হায়দরাবাদ, 24 মার্চ: 24 মার্চ 2020 ৷ চার বছর আগে আজকের দিনেই সারাদেশে জারি হয়েছিল সম্পূর্ণ লকডাউন ৷ বেশিরভাগ ভারতীয় নতুন এক শব্দের সঙ্গে পরিচিত হয়েছিল সেদিন ৷ এই শব্দের মানে অনেকে জানলেও প্রকৃত অর্থ বুঝিয়ে ছিল কোভিড-19 এর প্রভাব ৷
24 মার্চ 2024 পর্যন্ত ভারতে কোভিডের গ্রাফ
- কোভিডে মৃত্যু -533539
- কোভিড সক্রিয় রোগীর সংখ্যা-916
- কোভিড থেকে সুস্থ রোগীর সংখ্যা-44499189
- কোভিড ভ্যাকসিন গ্রহণকারী-2206871337
তথ্যসূত্র: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়
সারাদেশে কোভিডের বাড়বাড়ন্তের ফলে প্রথমে 21 দিন জারি হয় লকডাউন ৷ যার ফলে স্তব্ধ হয়ে পড়ে জনজীবন ৷ ঘরবন্দি হওয়ার মানে উপলব্ধি করে সকলে ৷ জরুরি পরিষেবা ছাড়া বাইরে যাওয়া ছিল বারণ ৷ অফিস থেকে বাজার সবেতেই ফুল স্টপ ৷ পরে অবশ্য বাড়ি থেকে কাজকর্ম শুরু হয় ৷ দেশবাসী প্রথমবার ওয়ার্ক ফ্রম হোম অর্থাৎ বাড়ি থেকে কাজের সঙ্গে পরিচিত হয় ৷ ধীরে ধীরে অবশ্য সেই নিয়মেও অভ্যস্ত হয়ে পড়ে সকলে ৷
ভারতে লকডাউন
- প্রথম ধাপ: 24 মার্চ থেকে 25 এপ্রিল 2020 (21 দিন)
- দ্বিতীয় পর্যায়: 15 এপ্রিল থেকে 3 মে 2020 (19 দিন)
- তৃতীয় পর্যায়: 4 থেকে 17 মে 2020 (14 দিন)
- চতুর্থ পর্যায়: 18 থেকে 31 মে 2020 (14 দিন)
এক নজরে কোভিড
2019 সালের ডিসেম্বরে চিনে একজন নভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের খবর পাওয়া যায় ৷ 2020 সালের জানুয়ারিতে নিউমোনিয়ার মতো একটি রোগের বিস্তার সম্পর্কে তথ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সমস্ত দেশকে সতর্ক করেছিল । 8 জানুয়ারি চিনের উহানে কোভিড-19 প্রাদুর্ভাবের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পরে এটি মোকাবিলার প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল । 30 জানুয়ারি ভারতের কেরল রাজ্যে কোভিড-19 এর প্রথম আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া যায় ৷ 30 জানুয়ারি কোভিডের ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে আন্তর্জাতিক উদ্বেগের কারণে জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছিল ।
2020 সালের 12 মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভিড-19'কে বৈশ্বিক অতিমারি ঘোষণা করে । 19 মার্চ জনতা কারফিউয়ের ঘোষণা করা হয়েছিল । যেটি 22 মার্চ সকাল 7 টা থেকে রাত 9 টা পর্যন্ত কার্যকর করা হয়েছিল ৷ জনতা কারফিউয়ের পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি 24 মার্চ 2020 এর গভীর রাত থেকে অবিলম্বে 21 দিনের জন্য লকডাউন জারি করার ঘোষণা করেছিলেন ।
উন্নত হোক বা উন্নয়নশীল দেশ কেউই কোভিডের তাণ্ডব থেকে বাঁচতে পারেনি । লকডাউনের কারণে পর্যটন শিল্প, অটোমোবাইল শিল্প, জুয়েলারি শিল্প, বিল্ডিং নির্মাণ শিল্প, পরিবহণ, পেট্রোলিয়াম ইত্যাদি -সহ ভারতের অনেক শিল্প বিপুল ক্ষতির সম্মুখীণ হয় । এ ছাড়া অনেক বেসরকারি কোম্পানিতে ব্যাপক ছাঁটাই হয়েছে । অনেক স্টার্টআপ বড় হওয়ার আগেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে । এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে সব সেক্টরের চাকরিতে । লকডাউনের পরে বেকারত্বের মাত্রা 23.5 শতাংশে পৌঁছেছে ৷
জীবনযাত্রা, চিকিৎসা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় প্রয়োজনে জনগণকে তাদের সঞ্চয় ব্যয় করতে হয়েছে । মূল্যবান জিনিসপত্র কম দামে বিক্রি করতে হয়েছে । শেষ পর্যন্ত আর্থিক বাজার/বিনিয়োগ বাজার সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায় । এটি কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের কর সংগ্রহকেও প্রভাবিত করেছিল, যার কারণে উন্নয়ন কাজে ব্যাঘাত ঘটেছিল । বর্তমানে কোভিডের বাড়বাড়ন্ত না থাকলেও এর ফলে যে ক্ষতি হয়েছে তা কখনও পূরণ করা যাবে না ৷ কেউ গোটা পরিবার হারিয়ে, তো কেই বিশয় আশায় ৷ তবে বিভিন্ন সেক্টরগুলি আবার ঘুরে দাঁড়াচ্ছেন ৷ আর্থিক অচলবস্থা থেকে নিজেদের বের করে আনার চেষ্টা করছে ৷
আরও পড়ুন: