প্রকাশিত খবর জনমত তৈরি করেছে, জন-আন্দোলনের রূপ নিয়েছে ৷ যখন কোন দিকে যেতে হবে সমাজ বুঝতে পারছে না তখন দিশা দেখানোর কাজ করেছে ইনাডু ৷ দেশের নাগরিকের সমস্যায় তাঁদের কাছে অন্ন পৌঁছৈ দেওয়ার কাজ বা আর্থিক সাহায্য নিয়ে এগিয়ে আসা- বিপন্নের ত্রাতা হয়ে উঠেছে ইনাডু ৷

Eenadu Golden Jubilee
আর্থিক সাহায্যের চেক প্রদান করছেন রামোজি রাও (নিজস্ব চিত্র)

ইনাডু মনে করে সমসাময়িক খবর প্রকাশ করাই তার একমাত্র কাজ নয় ৷ গত পাঁচ দশক ধরে সহমর্মিতা দেখিয়ে এসেছে এই সংবাদপত্র ৷ একটি ঘটনার কথা বলা দরকার ৷ 1976 সালে অন্ধ্রপ্রদেশে পরপর তিনটি ঝড় হয ৷ তাতে ক্ষতির মুখে বহু মানুষ ৷ লক্ষ লক্ষ একর ফসলের জমি নষ্ট হয়ে যায় ৷ ইনাডু সংবাদপত্রের বয়স তখন মাত্র দু'বছর ৷ ঠিক হয় মানুষের পাশে দাঁড়াতে উদ্যোগ নিতে হবে ৷ 10 হাজার টাকার তহবিল তৈরি হয় ৷ পাশাপাশি পাঠকদেরও অনুরোধ করা হয় বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়াতে ৷ সাড়া দেন তাঁরা ৷ এক মাসের মধ্যে জমা হয় 64 হাজার 756 টাকা ৷ সেই টাকা সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হয ৷

কয়েক বছর বাদে আবার বন্যা হল ডিভিসীমা দ্বীপে ৷ 1977 সালের সেই বন্যা বহু মানুষের সর্বস্ব কেড়ে নেয় ৷ তাঁদের তখন মাথায় ছাদ নেই ৷ সামান্য খাবারটুকুও নেই ৷ তাঁদের জন্য তৈরি করা হয় 25 হাজারের তহবিল ৷ এবার আরও অনেক বেশি পরিমাণে সাহায্য করলেন পাঠকরা ৷ তহবিলে জমা হল 3 লাখ 73 হাজার 927 টাকা ৷ এই টাকা দিয়ে রামকৃষ্ণ মিশনের সাহায্য নিয়ে 112টি বাড়ি তৈরি করেছিল সরকার ৷ এরপর থেকে দ্বীপের সরকারি নাম হয় পরমহংসপুর ৷

Eenadu Golden Jubilee
আর্থিক সাহায্যে তৈরি বাড়ি (নিজস্ব চিত্র)

এর পাশাপাশি কদুরের কাছে কৃষ্ণপুরমে তৈরি হয় আরও 22টি বাড়ি ৷ সেদিনের বন্যায় যাঁরা সব হারিয়েছেন তাঁদের জন্য খাদ্য থেকে শুরু করে পানীয়র ব্যবস্থা করা হয় ৷ এর পাশাপাশি বিশাখাপত্তনমের ডলফিন হোটেলে বন্যা কবলিত মানুষদের জন্য রান্না শুরু হয় ৷ হোটেলের কর্মীরা গিয়ে সবহারাদের খাবার দিয়ে আসতেন ৷ মানবতার জন্য ইনাডুর এই অবদানকে বহু মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছে ৷

