ETV Bharat / sukhibhava

ভ্যারিকোস ভেইনস

author img

By

Published : Nov 6, 2020, 1:43 PM IST

দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে পায়ের নিচের দিকের অংশে রক্ত জমে যেতে পারে, যাকে ভ্যারিকোস ভেইনস বলা হয় । ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী, গৃহবধূ যাঁরা দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করেন, বাস কন্ডাক্টর, সেলসম্যানসহ অনেকের ক্ষেত্রে সাধারণভাবে এই উপসর্গ দেখা যায় । জানুন কী করা উচিত এক্ষেত্রে ।

Varicose veins, a source of health problems
ভ্যারিকোস ভেইনস, স্বাস্থ্য সমস্যার উৎস

চামড়ার নিচে ওই প্রসারিত, স্ফীত, পাকানো, ঠিকরে বেরিয়ে আসা এবং বড় বড় কর্ডগুলি (শিরা) কখনও লক্ষ্য করেছেন ? বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই, পায়ের নিচের দিকে (গোড়ালি কিংবা হাঁটুর পিছন দিকে) এদের দেখা যায়, যা সবুজাভ নীল রঙের হয় এবং কখনও ব্যথাযুক্ত আবার কখনও ব্যথাবিহীন হয়। এই নিয়ে আরও তথ্যের জন্য ETV কথা বলেছে অলটারনেটিভ মেডিসিন প্র‌্যাকটিশনার তথা যোগ প্রশিক্ষক ডাঃ জাহ্নবী কাঠরানির সঙ্গে।

শিরাগুলি দেহের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ‘ডি—অক্সিজেনেটেড’ রক্ত বহন করে হৃৎপিণ্ডে নিয়ে আসে, যেখান থেকে একে ফুসফুসে পাঠানো হয় যাতে এর মধে্য অক্সিজেনের সংবহন ঘটানো যায় । দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে পায়ের নিচের দিকের অংশে রক্ত জমে যেতে পারে, যাকে ভ্যারিকোস ভেইনস বলা হয় । ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী, গৃহবধূ যাঁরা দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করেন, বাস কন্ডাক্টর, সেলসম্যান প্রভৃতিদের ক্ষেত্রে সাধারণভাবে এই উপসর্গ দেখা যায় ।

ডাক্তার দেখানো এক্ষেত্রে কতটা জরুরি?

যদি আপনার মনে হয়, ‘কসমেটিক’ তথা প্রসাধন সংক্রান্ত ছাড়া এর ফলে সরাসরি আপনার কোনও সমস্যা হচ্ছে না, তাহলেও জেনে রাখুন, এই উপসর্গ কিন্তু নানা ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যার উৎস এবং যদি এর চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে এর ফলে চামড়ার ওই অংশে চুলকানি হতে পারে, এগজ়িমা তথা আলসার এমনকী সহজে সারে না, এমন ক্ষতও সৃষ্টি হতে পারে ।

১. কখনও কখনও এই ধরনের পরিস্থিতিতে উপসর্গ হিসাবে নির্দিষ্টভাবে কোনও বিপদ সংকেত দেখা যায় না । তাই, বিষয়টি আপাত—লুক্কায়িত থাকে ।

২.এর জেরে গুরুতর ‘ভেনাস ব্লাড সারকুলেশন’—এর সমস্যা দেখা দিতে পারে, যাতে ব্যথা হতেও পারে আবার নাও হতে পারে । এর থেকে অন্যান্য উপসর্গ যেমন এডিমা (পা ফুলে যাওয়া), মাংসপেশির দুর্বলতা, পায়ের অস্থিরতা প্রভৃতিও দেখা দিতে পারে ।

৩. শিরার দেওয়ালগুলির দুর্বল কার্যকারিতার জেরে আক্রান্ত অংশে পুষ্টির সরবরাহে সমস্যা দেখা দিতে পারে ।

৪. এর জেরে সাধারণভাবে হওয়া জটিলতাগুলির তালিকায় রয়েছে মাসল ক্র্যাম্প এবং মাংসপেশির দুর্বলতা । আর পরবর্তীকালে, দৈনন্দিন কাজকর্মের জেরে জয়েন্টের আরও বেশি ক্ষতি হতে পারে ।

