আপনার প্রশিক্ষক, যোগচর্চার প্রশিক্ষক কিংবা ফিটনেস এক্সপার্টের কাছে আপনি নিশ্চয়ই শুনে থাকবেন, ওয়ার্ম আপ এবং কুল ডাউন অর্থাৎ শরীরচর্চার পরের ধাপ সম্পর্কে । প্রথমটির গুরুত্ব এই যে এটি আঘাত থেকে আপনাকে দূরে রাখে এবং প্রকৃত শরীরচর্চাকে আরও বেশি কার্যকরী করে তোলে । আর দ্বিতীয়টি অর্থাৎ‘পোস্ট ওয়ার্কআউট স্ট্রেচ’ আপনাকে আরাম দেয়, আপনার নমনীয়তা বাড়ায়, মাংসপেশীর ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস করে দেয় এবং হৃদগতিকে মন্থর করে ।
ওয়ার্ম আপ এক্সারসাইজ
জাম্পিং জ্যাকস
–এর জন্য প্রথমে মাটিতে পায়ে ভর করে দাঁড়ান । দুই হাত দেহের দু’পাশে রাখুন ।
–এবার হাঁটু অল্প বাঁকিয়ে লাফান এবং পা দু’টিকে দু’পাশে ছড়িয়ে দিন অন্তত কাঁধের কিনারা পর্যন্ত । একইসঙ্গে হাত দু’টি মাথার উপরে নিয়ে আসুন ।
–এবার আবার লাফান । আগের পজিশনে ফিরে আসুন । গোটা প্রক্রিয়ার পুনরাবৃত্তি করুন । গতি নিজের সুবিধামতো কমাতে-বাড়াতে পারেন ।
অন দ্য স্পট মার্চ
–সোজাভাবে দাঁড়িয়ে মার্চ করতে শুরু করুন জায়গায় দাঁড়িয়েই । স্থান পরিবর্তন করবেন না ।
–হাঁটু উঁচু করে মার্চ করুন, যাতে তা মাটির সমান্তরালে থাকে ।
–হাত মুঠি করে, বাহু ঊর্ধ্বে তুলুন । প্রতি ভঙ্গির সঙ্গে তার বিপরীত পা উঠবে । যেমন যখন আপনি বাম পা তুলবেন, তখন আপনার ডান হাত উপরে উঠবে । আপনি হাত নিজের দু’পাশেও রাখতে পারেন এবং একই ভঙ্গিতে সামনে এবং পিছনে সরাতে পারেন ।
–অন্তত তিন মিনিট এটা করুন ।
নি লিফটস
–সোজাভাবে দাঁড়িয়ে ডান কনুই বাঁকান । এবার বাম হাঁটু যতটা সম্ভব উপরে তুলুন এবং চেষ্টা করুন ডান কনুই দিয়ে বাম হাঁটু স্পর্শ করার ।
–৩০ বার করার পর অন্য হাঁটুতেও একই ভঙ্গি অভ্যাস করুন ।
শোল্ডার রোলস
–সোজাভাবে পায়ের পাতার ভর করে দাঁড়ান । কাঁধ পরস্পরের থেকে সমান দূরত্বে থাকবে । পিঠ থাকবে টান টান ।
–এবার দুই বাহু দুপাশে রাখুন এবং ধীরে ধীরে তা সামনে এবং পিছনে নামিয়ে আনুন, প্রত্যেক দফায় ১০ বার করে ।
লেগ সুইংগস
–সোজাভাবে দাঁড়ান এবং শরীরের সমস্ত ওজন এক পায়ের উপর দিন আর অন্য পা তুলে রাখুন ।
–এবার পা, সামনে এবং পিছনে দোলান । এর জন্য কোনও দেওয়াল বা চেয়ারে ভরও করতে পারেন ।
–অন্য পায়েও একই ভঙ্গি অভ্যাস করুন । প্রত্যেক পায়ে অন্তত ২০ বার করবেন ।
কুল ডাউন এক্সারসাইজ
হ্যামস্ট্রিং স্ট্রেচ
–পিঠে ভর দিয়ে শুয়ে পড়ুন । হাঁটু বেঁকিয়ে নিন যাতে পা মাটিতে থাকে ।
–এবার ডান পা সোজা আকাশের দিকে তুলুন এবং দু’হাত দিয়ে ধরে থাকুন । চেষ্টা করুন, তাকে নিজের দিকে নামিয়ে আনার ।
–এই ভঙ্গিতে ১০-১৫ সেকেন্ড থাকুন । অন্য পায়েও একই ভঙ্গির পুনরাবৃত্তি করুন ।
বাট ব্রিজ
–মাটিতে শুয়ে পড়ুন, হাঁটু বেঁকিয়ে পা মাটিতে রাখুন, গোড়ালি যতটা সম্ভব আপনার পশ্চাৎদেশের কাছাকাছি থাকবে ।
–হাত দু’টি আপনার শরীরের দু’পাশে থাকবে, হাতের তালু থাকবে নিচের দিকে মুখ করে ।
–নিঃশ্বাস নিন, পিছনের অংশ তুলুন এবং ওই ভঙ্গিতে ১-২ মিনিট রাখুন । তার পর শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে আবার আগের পজিশনে ফিরে আসুন ।
নি টু চেস্ট
–মাটিতে সোজা হয়ে শুয়ে পড়ুন । একটি পা বেঁকিয়ে চেষ্টা করুন হাঁটুকে বুকের কাছাকাছি আনতে ।
–পা ঊর্ধ্বে তুলে রাখুন অন্তত এক মিনিট । তারপর অন্য পায়ে একই ভঙ্গির পুনরাবৃত্তি করুন ।
চাইল্ডস পোজ
–হাঁটু গেড়ে মাটিতে বসুন এবং রিল্যাক্স করুন ।
–এবার পায়ের আঙুলগুলিকে কাছাকাছি আনুন এবং হাঁটুগুলির মধ্যে দূরত্ব বাড়ান ।
–এবার ধীরে ধীরে সামনের দিকে বেঁকুন যাতে আপনার কপাল মাটিকে স্পর্শ করতে পারে । যদি এটা না করতে পারেন, তাহলে নিজের দুই মুঠি একত্রিত করে নিজের কপালের নিচে সাপোর্ট হিসাবে রাখতে পারেন ।
–এবার হয় হাত দুটি স্ট্রেচ করুন, হাতের তালু নিচের দিকে ম্যাটের মুখোমুখি থাকবে । অথবা আপনি দু’হাত কে থাইয়ের পাশেও রাখতে পারেন । তখন হাতের তালু উপরের দিকে মুখ করে থাকবে ।