1996 সালে টাইফোনে বিপর্যস্ত হয় অন্ধ্রপ্রদেশের কাডাপ্পা জেলা ৷ অক্টোবর মাসের সেই ঘটনায় 25 লাখ টাকার তহবিল গড়ে ইনাডু ৷ সেখান থেকে পাঠকের সাহায্যে উঠেছিল 60 লাখ টাকা ৷ সেই টাকা দিয়ে একটি আশ্রয়স্থল তৈরি করা হয় ৷ ঠিক হয় আবার যদি এমন কোনও পরিস্থিতি তৈরি তাহলে মানুষ সেখানে গিয়ে আশ্রয় নিতে পারেন ৷ আর অন্য সময় স্কুল হিসেবে কাজ করবে ওই ভবনটি ৷ দুমাসের মধ্যে এমন 60টি গ্রামে এই ধরনের ভবন তৈরি করা হল ৷ এবার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন পাঠকরা ৷

Eenadu Golden Jubilee
আর্থিক সাহায্যে তৈরি বাড়ি (নিজস্ব চিত্র)

2009 সালের অক্টোবর মাসে কার্নুল ও মেহেবুবনগর জেলার তিনটি প্রধান নদী (কৃষ্ণা, তুঙ্গভদ্রা এবং কুন্দন) ভেসে যায় ৷ তার জন্য 1.20 লক্ষ খাবারের প্যাকেট বিলি করা হয় ইনাডুর তরফে ৷ এবার তহবিল তৈরি হয় 6.05 কোটি টাকার ৷ অনুদান নিয়ে তহবিলে জমা অর্থের পরিমাণ আরও 3.16 কেটি টাকা বেড়ে যায় ৷ সেই টাকা দিয়ে মেহেবুবনগরে 1,110টি তাঁতযন্ত্র দেওয়া হয় ৷ তাছাড়া কার্নুল জেলায় তৈরি হয় বেশ কিছু স্কুল ৷ তৈরির পর সেই সমস্ত স্কুল সরকারকে দিয়ে দেওয়া হয় ৷ বিশাখাপত্তনমের কিছু অংশে আরও কয়েকটি বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হয় ৷

2020 সালের প্রবল বৃষ্টিতে তেলেঙ্গানার প্রবল ক্ষতি হয় ৷ অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে 5 কোটি টাকা দেওয়া হয় ৷ এর পাশাপাশি বিভিন্ন মাধ্যম থেকে তেলুগু প্রধান দুটি রাজ্যের জন্য মোট 20 কোটি টাকা আর্থিক সাহায্য় দেওয়া হয় ৷ এভাবে আরও একবার মানুষের পাশে ছিল ইনাডু ৷

রামোজি গ্রুপের চেয়ারম্যান রামোজি রায় 5 কোটি টাকা খরচ করে বেশ কয়েকটি বৃদ্ধাশ্রম তৈরি করে দেন ৷ পাশাপাশি কৃষকদেরও থাকার জায়গা তৈরি করে দেওয়া হয় ৷ আরও 10 লাখ টাকা আর্থিক সাহায্যের ব্যবস্থা করা হয় ৷ পাঠকরা 45 লাখ 83 হাজার 148 টাকা দিয়ে সাহায্য করেন ৷ সেই টাকা দিয়ে কোনাগুলি গ্রামে রামকৃষ্ণ মিশনের সাহায্যে 60 টি বাড়ি তৈরি করা হয় ৷ 2001 সালে গুজরাটের ভূমিকম্পে 25 লাখ টাকা দিয়ে আর্থিক সাহায্য করেছিল ইনাডু ৷ এবার 2.12 কোটি টাকা দিয়ে সাহায্য করেন পাঠকরা ৷ এই টাকা দিয়ে স্বামী নারায়ণ ট্রাস্টের সাহায্য 104টি বাড়ি তৈরি হয় ৷

2004 সালের ভয়াবহ সুনামির সময় দুর্গতদের পাশে দাঁড়ায় ইনাডু ৷ তৈরি হয় 25 লাখ টাকার তহবিল ৷ পাঠকদের সাহায্য়ে সেই তহবিলের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় আড়াই কোটি টাকা ৷ সেই টাকা দিয়ে 104টি বাড়ি তৈরি হয় কুদ্দালোর জেলার ভাদুকু মুদুসাল ওদাই গ্রামে ৷

