হায়দরাবাদ: অস্টিয়োমাইলাইটিস (Osteomyelitis) হল আদতে হাড়ের সংক্রমণ ৷ যা অত্যন্ত খারাপ একটি অসুখ ৷ তাই, এই রোগের উপসর্গ এবং দ্রুত চিকিৎসা সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনা (Symptoms and Treatment) সম্পর্কে জেনে রাখাটা অত্যন্ত জরুরি ৷ তাতে অন্তত আক্রান্ত ব্যক্তির যন্ত্রণা কিছুটা হলেও লাঘব করা যায় ৷ এই অসুখে আক্রান্ত হলে রোগী পঙ্গু পর্যন্ত হয়ে যেতে পারেন ৷ চিরকালের মতো হারাতে পারেন হাঁটা-চলা করার ক্ষমতা ৷ ওয়াকিবহাল মহল বলছে, হাড়ের সংক্রমণ সংক্রান্ত যেকোনও রোগই খুব গুরুতর এবং সেগুলির চিকিৎসাও বেশ জটিল ৷
হাড়ের অসুখের বিশেষজ্ঞ ডা. হেম জোশি বিষয়টি আরও বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্য়া করেছেন ৷ উত্তরাখণ্ডের দেহরাদুনের বাসিন্দা এই চিকিৎসক জানিয়েছেন, শরীরের অন্য়ান্য যেকোনও অংশ যেমন বিভিন্ন কারণে এবং বিভিন্ন সময় ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা ফাঙ্গাস দ্বারা আক্রান্ত হয়, ঠিক সেভাবেই হাড়েও সংক্রমণ ঘটতে পারে ৷ সেক্ষেত্রের শরীরের অন্য়ান্য অংশের মতোই হাড়েও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে ৷ তাতে সমস্যা এবং জটিলতা বাড়ে ৷ যে ধরনের সংক্রমণে নিউমোনিয়া বা ডায়ারিয়ার মতো অসুখ হয়, সেই একই ভাইরাসের দ্বারা শরীরের হাড়ও আক্রান্ত হতে পারে ৷
আরও পড়ুন: রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের দুর্ভোগ কমাতে ওজন ঝরানোর বিকল্প নেই
অস্টিয়োমাইলাইটিস মূলত দুই ধরনের হয় ৷ একটি হল, ব্যাকটেরিয়াল অস্টিয়োমাইলাইটিস (Bacterial Osteomyelitis) এবং দ্বিতীয়টি হল ফাঙ্গাল অস্টিয়োমাইলাইটিস (Fungal Osteomyelitis) ৷ রোগের কারণ অনুসারে এই শ্রেণি বিভাজন করেন চিকিৎসকরা ৷ এর মধ্যে ব্যাকটেরিয়াল অস্টিয়োমাইলাইটিস মূলত ব্য়াকটেরিয়ার আক্রমণে হয় ৷ প্রাথমিকভাবে শরীরের অন্য কোনও অংশে এই রোগ হয় ৷ তারপর রক্তের মাধ্যমে তা ছড়িয়ে পড়ে হাড়ে ৷
অন্যদিকে, ফাঙ্গাল অস্টিয়োমাইলাইটিস ঘটে সাধারণত কোনও আঘাত থেকে ৷ যেমন দুর্ঘটনার জেরে শরীরের কোনও অংশে মৃদু বা গুরুতর চোট লাগলে, তার থেকে এই অসুখের সূত্রপাত হতে পারে ৷ এক্ষেত্রে সরাসরি হাড়ে বা শরীরের অন্য যেকোনও অংশে আঘাত লাগতে পারে ৷ তারপর সেই ক্ষত এলাকায় ফাঙ্গাসের আক্রমণ হয় ৷ এবং তা থেকেই অসুখ সৃষ্টি হয় ৷ সময় মতো চিকিৎসা না করালে সেই অসুখ হাড়ে ছড়িয়ে পড়ে ৷ এর ফলে শুধুমাত্র হাড় নয়, সেইসঙ্গে মাংসপেশী ও চামড়াও ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৷ অস্টিয়োমাইলাইটিসের জেরে পরবর্তীকালে হাড়ের যক্ষা রোগও হতে পারে ৷ অস্টিয়োমাইলাইটিসের ধরন যাই হোক না কেন, এর দ্রুত চিকিৎসা দরকার ৷ তা না হলে বিপদ বেড়ে যায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় ৷