পটনা, 29 জানুয়ারি: এইমস পটনার ইতিহাসে প্রথমবার ! কেন্দ্রের তরফে পেটেন্ট পেল মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ডের সহজ অস্ত্রোপচারের জন্য় হাসপাতালের চিকিৎসক দম্পতিরই তৈরি যন্ত্র ৷ অত্যাধুনিক যন্ত্রটি তৈরি করেছেন হাসপাতালের স্নায়ুবিশেষজ্ঞ বিভাগের প্রধান তথা শল্য চিকিৎসক বিকাশ চন্দ্র ঝা ও তাঁর স্ত্রী তথা স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ বিভাগের শল্য চিকিৎসক সঙ্গম ঝা ৷ অত্যাধুনিক এই যন্ত্রের সাহায্য়ে মস্তিষ্ক ও স্নায়ুদণ্ডের জটিল অস্ত্রোপচার অনেক বেশি সহজ হয়ে যাবে বলে মত পটনার এইমসের ৷
কী এই যন্ত্র ?
অত্যাধুনিক এই যন্ত্রের উদ্ভাবক বিকাশচন্দ্র ঝা জানান, এর নাম 'ইন্ট্রা সার্জিক্যাল নার্ভ ম্যাপিং প্রো সাকশন টিউব' ৷ অস্ত্রোপচারের সময় অন্য স্নায়ুকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করবে এই যন্ত্র ৷ অস্ত্রোপচারের জন্য দেহের বিভিন্ন অংশে ঘোরাফেরা করে কেবলমাত্র ক্ষতিগ্রস্ত স্নায়ুটি খুঁজে বের করতে সক্ষম এই যন্ত্র ৷ এর ফলে রোগীর মৃত্যু কিংবা রোগীর অন্য কোনও ক্ষতি অনায়াসে এড়িয়ে চলা সম্ভব ৷
শুধু অস্ত্রোপচারের সময় নয় ৷ এই যন্ত্রের সাহায্যে অস্ত্রোপচারের পর রোগীরা খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন বলেও জানিয়েছেন বিকাশ ঝা ৷ তাঁর মতে, আগে অস্ত্রোপচারের পর অনন্ত 7 দিন হাসপাতালে থাকতে হত রোগীদের ৷ এখন তার আগেই তাঁরা বাড়ি চলে যেতে পারছেন ৷
2022 সালে যন্ত্র তৈরি কাজ শুরু হয়...
2022 সালের অগস্ট থেকে এই মেশিন তৈরির কাজ শুরু করেন বিকাশ ৷ অবশেষে, 2024 সালের ডিসেম্বরে এটি ভারত সরকারের তরফে পেটেন্ট পায় । ইতিমধ্য়েই, এই যন্ত্রের সাহায্য়ে অস্ত্রোপচার করায় 7 রোগী খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেছেন । বর্তমানে যে যন্ত্রটি ব্যবহার করা হচ্ছে, তা একটি মার্কিনি যন্ত্র ৷ এই মুহূর্তে যন্ত্রটি কেবলমাত্র ক্ষতিগ্রস্ত স্নায়ু শনাক্ত করতে সক্ষম ৷ নতুন যন্ত্রটি তারই প্রোটোটাইপ ৷
যন্ত্রটির ডিজাইন করেছে সঙ্গম ঝা...
এই যন্ত্র তৈরিতে স্ত্রী সঙ্গম ঝা'র অবদান অনস্বীকার্য বলে জানান চিকিৎসক ৷ যন্ত্রের নকশাটি তৈরি করেছেন সঙ্গম ৷ বস্তুত, অস্ত্রোপচারের যন্ত্র নিয়ে নিজেদের মধ্য়ে প্রায়ই আলোচনা করেন এই দুই শল্য চিকিৎসক ৷ সেই আলোচনা থেকেই এই যন্ত্র তৈরির প্রেরণা পান চিকিৎসক দম্পতি ৷ এরপর যন্ত্রের নকশা তৈরির কাজ শুরু করেন সঙ্গম ৷
পটনা এইমসের স্নায়ুবিশেষজ্ঞ বিভাগের প্রধান বলেন, "প্রথমে কাগজের উপর যন্ত্রের নকশাটি এঁকে ফেলেন সঙ্গম ৷ সেই অনুযায়ী যন্ত্রের প্রতিটি অংশকে সাজানো হয় ৷ সেই কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর যন্ত্রের কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয় ৷"
যন্ত্র তৈরির খরচ...
কেন্দ্রের তরফে পেটেন্ট পাওয়ার পর অস্ত্রোপচারের যন্ত্র নির্মাণকারী একাধিক বেসরকারি সংস্থা তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ৷ যন্ত্রটি তৈরিতে তাঁর 5 লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে ৷ তবে আগামিদিনে প্রতিটি হাসপাতাল যাতে এই যন্ত্রটি ব্যবহার করতে পারে, তার জন্য এর নির্মাণমূল্য আরও কমিয়া আনার চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন বিকাশ ঝা ৷
কোথায় তৈরি করবেন এই যন্ত্র ?
নির্মাণ মূল্য কমাতে কোনও বেসরকারি সংস্থা নয়, যন্ত্র তৈরির জন্য আইসিএমআর এবং আইআইটি পটনার সাহায্য় নেবেন তিনি ৷ ইতিমধ্যেই, এই বিষয়ে পটনা আইআইটি-র কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনাও সেরে ফেলেছেন বিকাশ ৷ এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা ৷
