হাভেরি (কর্ণাটক), 21 এপ্রিল: কথায় আছে, রক্তদান, মহৎ দান ! নিজের রক্ত দিয়ে অন্যের জীবন বাঁচানো থেকে মহান কাজ আর কিছু হয় না । এই কাজই বছরের পর বছর, পরিবারের পর পরিবার ধরে করে আসছে কর্ণাটকের হাভারির সাভানুরু তালুকের একটি গ্রাম ৷ যে গ্রামের নাম জল্লাপুর ৷ রক্তদাতাদের জন্য বিখ্যাত এই গ্রাম । এখানে 520টিরও বেশি বাড়ি রয়েছে এবং প্রতিটি বাড়িতে কমপক্ষে একজন রক্তদাতা রয়েছেন ।
জল্লাপুর গ্রামের যুবকরা 'জীবনদানী বলগ' নামে একটি দল গঠন করেছে এবং ক্রমাগত রক্তদান করছেন । এর আগে কোভিড অতিমারীর সময় প্রয়োজনে রক্ত না পেয়ে গর্ভবতী-সহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে । বিষয়টি বুঝতে পেরে জল্লাপুর গ্রামবাসীরা তখন থেকেই রক্ত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন । গ্রামে একটি দল গঠন করা হয় এবং প্রতি বছর একটি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেন তারা ।
গ্রামের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ও জনসমোক্ষে রক্তদানের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতামূলক উক্তি লেখা বোর্ড রয়েছে । বিশেষ করে গ্রামের বাসস্ট্যান্ডে রক্তদানের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হয়েছে । কেন রক্তদান গুরুত্বপূর্ণ? কে বা কারা এটা করতে পারেন ? বছরে কতবার রক্তদান করা উচিত? এর সুবিধা কী কী? এর থেকে কারা উপকৃত হতে পারেন? এগুলি ছাড়াও এখানে আরও অনেক কিছু সচেতনতামূলক বার্তা লেখা আছে ।
রক্তদাতার সংখ্যা প্রথমে অনেক কম থাকলেও দিনে দিনে তা বেড়েছে ৷ এখন এই গ্রামে 520 জনের বেশি রক্তদান করেন । 10 বারের বেশি রক্তদানকারী তরুণ-তরুণীর সংখ্যাও এখন বাড়ছে । হাভেরি জেলা হাসপাতালে সবচেয়ে বেশি রক্ত দেওয়ার সুনামও রয়েছে এই গ্রামের । রক্তদানের পাশাপাশি প্লাজমা, প্লেটলেট দানও করে থাকে তরুণ-তরুণীরা । এখানকার মানুষ জীবনকালে রক্তদান এবং মৃত্যুর পর চক্ষু ও অঙ্গদানের বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছেন দিকে দিকে । রক্তদান শিবির আয়োজনের পাশাপাশি এর গুরুত্ব নিয়ে সভা ও অনুষ্ঠানও করা হচ্ছে ।
জল্লাপুর গ্রামের বাসিন্দা সতীশ গাভালি নামে এক যুবক বলেন, "কোভিড চলাকালীন আমরা শুনেছি যে প্রসবের সময় রক্তের অভাবে অনেক গর্ভবতীর মৃত্যু হয়েছিল । তখনই গ্রামের সমস্ত মানুষ রক্ত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন । 2020 সালে গ্রামে প্রথম রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল । কোভিডের কারণে এই সময়ে 100 ইউনিট রক্ত খুব যত্ন সহকারে সংগ্রহ করে জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল ৷ পাশাপাশি রক্তদানের সঙ্গে অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এই গ্রামের বাসিন্দারা ৷
আরও পড়ুন: