ETV Bharat / sukhibhava

ঠাণ্ডাই : একটা শীতল, পুষ্টিকর গ্রীষ্মের পানীয় - THANDAI A COOL NUTRITIOUS Summer Drink

এক গ্লাস (250 মিলিলিটার) ঠাণ্ডাই প্রায় 380 কিলো ক্যালোরি, 11 গ্রাম প্রোটিন এবং 18.3 গ্রাম ফ্যাট জোগায় । এর মধ্যেই আমাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় 2000 কিলো ক্যালোরির প্রায় 17 শতাংশ রয়েছে ।

thandai
thandai
author img

By

Published : Apr 1, 2021, 6:26 AM IST

ঠাণ্ডাই বা শারদাই, একটি পবিত্র পানীয়, যা মহাশিবরাত্রিতে ভগবান শিবকে দেওয়া হয়। এটা একটা বহু প্রাচীন গ্রীষ্মের পানীয়, যার অস্তিত্ব ছিল 1000 খ্রিস্টপূর্বাব্দেও। নাম থেকেই বোঝা যাচ্ছে, যে এই পানীয় শরীর শীতল করে । প্রবল গ্রীষ্মের মাসগুলোতে এটা খাওয়ার চল রয়েছে, বিশেষ করে পাঞ্জাব এবং উত্তর প্রদেশের মতো রাজ্যে ।

এব্যাপারে আরও জানতে ইটিভি ভারত সুখীভব কথা বলেছিল হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক ক্রুতি এস ধিরওয়ানির সঙ্গে, যিনি মুম্বইয়ের সানশাইন হোমিওপ্যাথি ক্লিনিকের পুষ্টিবিশেষজ্ঞও ।

ঠাণ্ডাইয়ে ব্যবহৃত উপকরণগুলো পুষ্টিকর হওয়ার ফলে, এই পানীয়কে একদম পাওয়ার প্যাকড করে তোলে ।

এতে রয়েছে –

  • আমন্ড – ভিটামিন ই এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাটে পরিপূর্ণ আমন্ডে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিড্যান্টও।
  • কাজু বাদাম – এতে রয়েছে প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। কাজু তাৎক্ষণিক এনার্জি দেয়। এর মধ্যে রয়েছে কপার, ম্যাগনেশিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজও।
  • কালো মরিচ – একে বলা হয় মশলাদের রাজা। ফ্লেভার বাড়ানোর পাশাপাশি কালো মরিচের বহু গুণও রয়েছে। প্রধান উপাদান পিপেরিন অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট হিসেবে কাজ করে, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং পেট ভালো রাখে। পিপেরিন ছাড়াও এতে রয়েছে ম্যাঙ্গানিজ, জিঙ্ক, ক্যালসিয়াম, আয়রণের মতো খনিজ এবং ভিটামিন এ।
  • কিসমিস – ফাইবার, এনার্জি, ভিটামিন ও মিনারেলে পরিপূর্ণ। এতে আয়রন লেভেল বাড়ে, হাড় শক্তিশালী হয় এবং হজমে সহায়তা করে।
  • পোস্ত – খেতে সুস্বাদু হওয়ার পাশাপাশি পোস্তয় রয়েছে প্রচুর ফাইবার, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম ও ক্যালশিয়াম। এতে হাড় ও পেশী শক্তিশালী থাকে এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতাও বজায় থাকে। লিনোলিক অ্যাসিড (ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড) থাকার জন্য হৃদযন্ত্রের সমস্যা সামাল দেয়।
  • মৌরি – এই সুগন্ধী বীজগুলোতে এমন একধরণের তেল থাকে, যার মধ্যে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ রয়েছে। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং শরীর ঠাণ্ডা রাখার ক্ষমতার জন্যও মৌরি সুপরিচিত। এটা হজম করায় এবং গ্যাস কমিয়ে পাকস্থলীকে সুস্থ রাখে।
  • এলাচ – এর মধ্যে পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম এবং ফসফরাসের মতো খনিজ পদার্থ রয়েছে। হজমের সমস্যা সমাধান, ডিটক্সিফিকেশন এবং অ্যান্টি-ডিপ্রেস্যান্ট হিসেবে এর গুণ বহুমুখী।
  • কুমড়োর বীজ – একে বলা যেতে পারে পুষ্টির ‘পাওয়ারহাউস’। এর মধ্যে স্বাস্থ্যকর তেল, ফাইবার ও প্রোটিন রয়েছে। এগুলো দুর্দান্তভাবে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, হৃদরোগ দূরে রাখে এবং শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট হিসেবে কাজ করে।
  • জাফরান – ‘লাল সোনা’ বলে পরিচিত জাফরানকে পারম্পরিক ওষধি হিসেবে অ্যান্টি-ডিপ্রেস্যান্ট, অ্যান্টি-সেপ্টিক, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং হজমকারক হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

