ETV Bharat / sukhibhava

কোভিডকালে ক্যানসার নিরাময়ে টেলি-কাউন্সেলিং নয়া দিগন্ত উন্মোচন করেছে

কোভিড পরিস্থিতিতে ক্যানসার নিয়ে চিন্তিত ? টেলি-কাউন্সেলিং পদ্ধতি দেখাচ্ছে নতুন দিশা । জানতে হলে সঙ্গে রাখুন সুখীভব ।

কোভিডকালে ক্যানসার নিরাময়ে টেলি—কাউন্সেলিং নয়া দিগন্ত উন্মোচন করেছে
কোভিডকালে ক্যানসার নিরাময়ে টেলি—কাউন্সেলিং নয়া দিগন্ত উন্মোচন করেছে
author img

By

Published : Mar 10, 2021, 1:37 PM IST

প্যানডেমিক মানবজীবনকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে । এই ভাইরাসের অভিনবত্ব এবং এর সংক্রমণের বিস্তার প্রত্যেকের মনে বিশেষ করে, সেই সমস্ত ক্যানসার রোগীদের মনে ভয়ের উদ্রেক করেছে, যারা বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ক্যানসারের চিকিৎসা করাচ্ছেন ।

ETV Bharat সুখীভব এই বিষয়ে মিস কাজল দাভের সঙ্গে কথা বলেছে । (কাজল মুম্বইয়ের কনসালটিং সাইকোলজিস্ট এবং প্রাক্তন ক্যানসার কাউন্সিলর)

বহু রোগীর মনেই ভয় তৈরি হয়েছিল যে, যেহেতু তাদের ইমিউনিটি এমনিতেই কম, তাই তাদের কোভিড সংক্রমণের আশঙ্কা বেশি । এই সমস্ত ভয় এবং অনিশ্চয়তার মধ্যেই অনেকে চিকিৎসকের কাছে পরীক্ষা করাতে না গিয়ে নিজ নিজ গ্রামে ফিরে গিয়েছেন । ভাইরাস এবং চিকিৎসা শেষ না হওয়ার ভয় মিলেমিশে বাড়তে বাড়তে, ক্যানসার আক্রান্ত এবং তার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বিশাল আতঙ্কের জন্ম দিয়েছে ।

মানসিক স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা যেমন উদ্বেগ, অবসাদ এবং গার্হ্যস্থ হিংসার ঘটনার প্রেক্ষিতে অনেকগুলি হেল্পলাইন শুরু করা হয়েছিল । ক্যানসার আক্রান্ত এবং তার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে চিকিৎসা না পাওয়ার ভয়, নিয়মিত চেকআপ করানোর অনীহা এবং কাছের কারও মৃত্যুর জেরে কেয়ার-গিভারের কাউন্সেলিংয়ে ক্ষোভ প্রভৃতি থেকে মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে ।

আরও পড়ুন : ব্রেস্ট ক্যানসার নির্ণয়ে এআই ব্যবহার খতিয়ে দেখছে গুগল

ক্যানসার রোগী ও তার পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতার জন্য, হেল্পলাইন সেন্টার তৈরি কর হয়েছে যাতে তারা ফোনে নিরাময়ের পরামর্শ পেতে পারে । পাশাপাশি চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার জন্য, স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখা, প্যানডেমিক ও কেমোথেরাপি পর্বের পরবর্তী সময়ে কাউন্সেলিংও যেন অবিরত চলতে থাকে, সে দিকেও নজর দেওয়া হয় । লকডাউনের ফলে নতুন রোগীদের শারীরিক পরিস্থিতি সংক্রান্ত আরও বেশি বিশ্লেষণের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছিল । কিন্তু ডাক্তার ও কাউন্সিলররা রোগীদের নতুন চিকিৎসা কীভাবে মিলবে, তা বুঝতে সাহায্য করেছেন ।