৫. ক্লান্তি । হ্যাঁ, এর জেরে ক্লান্তি এবং অস্বাচ্ছন্দ্য দেখা দিতে পারে, কারণ দুর্বল রক্ত—সঞ্চালনের ফলে কোষ—কলায় অক্সিজেন পুরোপুরিভাবে পৌঁছয় না এবং এর ফলে শেষের দিকে শ্বাসকষ্টের সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

কী করা উচিত, আর কী করা উচিত নয়

—এক জায়গায় অনেকক্ষণ ধরে বসে বা দাঁড়িয়ে থাকবেন না । পা দীর্ঘক্ষণ ঝুলিয়ে বসে থাকলে সমস্যা আরও বাড়বে কারণ এর ফলে গোড়ালি এবং পায়ের তালুতে রক্তের সঞ্চয় বেশি হবে ।

—চিনি বেশি খাবেন না । প্রোটিন কতটা গ্রহণ করছেন, তার দিকে নজর রাখুন ।

—এই বিষয়টিকে কোনও অস্থায়ী সমস্যা বলে ধরে নেবেন না । বরং সতর্ক থাকুন, সক্রিয় থাকুন এবং যত্ন নিন ।

—ব্যথা কখন বাড়বে বা জটিলতা কখন বাড়বে, তার জন্য অপেক্ষা করে বসে থাকবেন না । বিশেষ করে যদি এই সমস্যার পারিবারিক ইতিহাস থেকে থাকে কিংবা আপনাকে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করতে হয় ।

—আক্রান্ত অংশটিকে খুব বেশি তাপের বা সূর্যের আলো কিংবা হট ব্যাগের সংস্পর্শে আনবেন না । তবে কোনও ফিজিওথেরাপিস্টের নজরদারি ছাড়া কোনওভাবেই ‘হট ওয়াটার ফার্মেন্টেশন’ করা চলবে না । কারণ বেশি বাড়াবাড়ি করতে গেলে তা আপনার পক্ষেই ক্ষতিকারক হতে পারে কারণ কোনওভাবে এর জেরে শিরাগুলি বিচ্ছিন্ন হতে পারে ।

—ধূমপান করবেন না, মদ্যপানও করবেন না । এগুলি সত্যিই বিপজ্জনক হতে পারে ।

—ভারী ওজন তুলবেন না । এর জন্য বেশি শক্তি এবং স্বাস্থ্যকর রক্ত সঞ্চালনের প্রয়োজন হয়, তাই ভারী ওজন তোলা এড়িয়ে চলুন ।

—চিকিৎসাশাস্ত্রের সঙ্গে যুক্ত নন, এমন কারও পরামর্শে বা নিজে থেকেই ডাক্তারি করে আক্রান্ত অংশে মালিশ করবেন না । দয়া করে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন ।

—হয় প্রতিদিন না হয় অন্তত সপ্তাহের পাঁচ দিন হাঁটুন ।

—পা এবং পায়ের পাতা স্ট্রেচ করুন প্রতিদিন, বিশেষ করে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা কিংবা দাঁড়িয়ে থাকার পর ।

—কমপ্রেসন স্টকিং (প্রেসক্রিপশনে যদি লেখা থাকে) পরুন।

—পুষ্টির স্তর, কোনও ভিটামিনের ঘাটতি আছে কি না, তা জানার জন্য রক্তের পরীক্ষা করানো অত্যন্ত জরুরি (তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী) ।

—শরীরে ভেরিকোস ভেইন ছাড়া অন্য কোনও রোগ বা জটিলতা আছে কি না, তা খতিয়ে দেখুন।

—দেহে রক্ত সরবরাহ সঠিক রাখতে এবং রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ভাল রাখতে ব্রিদিং এক্সারসাইজ় করুন।

—পায়ের যত্নের স্তর বাড়িয়ে দিন এবং বিশ্রাম করুন ।

শরীরচর্চা এবং স্ট্রেচিং অবশ্যই কোনও ফিজিওথেরাপিস্ট তথা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মেনেই করা উচিত ‘কেস টু কেস’ —বিচার করে এই পরামর্শ দেওয়া হয় ।