2018 সালে কেরলের বন্যা দুর্গতদের সাহায্য করার জন্য 3 কোটি টাকা দিয়ে একটি ত্রাণ তহবিল শুরু করা হয়েছিল। মানবিক সহায়তায় সংগ্রহ করা হয়েছে 7 কোটি 77 লাখ টাকা। সেই টাকায় ইনাডু বাড়ি তৈরি করে বন্যা দুর্গতদের পাশে দাঁড়ায়। একটি আঞ্চলিক সংবাদপত্র হিসেবে পথ চলা শুরু করা ইনাডু সেবার মূলমন্ত্র নিয়ে সারা দেশে মানবতার বার্তা দিয়েছে।

1995 সালে ইনাডুর অধীনে শ্রমদানোদ্যম সংগঠিত হয়েছিল ৷ কেউ এসে কিছু করে দেবে তার জন্য অপেক্ষা না করে মানুষ নিজেরাই তাঁদের সমস্যার সমাধান করবেন-এটাই ছিল মূব ভাবনা ৷ ইনাডুর ডাকে তেলেগু জনগণকে সাড়া দিয়েছেন। তারই ফলশ্রুতিতে গ্রামের রাস্তাঘাট বেঁধে দেওয়া হয়েছে। হয়েছে সেতু সংস্কার!

2016 সালে ইনাডু ভূগর্ভস্থ জল রিচার্জ করার জন্য বৃষ্টির জল সংরক্ষণের আহ্বান জানিয়েছিল। শুরু হয়েছিল সুজলাম-সুফলাম নামে একটি অনুষ্ঠান ৷ তার মাধ্যমে জনসাধারণকে সমাজসেবায় নিয়োজিত করা হয়েছে। লক্ষাধিক কূপ খনন এবং জল সংরক্ষণ শুরু করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি 'মন কি বাত' অনুষ্ঠানে ইনাডুর প্রশংসা করেছেন। অন্যদিকে, স্বচ্ছ ভারত কর্মসূচিকে মানুষের কাছে নিয়ে গিয়েছিল ইনাডু। রামোজি রাওয়ের কাজের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁকে স্বচ্ছ ভারত প্রকল্পের দূত হিসেবে নিযুক্ত করেন।

সংবাদ সমস্যার সমাধান করতে পারে ৷ জীবন গঠন করতে পারে। 'ইনাডু' অনেকের জীবন নতুন আলো নিয়ে এসেছে। অসুস্থ রোগীরা পুনর্জন্ম পেয়েছেন। ইনাডুর উদ্যোগে অনেক কিছুই যা অসম্ভব ভাবা হত তা সম্ভব হয়েছে। আগামিদিনের জন্য অনেক অনুপ্রেরণাদায়ক কাহিনি রেখে যাচ্ছে এই সংবাদপত্র ৷ ভবিষ্যত প্রজন্মকে একটি নতুন পথ দেখিয়েছে ৷ তাদেঁর মধ্যে নতুন কল্পনা জাগিয়েছে। রামোজি রাওয়ের নির্দেশ হল হতভাগ্যদের সাহায্য করে এমন খবরকে প্রাধান্য দেওয়া। ইনাডুর খবর সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় সফলদের অনুপ্রাণিত করেছিল। ইনাডুর প্রতিটি শব্দ আলোর রশ্মি হিসেবে কাজ করে যা চিরকাল বিকিরণ করতে থাকে।

