ইম্ফল, 14 নভেম্বর: মণিপুরে সাম্প্রতিক হিংসার পরিপ্রেক্ষিতে, সশস্ত্র বাহিনী বিশেষ ক্ষমতা আইন বা আফস্পার পরিধি বাড়াল কেন্দ্রীয় সরকার। রাজ্যের পাঁচটি জেলার অধীনে 6টি থানা এলাকায় নতুন করে লাগু হল আফস্পা ৷ বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছে। মণিপুরের ছ'টি থানা এলাকায় আফস্পা বাড়ানোর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের একদিন আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্যে অতিরিক্ত 20 কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্র।
বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিজ্ঞপ্তিতে কোথায় কোথায় আফস্পা জারি হয়েছে তা বলা হয়েছে। সেই তালিকা অনুযায়ী-
- ইম্ফল পশ্চিম জেলার সেকমাই এবং লামসাং থানা এলাকায় আফস্পা জারি হয়েছে।
- ইম্ফল পূর্ব জেলার লামলাই থানা এলাকায় আফস্পা জারি হয়েছে।
- জিরিবাম জেলার জিরিবাম থানা এলাকায় আফস্পা জারি হয়েছে।
- কাংপোকপি জেলার লেইমাখং এলাকায় আফস্পা জারি হয়েছে।
- বিষ্ণুপুর জেলার মইরাং থানা এলাকায় আফস্পা জারি হয়েছে।
মন্ত্রকের দাবি, নিরাপত্তা পরিস্থিতি বজায় রাখতে এবং এই এলাকায় বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কার্যকলাপ বন্ধ করতে নিরাপত্তা বাহিনীর যাতে প্রয়োজনীয় অভিযান চালাতে পারে তা নিশ্চিত করতেই আফস্পার পরিধি বাড়ানো হয়েছে।
আফস্পা আরোপ করার পর, এলাকাগুলি 'অশান্ত এলাকা' হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে ৷ আফস্পা আগামী 2025 সালের 31 মার্চ পর্যন্ত থাকবে। মন্ত্রকের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, পর্যালোচনার পর মণিপুরের নিরাপত্তা সংক্রান্ত যে পরিস্থিতি সামনে এসেছে, সেখানে স্পষ্ট বিষ্ণুপুর-চুরাচাঁদপুর, ইম্ফল পূর্ব-কাংপোকপি-ইম্ফল পশ্চিম এবং জিরিবাম জেলাগুলিতে জাতিগত হিংসার মধ্যে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল রয়েছে।
হিংসা প্রবণ এলাকায় লাগাতার গুলি চালনোর ঘটনা ঘটছে ৷ বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলির হিংসাত্মক কার্যকলাপের আরও বেশ কয়েকটি উদাহরণ রয়েছে। উল্লেখ্য, জিরিবাম মণিপুরে হিংসার সর্বশেষ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে ৷ মেইতি এবং কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে হিংসা ছড়িয়ে পড়েছে এই জেলায়। কিছু সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা বৃহস্পতিবার জিরিবামে একজন কুকি মহিলাকে হত্যা করে এবং কমপক্ষে দশটি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় ৷
সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের একটি দল বিষ্ণুপুর জেলায় এক মহিলাকে হত্যা করে ৷ সোমবার জিরিবাম জেলায় মোতায়েন সিআরপিএফ জওয়ানরা দশজন সশস্ত্র জঙ্গীকে নিকেশ করে। তারা মূলত এসেছিল একটি সিআরপিএফ ক্যাম্প আক্রমণ করার লক্ষ্যে ৷ যেখানে বেশকিছু সাধারণ মানুষকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল। কুকি ও হমার সংগঠনগুলো অবশ্য 10 জন নিহতকে গ্রামের সাধারণ যুবক বলেছে ৷ তারা কেউই জঙ্গী নয় বলেও দাবি করেছে ৷ একই সঙ্গে সমস্ত পাহাড়ি এলাকা বন্ধের ডাক দিয়েছে তারা।