কোভিডকালে টেলি-কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে রোগী এবং পরিবারদের সহায়তা প্রদান করা হয়েছিল যাতে তারা বাস্তব এবং অবাস্তব ভীতির মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করতে পারে । প্রতিটি হাসপাতাল এবং এনজিও-র আওতায় হেল্পলাইন সেন্টার গড়ে তুলতে কিছুটা হলেও সময় লেগেছে । যারা যোগাযোগ করতে পারেননি বা এই টেলি-কনসাল্ট বিষয়টা যাদের কাছে নতুন, তাদের সাহায্য করা হয়েছিল স্থানীয় সংবাদপত্রের মাধ্যমে । তাছাড়াও এনজিও গুলিও নথিবদ্ধ রোগীদের ফোন করে, তাদের চিকিৎসাজনিত উদ্বেগ প্রশমনে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন । যদিও আরোগ্য সংক্রান্ত টেলি- কাউন্সেলিং শিক্ষা আর কোভিডজনিত উপসর্গ নিয়ন্ত্রণে পরামর্শের বিষয়ে নতুন করে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছিল ।

চিকিৎসায় ব্যাঘাতের জেরে ক্যানসার রোগীদের মনে ওপিডি পরিষেবার পুনরায় শুরু হওয়া নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে । পাশাপাশি ওষুধের জন্য অর্থের সংস্থান করার উপর প্রভাব পড়েছে এবং এনজিও গুলির থেকে সাহায্য চাওয়ার জন্য পরিবহণ রীতিমতো চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে । এর ফলে পারিপার্শ্বিক অন্যান্য বিষয়ে পদক্ষেপ করাও বাধার মুখে পড়েছে । এই সব কিছুর মধ্যেই বড় হয়ে উঠেছে বেশ কিছু আবেগজনিত চ্যালেঞ্জ , যেমন কিভাবে ভয়-অনিশ্চয়তার সমস্যা করা যায়, কিভাবে সম্পদ নিয়ন্ত্রণে, অর্থ ছাড়াই বহিরাগত চাপ নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং এত কিছুর পরও চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া যায় ।

আরও পড়ুন : অন্যতম জটিল রোগের সরল ব্যাখ্যা : ক্যানসার

ভাইরাস সংক্রমণের ভয় লকডাউনের শুরুতে অত্যন্ত বেশি ছিল । কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে পরিবর্তন এবং ক্যানসার রোগীদের জন্য চিকিৎসা শুরু করায় ছাড় দিয়ে, টেলিফোনে কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করে, এই সমস্ত চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা অত্যন্ত দক্ষ হাতে করা হয়েছে । বর্তমানে টেলিফোনে কাউন্সেলিং তথা টেলি-কাউন্সেলিংয়ের ধারণা সাধারণ মানুষের মধ্যেও পৌঁছচ্ছে । যদিও সাহায্য পেতে মানুষকে প্রযুক্তি-সচেতন হতে হচ্ছে, তবুও এ কথা সত্যি যে ক্যানসারের রোগীদের মানসিক স্বাস্থে্যরও খেয়াল রাখার বিষয়টি এখনও গোড়ার স্তরেই রয়েছে ।

দেখা গিয়েছে, রোগের নির্দিষ্ট কারণ দেখিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ চেয়ে বেশি ফোন এসেছে কিন্তু মানসিক স্বাস্থে্যর খেয়াল রাখার জন্য জানতে চেয়ে ফোন তেমন আসেনি । মানুষ যাতে আরও বেশি প্রযুক্তির ব্যবহার করতে পারে, তার জন্য স্ক্রিনিং ক্যাম্পগুলিতে আরও বেশি সচেতনতার প্রচার করতে হবে, কাউন্সেলিংয়ে আরও বেশি সংখ্যায় প্রশিক্ষণ দিতে হবে এবং মানসিক স্বাস্থে্যর জন্য একে বাধ্যতামূলক করে তুলতে হবে । কাজেই এ কথা বলাই যায় যে, লকডাউন কাউন্সেলিং প্রক্রিয়াকে চেনার দৃষ্টিভঙ্গিকেই নতুন রূপ প্রদান করেছে এবং মানুষের কাছে পৌঁছনোর জন্য একে আদর্শ মাধ্যম রূপে তুলে ধরার রাস্তা দেখিয়েছে ।