সংবাদপত্রের কাজ শুধু খবর পরিবেশন করা নয় ৷ সমাজের বিপন্ন শ্রেণির মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের হয়ে সওয়াল করা এমনকী তেমন প্রয়োজনে নেতৃত্ব দেওয়া সংবাদপত্রের কাজ ৷ গত 50 বছর ধরে সেই কাজটাই করে আসছে ইনাডু ৷ ইনাডুতে প্রকাশিত খবর জনমত তৈরি করেছে, জন-আন্দোলনের রূপ নিয়েছে ৷ যখন কোন দিকে যেতে হবে সমাজ বুঝতে পারছে না তখন দিশা দেখানোর কাজ করেছে ইনাডু ৷ দেশের নাগরিকের সমস্যায় তাঁদের কাছে অন্ন পৌঁছৈ দেওয়ার কাজ বা আর্থিক সাহায্য নিয়ে এগিয়ে আসা- বিপন্নের ত্রাতা হয়ে উঠেছে ইনাডু ৷

Eenadu Golden Jubilee
আর্থিক সাহায্যের চেক প্রদান করছেন রামোজি রাও (নিজস্ব চিত্র)

ইনাডু মনে করে সমসাময়িক খবর প্রকাশ করাই তার একমাত্র কাজ নয় ৷ গত পাঁচ দশক ধরে সহমর্মিতা দেখিয়ে এসেছে এই সংবাদপত্র ৷ একটি ঘটনার কথা বলা দরকার ৷ 1976 সালে অন্ধ্রপ্রদেশে পরপর তিনটি ঝড় হয ৷ তাতে ক্ষতির মুখে বহু মানুষ ৷ লক্ষ লক্ষ একর ফসলের জমি নষ্ট হয়ে যায় ৷ ইনাডু সংবাদপত্রের বয়স তখন মাত্র দু'বছর ৷ ঠিক হয় মানুষের পাশে দাঁড়াতে উদ্যোগ নিতে হবে ৷ 10 হাজার টাকার তহবিল তৈরি হয় ৷ পাশাপাশি পাঠকদেরও অনুরোধ করা হয় বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়াতে ৷ সাড়া দেন তাঁরা ৷ এক মাসের মধ্যে জমা হয় 64 হাজার 756 টাকা ৷ সেই টাকা সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হয ৷

কয়েক বছর বাদে আবার বন্যা হল ডিভিসীমা দ্বীপে ৷ 1977 সালের সেই বন্যা বহু মানুষের সর্বস্ব কেড়ে নেয় ৷ তাঁদের তখন মাথায় ছাদ নেই ৷ সামান্য খাবারটুকুও নেই ৷ তাঁদের জন্য তৈরি করা হয় 25 হাজারের তহবিল ৷ এবার আরও অনেক বেশি পরিমাণে সাহায্য করলেন পাঠকরা ৷ তহবিলে জমা হল 3 লাখ 73 হাজার 927 টাকা ৷ এই টাকা দিয়ে রামকৃষ্ণ মিশনের সাহায্য নিয়ে 112টি বাড়ি তৈরি করেছিল সরকার ৷ এরপর থেকে দ্বীপের সরকারি নাম হয় পরমহংসপুর ৷

Eenadu Golden Jubilee
আর্থিক সাহায্যে তৈরি বাড়ি (নিজস্ব চিত্র)

এর পাশাপাশি কদুরের কাছে কৃষ্ণপুরমে তৈরি হয় আরও 22টি বাড়ি ৷ সেদিনের বন্যায় যাঁরা সব হারিয়েছেন তাঁদের জন্য খাদ্য থেকে শুরু করে পানীয়র ব্যবস্থা করা হয় ৷ এর পাশাপাশি বিশাখাপত্তনমের ডলফিন হোটেলে বন্যা কবলিত মানুষদের জন্য রান্না শুরু হয় ৷ হোটেলের কর্মীরা গিয়ে সবহারাদের খাবার দিয়ে আসতেন ৷ মানবতার জন্য ইনাডুর এই অবদানকে বহু মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছে ৷