এই সমস্ত উপকরণকে দুধে মেশানো হয়, এবং তার সঙ্গে চিনি বা গুড় মিশিয়ে ঠাণ্ডা পরিবেশন করা হয়। দুধ নিজেই একটা সুষম খাবার এবং ঠাণ্ডা দুধ অ্যান্টাসিড হিসেবে কাজ করে এবং শরীরকে শীতল রাখে।

এতরকম পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ এই পানীয় গরমের দিনে শরীরকে ঠাণ্ডা রাখতে, শরীরকে পরিশুদ্ধ করতে, পেটের সমস্যাকে দূরে রাখতে এবং এনার্জি বর্ধক হিসেবে কাজ করে।

এই পারম্পরিক পানীয়ের বহু ধরন এবং ফ্লেভার রয়েছে। হোলির উৎসবে এর সঙ্গে ভাঙ মিশিয়ে নেশার সামগ্রী হিসেবে খাওয়া হয় ।

অতিরিক্ত ঠাণ্ডাই ক্ষতিকর হতে পারে

এক গ্লাস (250 মিলিলিটার) ঠাণ্ডাই প্রায় 380 কিলো ক্যালোরি, 11 গ্রাম প্রোটিন এবং 18.3 গ্রাম ফ্যাট জোগায় । এর মধ্যেই আমাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় 2000 কিলো ক্যালোরির প্রায় 17 শতাংশ রয়েছে । তাই একবারের বেশি খাওয়া উচিত নয় ।

দুধ ও চিনি থাকার জন্য ক্যালোরি অনেকটাই বেশি থাকে, তাই ডায়াবিটিস, হাইপারটেনশন, হৃদরোগ এবং কিডনির সমস্যা থাকলে, ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলার পরেই এটা খাওয়া উচিত। পাশাপাশি বাদামে অ্যালার্জি রয়েছে, এমন মানুষদের ঠাণ্ডাই এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এর মধ্যে রয়েছে আমন্ড এবং কাজুবাদাম ।

আপনার প্রশ্ন থাকলে যোগাযোগ করতে পারেন -namaste@drkrutidhirwani.com

ঠাণ্ডাই বা শারদাই, একটি পবিত্র পানীয়, যা মহাশিবরাত্রিতে ভগবান শিবকে দেওয়া হয়। এটা একটা বহু প্রাচীন গ্রীষ্মের পানীয়, যার অস্তিত্ব ছিল 1000 খ্রিস্টপূর্বাব্দেও। নাম থেকেই বোঝা যাচ্ছে, যে এই পানীয় শরীর শীতল করে । প্রবল গ্রীষ্মের মাসগুলোতে এটা খাওয়ার চল রয়েছে, বিশেষ করে পাঞ্জাব এবং উত্তর প্রদেশের মতো রাজ্যে ।

এব্যাপারে আরও জানতে ইটিভি ভারত সুখীভব কথা বলেছিল হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক ক্রুতি এস ধিরওয়ানির সঙ্গে, যিনি মুম্বইয়ের সানশাইন হোমিওপ্যাথি ক্লিনিকের পুষ্টিবিশেষজ্ঞও ।

ঠাণ্ডাইয়ে ব্যবহৃত উপকরণগুলো পুষ্টিকর হওয়ার ফলে, এই পানীয়কে একদম পাওয়ার প্যাকড করে তোলে ।