প্রশ্নের জন্য যোগাযোগ করুন : davekajal126@gmail.com

প্যানডেমিক মানবজীবনকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে । এই ভাইরাসের অভিনবত্ব এবং এর সংক্রমণের বিস্তার প্রত্যেকের মনে বিশেষ করে, সেই সমস্ত ক্যানসার রোগীদের মনে ভয়ের উদ্রেক করেছে, যারা বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ক্যানসারের চিকিৎসা করাচ্ছেন ।

ETV Bharat সুখীভব এই বিষয়ে মিস কাজল দাভের সঙ্গে কথা বলেছে । (কাজল মুম্বইয়ের কনসালটিং সাইকোলজিস্ট এবং প্রাক্তন ক্যানসার কাউন্সিলর)

বহু রোগীর মনেই ভয় তৈরি হয়েছিল যে, যেহেতু তাদের ইমিউনিটি এমনিতেই কম, তাই তাদের কোভিড সংক্রমণের আশঙ্কা বেশি । এই সমস্ত ভয় এবং অনিশ্চয়তার মধ্যেই অনেকে চিকিৎসকের কাছে পরীক্ষা করাতে না গিয়ে নিজ নিজ গ্রামে ফিরে গিয়েছেন । ভাইরাস এবং চিকিৎসা শেষ না হওয়ার ভয় মিলেমিশে বাড়তে বাড়তে, ক্যানসার আক্রান্ত এবং তার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বিশাল আতঙ্কের জন্ম দিয়েছে ।

মানসিক স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা যেমন উদ্বেগ, অবসাদ এবং গার্হ্যস্থ হিংসার ঘটনার প্রেক্ষিতে অনেকগুলি হেল্পলাইন শুরু করা হয়েছিল । ক্যানসার আক্রান্ত এবং তার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে চিকিৎসা না পাওয়ার ভয়, নিয়মিত চেকআপ করানোর অনীহা এবং কাছের কারও মৃত্যুর জেরে কেয়ার-গিভারের কাউন্সেলিংয়ে ক্ষোভ প্রভৃতি থেকে মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে ।

আরও পড়ুন : ব্রেস্ট ক্যানসার নির্ণয়ে এআই ব্যবহার খতিয়ে দেখছে গুগল

ক্যানসার রোগী ও তার পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতার জন্য, হেল্পলাইন সেন্টার তৈরি কর হয়েছে যাতে তারা ফোনে নিরাময়ের পরামর্শ পেতে পারে । পাশাপাশি চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার জন্য, স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখা, প্যানডেমিক ও কেমোথেরাপি পর্বের পরবর্তী সময়ে কাউন্সেলিংও যেন অবিরত চলতে থাকে, সে দিকেও নজর দেওয়া হয় । লকডাউনের ফলে নতুন রোগীদের শারীরিক পরিস্থিতি সংক্রান্ত আরও বেশি বিশ্লেষণের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছিল । কিন্তু ডাক্তার ও কাউন্সিলররা রোগীদের নতুন চিকিৎসা কীভাবে মিলবে, তা বুঝতে সাহায্য করেছেন ।

