নয়াদিল্লি, 14 জুন: কঠোর ইউএপিএ ধারায় বিচার হবে লেখক অরুন্ধতী রায়ের বিরুদ্ধে ৷ অভিযোগ, নয়াদিল্লিতে একটি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার সময় উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলেছিলেন 'গড অফ স্মল থিংস'-এর লেখক ৷ শুক্রবার প্ররোচনামূলক বক্তব্যের অভিযোগে বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইন বা ইউএপিএ-র অধীনে তাঁর বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া শুরুর ছাড়পত্র দিলেন দিল্লির উপ-রাজ্যপাল ভিকে সাক্সেনা ৷
দিল্লির উপ-রাজ্যপালের কার্যালয় রাজ নিবাস সূত্রে খবর, অরুন্ধতী ছাড়া কাশ্মীরের এক প্রাক্তন অধ্যাপক শেখ শওকত হুসেনের বিরুদ্ধেও ইউএপিএ ধারায় বিচারের অনুমোদন দিয়েছেন তিনি ৷ এর সূত্রপাত 2010 সালে রাজধানীতে একটি অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকে কেন্দ্র করে ৷
2010 সালের 21 অক্টোবর বুকার পুরস্কার জয়ী অরুন্ধতী রায় এবং অধ্যাপক শওকত হুসেন দু'জনে কোপারনিকাস মার্গের এলটিজি অডিটোরিয়ামে 'আজাদি- দ্য ওনলি ওয়ে'-র ব্যানারে আয়োজিত একটি সম্মেলনে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ ৷ রাজ নিবাসের আধিকারিকদের কথায়, "সম্মেলনে যে বিষয়গুলি আলোচনা করা হয়েছিল, তাতে ভারত থেকে কাশ্মীরকে আলাদা করা নিয়ে প্রচার করা হয় ৷"
সম্মেলনে যাঁরা বক্তৃতা দিয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে ছিলেন সৈয়দ আলী শাহ গিলানি, এসএআর গিলানি (সম্মেলনের উপস্থাপক এবং সংসদ হামলা মামলায় প্রধান অভিযুক্ত), অরুন্ধতী রায়, শেখ শওকত হুসেন এবং ভারাভারা রাও ৷
এরপর ওই বছরেরই 28 অক্টোবর কাশ্মীরের এক সামাজিক কর্মী সুশীল পণ্ডিত লেখক ও অধ্যাপক- দু'জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান ৷ অভিযোগকারী নয়াদিল্লির মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ভারতীয় দণ্ডবিধির 156(3) ধারায় অভিযোগ দায়ের করেন ৷ 2010 সালের 27 নভেম্বর বিচারক এফআইআর করার আদেশ দেন ৷ সেই আদেশের ভিত্তিতে অরুন্ধতী রায় এবং শেখ শওকতের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয় এবং তদন্ত করা হয় বলে জানান রাজ নিবাসের আধিকারিকরা ৷
অরুন্ধতী রায়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের অনুমোদনের কথা অবশ্য শুক্রবার স্বীকার করে নিয়েছেন রাজনিবাসের আধিকারিকরা ৷ এদিন রাজ নিবাসের তরফে জানানো হয়েছে, "দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভিকে সাক্সেনা অরুন্ধতী রায় এবং কাশ্মীর সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক আইনের প্রাক্তন অধ্যাপক শেখ শওকত হোসেনের বিচারের অনুমোদন দিয়েছেন ৷ বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইনের ধারা 45 (1)-এর অধীনে এই মামলা রুজু করা হয়েছে বলে খবর ৷"
গত অক্টোবরে, উপ-রাজ্যপাল ভারতীয় দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারার অধীনে শাস্তিযোগ্য অপরাধের জন্য সিআরপিসি-র 196 ধারার অধীনে তাদের বিচার করার অনুমোদন দিয়েছিলেন ৷ একই সঙ্গে, দু'জনের বিরুদ্ধেই 153-এ (ধর্ম, জাতি, জন্মস্থান, বাসস্থানের ভিত্তিতে বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতা বিস্তার করা, এবং সম্প্রীতি বিঘ্নিত করা), 153-বি (জাতীয় সংহতির পক্ষে প্রতিকূল অভিযোগ) এবং 505 (জনসাধারণের মধ্যে হিংসাত্মক কার্যকলাপ সৃষ্টিকারী বক্তব্য) ধারায় মামলা রুজু হয়েছে ৷ (পিটিআই)