আপনার কোনও প্রশ্ন থাকলে ডাঃ জাহ্নবী কাঠরানির সঙ্গে যোগাযোগ করুন jk.swasthya108@gmail.com-এ ।

চামড়ার নিচে ওই প্রসারিত, স্ফীত, পাকানো, ঠিকরে বেরিয়ে আসা এবং বড় বড় কর্ডগুলি (শিরা) কখনও লক্ষ্য করেছেন ? বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই, পায়ের নিচের দিকে (গোড়ালি কিংবা হাঁটুর পিছন দিকে) এদের দেখা যায়, যা সবুজাভ নীল রঙের হয় এবং কখনও ব্যথাযুক্ত আবার কখনও ব্যথাবিহীন হয়। এই নিয়ে আরও তথ্যের জন্য ETV কথা বলেছে অলটারনেটিভ মেডিসিন প্র‌্যাকটিশনার তথা যোগ প্রশিক্ষক ডাঃ জাহ্নবী কাঠরানির সঙ্গে।

শিরাগুলি দেহের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ‘ডি—অক্সিজেনেটেড’ রক্ত বহন করে হৃৎপিণ্ডে নিয়ে আসে, যেখান থেকে একে ফুসফুসে পাঠানো হয় যাতে এর মধে্য অক্সিজেনের সংবহন ঘটানো যায় । দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে পায়ের নিচের দিকের অংশে রক্ত জমে যেতে পারে, যাকে ভ্যারিকোস ভেইনস বলা হয় । ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী, গৃহবধূ যাঁরা দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করেন, বাস কন্ডাক্টর, সেলসম্যান প্রভৃতিদের ক্ষেত্রে সাধারণভাবে এই উপসর্গ দেখা যায় ।

ডাক্তার দেখানো এক্ষেত্রে কতটা জরুরি?

যদি আপনার মনে হয়, ‘কসমেটিক’ তথা প্রসাধন সংক্রান্ত ছাড়া এর ফলে সরাসরি আপনার কোনও সমস্যা হচ্ছে না, তাহলেও জেনে রাখুন, এই উপসর্গ কিন্তু নানা ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যার উৎস এবং যদি এর চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে এর ফলে চামড়ার ওই অংশে চুলকানি হতে পারে, এগজ়িমা তথা আলসার এমনকী সহজে সারে না, এমন ক্ষতও সৃষ্টি হতে পারে ।

১. কখনও কখনও এই ধরনের পরিস্থিতিতে উপসর্গ হিসাবে নির্দিষ্টভাবে কোনও বিপদ সংকেত দেখা যায় না । তাই, বিষয়টি আপাত—লুক্কায়িত থাকে ।

২.এর জেরে গুরুতর ‘ভেনাস ব্লাড সারকুলেশন’—এর সমস্যা দেখা দিতে পারে, যাতে ব্যথা হতেও পারে আবার নাও হতে পারে । এর থেকে অন্যান্য উপসর্গ যেমন এডিমা (পা ফুলে যাওয়া), মাংসপেশির দুর্বলতা, পায়ের অস্থিরতা প্রভৃতিও দেখা দিতে পারে ।

৩. শিরার দেওয়ালগুলির দুর্বল কার্যকারিতার জেরে আক্রান্ত অংশে পুষ্টির সরবরাহে সমস্যা দেখা দিতে পারে ।

৪. এর জেরে সাধারণভাবে হওয়া জটিলতাগুলির তালিকায় রয়েছে মাসল ক্র্যাম্প এবং মাংসপেশির দুর্বলতা । আর পরবর্তীকালে, দৈনন্দিন কাজকর্মের জেরে জয়েন্টের আরও বেশি ক্ষতি হতে পারে ।

৫. ক্লান্তি । হ্যাঁ, এর জেরে ক্লান্তি এবং অস্বাচ্ছন্দ্য দেখা দিতে পারে, কারণ দুর্বল রক্ত—সঞ্চালনের ফলে কোষ—কলায় অক্সিজেন পুরোপুরিভাবে পৌঁছয় না এবং এর ফলে শেষের দিকে শ্বাসকষ্টের সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