কোভিডকালে টেলি-কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে রোগী এবং পরিবারদের সহায়তা প্রদান করা হয়েছিল যাতে তারা বাস্তব এবং অবাস্তব ভীতির মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করতে পারে । প্রতিটি হাসপাতাল এবং এনজিও-র আওতায় হেল্পলাইন সেন্টার গড়ে তুলতে কিছুটা হলেও সময় লেগেছে । যারা যোগাযোগ করতে পারেননি বা এই টেলি-কনসাল্ট বিষয়টা যাদের কাছে নতুন, তাদের সাহায্য করা হয়েছিল স্থানীয় সংবাদপত্রের মাধ্যমে । তাছাড়াও এনজিও গুলিও নথিবদ্ধ রোগীদের ফোন করে, তাদের চিকিৎসাজনিত উদ্বেগ প্রশমনে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন । যদিও আরোগ্য সংক্রান্ত টেলি- কাউন্সেলিং শিক্ষা আর কোভিডজনিত উপসর্গ নিয়ন্ত্রণে পরামর্শের বিষয়ে নতুন করে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছিল ।

চিকিৎসায় ব্যাঘাতের জেরে ক্যানসার রোগীদের মনে ওপিডি পরিষেবার পুনরায় শুরু হওয়া নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে । পাশাপাশি ওষুধের জন্য অর্থের সংস্থান করার উপর প্রভাব পড়েছে এবং এনজিও গুলির থেকে সাহায্য চাওয়ার জন্য পরিবহণ রীতিমতো চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে । এর ফলে পারিপার্শ্বিক অন্যান্য বিষয়ে পদক্ষেপ করাও বাধার মুখে পড়েছে । এই সব কিছুর মধ্যেই বড় হয়ে উঠেছে বেশ কিছু আবেগজনিত চ্যালেঞ্জ , যেমন কিভাবে ভয়-অনিশ্চয়তার সমস্যা করা যায়, কিভাবে সম্পদ নিয়ন্ত্রণে, অর্থ ছাড়াই বহিরাগত চাপ নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং এত কিছুর পরও চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া যায় ।

আরও পড়ুন : অন্যতম জটিল রোগের সরল ব্যাখ্যা : ক্যানসার

ভাইরাস সংক্রমণের ভয় লকডাউনের শুরুতে অত্যন্ত বেশি ছিল । কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে পরিবর্তন এবং ক্যানসার রোগীদের জন্য চিকিৎসা শুরু করায় ছাড় দিয়ে, টেলিফোনে কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করে, এই সমস্ত চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা অত্যন্ত দক্ষ হাতে করা হয়েছে । বর্তমানে টেলিফোনে কাউন্সেলিং তথা টেলি-কাউন্সেলিংয়ের ধারণা সাধারণ মানুষের মধ্যেও পৌঁছচ্ছে । যদিও সাহায্য পেতে মানুষকে প্রযুক্তি-সচেতন হতে হচ্ছে, তবুও এ কথা সত্যি যে ক্যানসারের রোগীদের মানসিক স্বাস্থে্যরও খেয়াল রাখার বিষয়টি এখনও গোড়ার স্তরেই রয়েছে ।

দেখা গিয়েছে, রোগের নির্দিষ্ট কারণ দেখিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ চেয়ে বেশি ফোন এসেছে কিন্তু মানসিক স্বাস্থে্যর খেয়াল রাখার জন্য জানতে চেয়ে ফোন তেমন আসেনি । মানুষ যাতে আরও বেশি প্রযুক্তির ব্যবহার করতে পারে, তার জন্য স্ক্রিনিং ক্যাম্পগুলিতে আরও বেশি সচেতনতার প্রচার করতে হবে, কাউন্সেলিংয়ে আরও বেশি সংখ্যায় প্রশিক্ষণ দিতে হবে এবং মানসিক স্বাস্থে্যর জন্য একে বাধ্যতামূলক করে তুলতে হবে । কাজেই এ কথা বলাই যায় যে, লকডাউন কাউন্সেলিং প্রক্রিয়াকে চেনার দৃষ্টিভঙ্গিকেই নতুন রূপ প্রদান করেছে এবং মানুষের কাছে পৌঁছনোর জন্য একে আদর্শ মাধ্যম রূপে তুলে ধরার রাস্তা দেখিয়েছে ।

প্রশ্নের জন্য যোগাযোগ করুন : davekajal126@gmail.com

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.