এতে রয়েছে –

  • আমন্ড – ভিটামিন ই এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাটে পরিপূর্ণ আমন্ডে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিড্যান্টও।
  • কাজু বাদাম – এতে রয়েছে প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। কাজু তাৎক্ষণিক এনার্জি দেয়। এর মধ্যে রয়েছে কপার, ম্যাগনেশিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজও।
  • কালো মরিচ – একে বলা হয় মশলাদের রাজা। ফ্লেভার বাড়ানোর পাশাপাশি কালো মরিচের বহু গুণও রয়েছে। প্রধান উপাদান পিপেরিন অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট হিসেবে কাজ করে, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং পেট ভালো রাখে। পিপেরিন ছাড়াও এতে রয়েছে ম্যাঙ্গানিজ, জিঙ্ক, ক্যালসিয়াম, আয়রণের মতো খনিজ এবং ভিটামিন এ।
  • কিসমিস – ফাইবার, এনার্জি, ভিটামিন ও মিনারেলে পরিপূর্ণ। এতে আয়রন লেভেল বাড়ে, হাড় শক্তিশালী হয় এবং হজমে সহায়তা করে।
  • পোস্ত – খেতে সুস্বাদু হওয়ার পাশাপাশি পোস্তয় রয়েছে প্রচুর ফাইবার, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম ও ক্যালশিয়াম। এতে হাড় ও পেশী শক্তিশালী থাকে এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতাও বজায় থাকে। লিনোলিক অ্যাসিড (ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড) থাকার জন্য হৃদযন্ত্রের সমস্যা সামাল দেয়।
  • মৌরি – এই সুগন্ধী বীজগুলোতে এমন একধরণের তেল থাকে, যার মধ্যে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ রয়েছে। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং শরীর ঠাণ্ডা রাখার ক্ষমতার জন্যও মৌরি সুপরিচিত। এটা হজম করায় এবং গ্যাস কমিয়ে পাকস্থলীকে সুস্থ রাখে।
  • এলাচ – এর মধ্যে পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম এবং ফসফরাসের মতো খনিজ পদার্থ রয়েছে। হজমের সমস্যা সমাধান, ডিটক্সিফিকেশন এবং অ্যান্টি-ডিপ্রেস্যান্ট হিসেবে এর গুণ বহুমুখী।
  • কুমড়োর বীজ – একে বলা যেতে পারে পুষ্টির ‘পাওয়ারহাউস’। এর মধ্যে স্বাস্থ্যকর তেল, ফাইবার ও প্রোটিন রয়েছে। এগুলো দুর্দান্তভাবে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, হৃদরোগ দূরে রাখে এবং শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট হিসেবে কাজ করে।
  • জাফরান – ‘লাল সোনা’ বলে পরিচিত জাফরানকে পারম্পরিক ওষধি হিসেবে অ্যান্টি-ডিপ্রেস্যান্ট, অ্যান্টি-সেপ্টিক, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং হজমকারক হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

এই সমস্ত উপকরণকে দুধে মেশানো হয়, এবং তার সঙ্গে চিনি বা গুড় মিশিয়ে ঠাণ্ডা পরিবেশন করা হয়। দুধ নিজেই একটা সুষম খাবার এবং ঠাণ্ডা দুধ অ্যান্টাসিড হিসেবে কাজ করে এবং শরীরকে শীতল রাখে।

এতরকম পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ এই পানীয় গরমের দিনে শরীরকে ঠাণ্ডা রাখতে, শরীরকে পরিশুদ্ধ করতে, পেটের সমস্যাকে দূরে রাখতে এবং এনার্জি বর্ধক হিসেবে কাজ করে।

এই পারম্পরিক পানীয়ের বহু ধরন এবং ফ্লেভার রয়েছে। হোলির উৎসবে এর সঙ্গে ভাঙ মিশিয়ে নেশার সামগ্রী হিসেবে খাওয়া হয় ।

অতিরিক্ত ঠাণ্ডাই ক্ষতিকর হতে পারে

এক গ্লাস (250 মিলিলিটার) ঠাণ্ডাই প্রায় 380 কিলো ক্যালোরি, 11 গ্রাম প্রোটিন এবং 18.3 গ্রাম ফ্যাট জোগায় । এর মধ্যেই আমাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় 2000 কিলো ক্যালোরির প্রায় 17 শতাংশ রয়েছে । তাই একবারের বেশি খাওয়া উচিত নয় ।

দুধ ও চিনি থাকার জন্য ক্যালোরি অনেকটাই বেশি থাকে, তাই ডায়াবিটিস, হাইপারটেনশন, হৃদরোগ এবং কিডনির সমস্যা থাকলে, ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলার পরেই এটা খাওয়া উচিত। পাশাপাশি বাদামে অ্যালার্জি রয়েছে, এমন মানুষদের ঠাণ্ডাই এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এর মধ্যে রয়েছে আমন্ড এবং কাজুবাদাম ।

আপনার প্রশ্ন থাকলে যোগাযোগ করতে পারেন -namaste@drkrutidhirwani.com

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.