1996 সালে টাইফোনে বিপর্যস্ত হয় অন্ধ্রপ্রদেশের কাডাপ্পা জেলা ৷ অক্টোবর মাসের সেই ঘটনায় 25 লাখ টাকার তহবিল গড়ে ইনাডু ৷ সেখান থেকে পাঠকের সাহায্যে উঠেছিল 60 লাখ টাকা ৷ সেই টাকা দিয়ে একটি আশ্রয়স্থল তৈরি করা হয় ৷ ঠিক হয় আবার যদি এমন কোনও পরিস্থিতি তৈরি তাহলে মানুষ সেখানে গিয়ে আশ্রয় নিতে পারেন ৷ আর অন্য সময় স্কুল হিসেবে কাজ করবে ওই ভবনটি ৷ দুমাসের মধ্যে এমন 60টি গ্রামে এই ধরনের ভবন তৈরি করা হল ৷ এবার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন পাঠকরা ৷

Eenadu Golden Jubilee
আর্থিক সাহায্যে তৈরি বাড়ি (নিজস্ব চিত্র)

2009 সালের অক্টোবর মাসে কার্নুল ও মেহেবুবনগর জেলার তিনটি প্রধান নদী (কৃষ্ণা, তুঙ্গভদ্রা এবং কুন্দন) ভেসে যায় ৷ তার জন্য 1.20 লক্ষ খাবারের প্যাকেট বিলি করা হয় ইনাডুর তরফে ৷ এবার তহবিল তৈরি হয় 6.05 কোটি টাকার ৷ অনুদান নিয়ে তহবিলে জমা অর্থের পরিমাণ আরও 3.16 কেটি টাকা বেড়ে যায় ৷ সেই টাকা দিয়ে মেহেবুবনগরে 1,110টি তাঁতযন্ত্র দেওয়া হয় ৷ তাছাড়া কার্নুল জেলায় তৈরি হয় বেশ কিছু স্কুল ৷ তৈরির পর সেই সমস্ত স্কুল সরকারকে দিয়ে দেওয়া হয় ৷ বিশাখাপত্তনমের কিছু অংশে আরও কয়েকটি বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হয় ৷

2020 সালের প্রবল বৃষ্টিতে তেলেঙ্গানার প্রবল ক্ষতি হয় ৷ অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে 5 কোটি টাকা দেওয়া হয় ৷ এর পাশাপাশি বিভিন্ন মাধ্যম থেকে তেলুগু প্রধান দুটি রাজ্যের জন্য মোট 20 কোটি টাকা আর্থিক সাহায্য় দেওয়া হয় ৷ এভাবে আরও একবার মানুষের পাশে ছিল ইনাডু ৷

রামোজি গ্রুপের চেয়ারম্যান রামোজি রায় 5 কোটি টাকা খরচ করে বেশ কয়েকটি বৃদ্ধাশ্রম তৈরি করে দেন ৷ পাশাপাশি কৃষকদেরও থাকার জায়গা তৈরি করে দেওয়া হয় ৷ আরও 10 লাখ টাকা আর্থিক সাহায্যের ব্যবস্থা করা হয় ৷ পাঠকরা 45 লাখ 83 হাজার 148 টাকা দিয়ে সাহায্য করেন ৷ সেই টাকা দিয়ে কোনাগুলি গ্রামে রামকৃষ্ণ মিশনের সাহায্যে 60 টি বাড়ি তৈরি করা হয় ৷ 2001 সালে গুজরাটের ভূমিকম্পে 25 লাখ টাকা দিয়ে আর্থিক সাহায্য করেছিল ইনাডু ৷ এবার 2.12 কোটি টাকা দিয়ে সাহায্য করেন পাঠকরা ৷ এই টাকা দিয়ে স্বামী নারায়ণ ট্রাস্টের সাহায্য 104টি বাড়ি তৈরি হয় ৷

