কলকাতা, 14 এপ্রিল: প্রখর রৌদ্রের তাপে ওষ্ঠাগত প্রাণ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে চলেছে তাপমাত্রাও । শিশু থেকে শুরু করে আবাল বৃদ্ধবণিতা সকলেরই এখন গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। তৃষ্ণা মেটাতে রঙিন সরবত থেকে শুরু করে লস্যি, কখনও বা আইস্ক্রিম, এখন রোজনামচার জীবনসঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু তাতেও মিলছে না স্বস্তি। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তেই ইতিমধ্যেই শুরু তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা জারি করেছে হাওয়া অফিস। তালিকা থেকে বাদ নেই শহর কলকাতাও। সেখানেও দিনের তাপমাত্রা চল্লিশ ডিগ্রি ছুঁইছুঁই। আবহাওয়াবিদরা সকাল 11টা থেকে বিকেল 3টে পর্যন্ত বাইরে বেরোতে নিষেধ করেছেন। কিন্তু যাঁরা চাকুরিজীবী তাঁদের তো রাস্তায় বেরোতেই হবে ! তাহলে উপায় ! সেক্ষেত্রে বিশেষ কিছু নিয়ম মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা বা চিকিৎসকরা।
শিশুদের গরমের ছুটি পড়তে এখনও অনেক দেরি। তাই এই গরমে শিশুদের ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিদান দিয়েছেন চিকিৎসক সুমন পোদ্দার। তিনি বলেন, "এই গরমে সুস্থ থাকতে প্রচুর পরিমাণ জল খেতে হবে, রসালো ফল সঙ্গে রাখলে ভালো। তবে কোনো অবস্থাতেই ঠান্ডা জল বা রাস্তার কাটা ফল খাওয়া চলবে না। এর সঙ্গে বেশি রঙিন জামা এবং রঙিন ছাতার ব্যবহার এড়িয়ে চলাই শ্রেয়। বরং সাদা বা হালকা জামা ও কালো ছাতা ব্যবহার করা গেলেই ভালো।" বেশ কিছু স্কুলে এই গরমের জন্য এসি ব্যবহার করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে বিষয়টি যে মোটেও স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়, তাও জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। সুমন পোদ্দার জানান, সারাদিন এসি চললেও ছুটির বেশ কিছুক্ষণ আগে এসি বন্ধ করে দিলেই ভালো নাহলে ঠান্ডা গরম লেগে যায় শিশুদের। এই সিজনেও রোগ বাসা বাঁধবে শরীরে।
আরও পড়ুন: গ্রীষ্মে ব়্যাশের সমস্যায় ভুগছেন ? এই টিপসগুলি আপনাকে মুক্তি দিতে পারে
অন্যদিকে বড়দের ক্ষেত্রে বেশ কিছু সাবধানতার কথা বলেছেেন চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস। তিনি বলেন, "এই রোদে হিট স্ট্রোকের সম্ভাবনা বেশি দেখা যায়। কাজের সূত্রে বাড়ি থেকেে বেরোতেই হবে। তবে খনিজ দ্রব্য যতটা সঙ্গে রাখা যায় ততই সুবিধা। নুন চিনির জলে নুনের পরিমাণটাও ঠিক মতো রাখতে হবে। কারণ বর্তমানে যে গরম তাতে ত্বক শুষ্ক হয়ে উঠছে। ফলে একমাত্র রক্ষা ওই জল।" তবে বড়দের ক্ষেত্রেও রাস্তার ঠান্ডা পানীয় এবং তৈলাক্ত খাওয়ার বর্জন করাই শ্রেয় বলে মত চিকিৎসকের।
অন্যদিকে, তাপপ্রবাহের কারণে স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে একটি নির্দেশিকাও জারি করা হয়েছে। স্বাস্থ্যভবনের পক্ষ থেকে হাসপাতালগুলিতে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র, পর্যাপ্ত ওআরএস রাখার কথা বলা হয়েছে। মজুত রাখতে হবে কুলিং প্যাড, ইন্ট্রাভেনাস ফ্লুইড। এসবের পাশাপাশি হাসপাতালগুলিকে যথাযথ ভাবে শীতল রাখার ব্যবস্থাও নিতে বলা হয়েছে এবং হিটস্ট্রোকে কারও মৃত্যু ঘটলে তা তৎক্ষণাৎ সংশ্লিষ্ট মহলে জানাতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।