নয়াদিল্লি, 3 অক্টোবর: বাংলা-সহ আরও পাঁচটি ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। মারাঠি, পালি, প্রাকৃত, অসমিয়া এবং বাংলা ভাষাকে এই বিশেষ স্বীকৃতি দেওয়া হল।
এর আগে বিভিন্ন সময়ে 6টি ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। এবার সেই সংখ্যা বেড়ে হল 11। বাংলা ভাষা এই বিশেষ সম্মান পাওয়ায় স্বভাবতই খুশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমাদের দীর্ঘ লড়াইয়ের পর আমাদের মাতৃভাষা বাংলাকে ভারত সরকার একটি ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দিয়েছে।
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) October 3, 2024
অনেকদিন ধরে আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রকের কাছে এই সংক্রান্ত গবেষণালব্ধ বিপুল তথ্য জমা দিয়ে দাবি করছিলাম যাতে বাংলা ভাষাকে এই…
সোশাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন, "আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমাদের দীর্ঘ লড়াইয়ের পর আমাদের মাতৃভাষা বাংলাকে ভারত সরকার একটি ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দিয়েছে। অনেকদিন ধরে আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রকের কাছে এই সংক্রান্ত গবেষণালব্ধ বিপুল তথ্য জমা দিয়ে দাবি করছিলাম যাতে বাংলা ভাষাকে এই স্বীকৃতি দেওয়া হয়। আজ আমাদের সেই স্বপ্ন পূরণ হল। কেন্দ্রীয় সরকার আজ সন্ধ্যায় আমাদের দাবি মেনে নিয়েছে। অন্য কয়েকটি রাজ্যের ভাষা আগে এই স্বীকৃতি পেলেও বাংলাকে বঞ্চিত রাখা হয়েছিল। ভালো লাগছে, আমাদের লড়াইয়ে অবশেষে বাংলা ভাষা এই অভিপ্রেত এবং ন্যায্য স্বীকৃতি পেল।"
2004 সালে প্রথম তামিলকে ধ্রুপদী ভাষার তকমা দেওয়া হয়। পরের বছর সংস্কৃত ভাষা এই স্বীকৃতি পায়। 2008 সালে তেলুগু এবং কন্নড় ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষা হিসেবে বেছে নেয় তৎকালীন প্রথম ইউপিএ সরকার। 2013 সালে মালায়লাম এবং 2014 সালে ওড়িয়া ভাষা এই বিশেষ সম্মান পেয়েছিল । তথ্য বলছে ক্ষমতায় থাকার প্রায় এক দশক পর এই প্রথম ধ্রুপদী ভাষা চিহ্নিত করার সিদ্ধান্ত নিল মোদি সরকার ।
2004 সালে বিভিন্ন দেশিয় ভাষা ধ্রুপদী ঘোষণার কাজ শুরু হয় । তার জন্য বেশ কয়েকটি মাপকাঠিও তৈরি হয় । 2005 সালে তাতে বেশ কিছু বদলও আসে । তাতে বলা হয়, কোনও ভাষাকে ধ্রুপদী তকমা পেতে হলে কমপক্ষে 150 থেকে 200 বছরের পুরনো নথি পেতে হবে । পাশাপাশি সেই ভাষায় যেভাবে কথা বলা হয় তা মৌলিক হতে হবে। অন্য কোনও ভাষা থেকে অনুপ্রাণিত হলে হবে না ।
ধ্রুপদী ভাষার সুবিধে:
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন কোনও ভাষাকে ধ্রুপদী হিসেবে চিহ্নিত হলে তাকে কেন্দ্র করে কর্মসসংস্থানে জোয়ার আসে। সেই ভাষার শিক্ষক-অধ্যাপক থেকে শুরু করে গবেষকরা কাজের নতুন নতুন সুযোগ পান। কোনও ভাষাকে ধ্রুপদী হিসেবে মান্যতা দেওয়া হলে সেই ভাষার পুরনো নথি সংরক্ষণের দরকার পড়ে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ভাষা সংক্রান্ত পুরনো ও নতুন তথ্য সংগ্রহ করতে হয় । সেটিকে ডিজিটাইজেশনের কাজও করতে হয় । তা থেকেও প্রচুর মানুষের কর্মসংস্থান হতে পারে ।