2004 সালের ভয়াবহ সুনামির সময় দুর্গতদের পাশে দাঁড়ায় ইনাডু ৷ তৈরি হয় 25 লাখ টাকার তহবিল ৷ পাঠকদের সাহায্য়ে সেই তহবিলের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় আড়াই কোটি টাকা ৷ সেই টাকা দিয়ে 104টি বাড়ি তৈরি হয় কুদ্দালোর জেলার ভাদুকু মুদুসাল ওদাই গ্রামে ৷

2018 সালে কেরলের বন্যা দুর্গতদের সাহায্য করার জন্য 3 কোটি টাকা দিয়ে একটি ত্রাণ তহবিল শুরু করা হয়েছিল। মানবিক সহায়তায় সংগ্রহ করা হয়েছে 7 কোটি 77 লাখ টাকা। সেই টাকায় ইনাডু বাড়ি তৈরি করে বন্যা দুর্গতদের পাশে দাঁড়ায়। একটি আঞ্চলিক সংবাদপত্র হিসেবে পথ চলা শুরু করা ইনাডু সেবার মূলমন্ত্র নিয়ে সারা দেশে মানবতার বার্তা দিয়েছে।

1995 সালে ইনাডুর অধীনে শ্রমদানোদ্যম সংগঠিত হয়েছিল ৷ কেউ এসে কিছু করে দেবে তার জন্য অপেক্ষা না করে মানুষ নিজেরাই তাঁদের সমস্যার সমাধান করবেন-এটাই ছিল মূব ভাবনা ৷ ইনাডুর ডাকে তেলেগু জনগণকে সাড়া দিয়েছেন। তারই ফলশ্রুতিতে গ্রামের রাস্তাঘাট বেঁধে দেওয়া হয়েছে। হয়েছে সেতু সংস্কার!

2016 সালে ইনাডু ভূগর্ভস্থ জল রিচার্জ করার জন্য বৃষ্টির জল সংরক্ষণের আহ্বান জানিয়েছিল। শুরু হয়েছিল সুজলাম-সুফলাম নামে একটি অনুষ্ঠান ৷ তার মাধ্যমে জনসাধারণকে সমাজসেবায় নিয়োজিত করা হয়েছে। লক্ষাধিক কূপ খনন এবং জল সংরক্ষণ শুরু করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি 'মন কি বাত' অনুষ্ঠানে ইনাডুর প্রশংসা করেছেন। অন্যদিকে, স্বচ্ছ ভারত কর্মসূচিকে মানুষের কাছে নিয়ে গিয়েছিল ইনাডু। রামোজি রাওয়ের কাজের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁকে স্বচ্ছ ভারত প্রকল্পের দূত হিসেবে নিযুক্ত করেন।

সংবাদ সমস্যার সমাধান করতে পারে ৷ জীবন গঠন করতে পারে। 'ইনাডু' অনেকের জীবন নতুন আলো নিয়ে এসেছে। অসুস্থ রোগীরা পুনর্জন্ম পেয়েছেন। ইনাডুর উদ্যোগে অনেক কিছুই যা অসম্ভব ভাবা হত তা সম্ভব হয়েছে। আগামিদিনের জন্য অনেক অনুপ্রেরণাদায়ক কাহিনি রেখে যাচ্ছে এই সংবাদপত্র ৷ ভবিষ্যত প্রজন্মকে একটি নতুন পথ দেখিয়েছে ৷ তাদেঁর মধ্যে নতুন কল্পনা জাগিয়েছে। রামোজি রাওয়ের নির্দেশ হল হতভাগ্যদের সাহায্য করে এমন খবরকে প্রাধান্য দেওয়া। ইনাডুর খবর সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় সফলদের অনুপ্রাণিত করেছিল। ইনাডুর প্রতিটি শব্দ আলোর রশ্মি হিসেবে কাজ করে যা চিরকাল বিকিরণ করতে থাকে।

Last Updated : Aug 10, 2024, 7:44 AM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.