বাহরাইচ(উত্তরপ্রদেশ), 2 সেপ্টেম্বর: ফের নেকড়ের বলি উত্তরপ্রদেশে ! মায়ের সঙ্গে নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছিল আড়াই বছরের অঞ্জলি ৷ রাতের অন্ধকারে ঘরের ভিতরে ঢুকে তাকে টেনে নিয়ে গেল নেকড়ে ৷ দু'হাত কামড়ে খাওয়ার পর আবার শিশুটিকে ফেলে চলে যায় ৷ চোখের সামনে কোলের শিশুর নিথর দেহ দেখে সজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন মা ৷ বিভীষিকাময় ঘটনাটি ঘটেছে বাহরাইচের হারদি এলাকায় ৷
অঞ্জলির মায়ের চিৎকার শুনে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা ৷ লাঠিসোঁটা নিয়ে ছোট মেয়েটিকে খুঁজতে থাকে তাঁরা ৷ অবশেষে বাড়ি থেকে প্রায় 1 কিলোমিটার দূরে বাচ্চার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করেন প্রতিবেশীরা ৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ ৷ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে ৷ তবে শিশুটিকে মায়ের কোল থেকে নিয়ে গিয়েও খান্ত হয়নি মানুষ খেকো সেই নেকড়ে ৷ অঞ্জলির বাড়ি থেকে কয়েক হাত দূরে 60 বছরের এক বৃদ্ধর উপর হামলা করে সে ৷ ঘটনায় গুরুতর আহত হন বৃদ্ধা ৷
সোমবার নিজের বাড়ির বারান্দায় শুয়ে ছিলেন তিনি ৷ সেই সময় চুপিসারে নেকড়ে এসে তাঁর পা ধরে টানতে থাকে ৷ কমলা দেবীর চিৎকার শুনে ছুটে আসে তাঁর পরিবারের লোকজন ৷ পালিয়ে যায় নেকড়ে ৷ তবে নেকড়ে আক্রমণে তাঁর পায়ে গভীর ক্ষত হয় ৷ গ্রামবাসী তাঁকে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যায় ৷ পরে সেখান থেকে তাঁকে জেলা হাসপাতালে রেফার করা হয় ৷ উল্লেখ্য, বেশ কয়েকদিন ধরে উত্তরপ্রদেশে তাণ্ডব চালাচ্ছে নেকড়ে ৷ রবিবার মাইকু পুরওয়া গ্রামের বাসিন্দা কাল্লু লাল জৈন নামে 55 বছরের এক ব্যক্তির উপর নেকড়ের হামলা হয় ৷ কয়েকদিন আগে নেকড়ের হামলায় গুরুতর আহত হয় 7 বছরের এক কিশোর ৷ বর্তমানে সে মহসি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৷
নেকড়ের ভয়ে তটস্থ উত্তরপ্রদেশের বাহরাইচ জেলার 35টি গ্রাম ৷ মানুষ সারারাত ঘুমোতে পারছেন না । নেকড়কে ধরার জন্য বন দফতর বেশ কয়েকদিন ধরে চেষ্টা করে ৷ গত মাসের শেষে একটি নেকড়ে ধরা পড়েছে ৷ তবুও নেকড়ের আক্রমণ বন্ধ হয়নি ৷ এখনও পর্যন্ত বাহরাইচ ও সীতাপুর জেলা মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত নেকড়ের হামলায় মৃত্যু হয়েছে 12 জনের ৷ আহতের সংখ্যা প্রায় 50 ৷ নেকড়ের হামলার জন্য জঙ্গলে বন্যাকে দায়ী করেছেন স্থানীয় বন দফতরের কর্মকর্তারা ৷ দিল্লি চিড়িয়াখানার এক সিনিয়র অফিসার সৌরভ বশিষ্ঠ জানান, নেকড়েরা মানুষকে আক্রমণ করে যখন তারা হুমকি বোধ করে বা খাবারের জন্য ছোট প্রাণী শিকার করতে পারে না।