কী করা উচিত, আর কী করা উচিত নয়

—এক জায়গায় অনেকক্ষণ ধরে বসে বা দাঁড়িয়ে থাকবেন না । পা দীর্ঘক্ষণ ঝুলিয়ে বসে থাকলে সমস্যা আরও বাড়বে কারণ এর ফলে গোড়ালি এবং পায়ের তালুতে রক্তের সঞ্চয় বেশি হবে ।

—চিনি বেশি খাবেন না । প্রোটিন কতটা গ্রহণ করছেন, তার দিকে নজর রাখুন ।

—এই বিষয়টিকে কোনও অস্থায়ী সমস্যা বলে ধরে নেবেন না । বরং সতর্ক থাকুন, সক্রিয় থাকুন এবং যত্ন নিন ।

—ব্যথা কখন বাড়বে বা জটিলতা কখন বাড়বে, তার জন্য অপেক্ষা করে বসে থাকবেন না । বিশেষ করে যদি এই সমস্যার পারিবারিক ইতিহাস থেকে থাকে কিংবা আপনাকে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করতে হয় ।

—আক্রান্ত অংশটিকে খুব বেশি তাপের বা সূর্যের আলো কিংবা হট ব্যাগের সংস্পর্শে আনবেন না । তবে কোনও ফিজিওথেরাপিস্টের নজরদারি ছাড়া কোনওভাবেই ‘হট ওয়াটার ফার্মেন্টেশন’ করা চলবে না । কারণ বেশি বাড়াবাড়ি করতে গেলে তা আপনার পক্ষেই ক্ষতিকারক হতে পারে কারণ কোনওভাবে এর জেরে শিরাগুলি বিচ্ছিন্ন হতে পারে ।

—ধূমপান করবেন না, মদ্যপানও করবেন না । এগুলি সত্যিই বিপজ্জনক হতে পারে ।

—ভারী ওজন তুলবেন না । এর জন্য বেশি শক্তি এবং স্বাস্থ্যকর রক্ত সঞ্চালনের প্রয়োজন হয়, তাই ভারী ওজন তোলা এড়িয়ে চলুন ।

—চিকিৎসাশাস্ত্রের সঙ্গে যুক্ত নন, এমন কারও পরামর্শে বা নিজে থেকেই ডাক্তারি করে আক্রান্ত অংশে মালিশ করবেন না । দয়া করে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন ।

—হয় প্রতিদিন না হয় অন্তত সপ্তাহের পাঁচ দিন হাঁটুন ।

—পা এবং পায়ের পাতা স্ট্রেচ করুন প্রতিদিন, বিশেষ করে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা কিংবা দাঁড়িয়ে থাকার পর ।

—কমপ্রেসন স্টকিং (প্রেসক্রিপশনে যদি লেখা থাকে) পরুন।

—পুষ্টির স্তর, কোনও ভিটামিনের ঘাটতি আছে কি না, তা জানার জন্য রক্তের পরীক্ষা করানো অত্যন্ত জরুরি (তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী) ।

—শরীরে ভেরিকোস ভেইন ছাড়া অন্য কোনও রোগ বা জটিলতা আছে কি না, তা খতিয়ে দেখুন।

—দেহে রক্ত সরবরাহ সঠিক রাখতে এবং রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ভাল রাখতে ব্রিদিং এক্সারসাইজ় করুন।

—পায়ের যত্নের স্তর বাড়িয়ে দিন এবং বিশ্রাম করুন ।

শরীরচর্চা এবং স্ট্রেচিং অবশ্যই কোনও ফিজিওথেরাপিস্ট তথা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মেনেই করা উচিত ‘কেস টু কেস’ —বিচার করে এই পরামর্শ দেওয়া হয় ।

আপনার কোনও প্রশ্ন থাকলে ডাঃ জাহ্নবী কাঠরানির সঙ্গে যোগাযোগ করুন jk.swasthya108@gmail.com-এ ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.