হায়দরাবাদ : সাম্প্রতিক কিছু গবেষণা বলছে পুরুষদের থেকেও ক্রনিক কিডনি সমস্য়ার সম্ভবনা অন্তত 5 শতাংশ বেশি মহিলাদের ৷ একইসঙ্গে তথ্য আরও বলছে যে, সারাবিশ্বে মহিলাদের মৃত্যুর জন্য় সবচেয়ে বেশি যে সমস্ত রোগ দায়ী, তার মধ্য়ে অষ্টম স্থানে রয়েছে এই কিডনির কাজ করা বন্ধ করে দেওয়া ৷
দিল্লির নেফ্রোলজিস্ট ডাক্তার মনোজ সিংহ জানান, সাধারণত কিডনির সমস্য়াকে নীরব ঘাতক রূপে চিহ্নিত করা হয় ৷ কারণ শুরুতে এর কোনও তেমন লক্ষণ দেখা যায় না ৷ আর যখন লক্ষণ দেখা দেয়, তখন পরিস্থিতি অতিরিক্ত খারাপ হয়ে যায় ৷ তিনি আরও জানান, সাধারণত যে সমস্ত বিষয়গুলি থেকে কিডনির সমস্য়ার উৎপত্তি হয় তা হল স্থূলতা, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, অত্যধিক লবণ খাওয়া, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, অত্যধিক অ্যালকোহল এবং এমন কিছু ওষুধ খাওয়া যা কিডিনির সমস্য়ার কারণ হতে পারে ৷
যদি বিশেষ করে মহিলাদের সম্পর্কে বলা হয়, তবে তাঁরা মূত্রনালীর সংক্রমণের (ইউটিআই) সমস্য়ায় বেশি ভোগেন যা পরবর্তীক্ষেত্রে কিডনির সমস্য়ার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে ৷ সাধারণত গর্ভাবস্থায় মহিলাদের ইউটিআইয়ের দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা তৈরি হয় ৷ কিডনির সমস্যা থাকলে সন্তান গ্রহণের ক্ষেত্রেও ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে ৷ এক্ষেত্রে অকাল প্রসবের ঝুঁকি বেড়ে যায় ৷
রোগের লক্ষণ:
- ক্ষুধা হ্রাস
- ওজন হ্রাস
- রাতে ঘন ঘন প্রস্রাব
- পা এবং গোড়ালি ফুলে যাওয়া
- অবিরাম ক্লান্তি
- দুর্বলতা বমি বমি ভাব এবং বমি
- পেশিতে ব্যথা, ক্র্যাম্পস
- অনিদ্রা
- চোখের চারপাশে ফোলাভাব
চিকিৎসক মনোজ সিংহের মতে, সাধারণত এই রোগে রোগে প্রথম প্রথম কোনও লক্ষণ দেখা যায় না ৷ তবে খুব খারাপ পরিস্থিতিতে এই লক্ষণগুলি ছাড়াও মূত্রের সঙ্গে রক্ত পড়তে দেখা যায় ৷
প্রতিকারের উপায় (How to Prevent kidney related issues ):
- একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস তৈরি করুন ৷
- প্রচুর জলপান করুন এবং হাইড্রেটেড থাকুন ৷
- অনেকক্ষণ মূত্র ধরে রাখবেন না ৷
- ধূমপান ছেড়ে দিন এবং অ্যালকোহল সেবন এড়িয়ে চলুন ৷
- স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখুন এবং আপনার BMI যেন ঠিকঠাক থাকে তার দিকে নজর রাখুন ৷
- যদি আপনার ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ থাকে, তবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুসরণ করুন ৷
- রক্তচাপ ইউটিআই সংকোচন থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখার চেষ্টা করুন। এর জন্য যথাযথ ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন, পাবলিক টয়লেট ব্যবহার এড়িয়ে চলুন, যৌন মিলনের সময় সুরক্ষা ব্যবহার করুন ইত্যাদি।
- অকারণে ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া এড়িয়ে চলুন এবং প্রতিদিন 7-9 ঘন্টা ঘুমোন ।
আরও পড়ুন: খাওয়ার পর পরিমিত ওয়াইন পান কমিয়ে দিতে পারে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি, বলছে গবেষণা
চিকিৎসক মনোজ সিংহ আরও জানান, 30 বছর বয়সের পর থেকেই শরীরের দিকে অতিরিক্ত নজর দেওয়া প্রয়োজন ৷ সে ব্যক্তি নারীই হোক বা পুরুষ ৷