হায়দরাবাদ : চরক সংহিতায় যেমন উল্লেখ করা হয়েছে, খাঁটি দেশি ঘি স্মৃতিশক্তি এবং শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি শরীরে বাত, পিত্ত, কফ এবং অন্যান্য টক্সিনের প্রভাব হ্রাস করে । তাই আয়ুর্বেদে বিশুদ্ধ ঘিকে ওষুধ হিসেবে বিবেচনা করা হয় (Ghee is Good For Health) ৷ বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসাতেও এটি ব্যবহার করা হয় ।
ঘি মস্তিষ্কের টনিক নামেও পরিচিত ৷ কারণ এর নিয়মিত ব্যবহার স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর পাশাপাশি স্নায়ুতন্ত্র সম্পর্কিত সমস্যার সমাধানে সহায়তা করে । ঘি দিয়ে মাথা মালিশ করলে তা মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন উদ্বেগ, উত্তেজনা, ক্রোধ এবং অস্থিরতা থেকেও মুক্তি দেয় । কিছু ক্ষেত্রে আঘাত এবং পাইলসের মত সমস্যার চিকিৎসার জন্যও ঘি ব্যবহৃত হয়।
পুষ্টিবিদরা কী বলেন:
ইন্দোরের ডায়েটিশিয়ান এবং পুষ্টিবিদ ডাঃ সঙ্গীতা মালু বলেন, "পরিমিত পরিমাণে নিয়মিত বিশুদ্ধ দেশি ঘি খাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী । 2-3 চা চামচ ঘি শরীরের জন্য অপরিহার্য ৷ কিন্তু অতিরিক্ত মাত্রায় ঘি খেলে শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে ৷ এছাড়াও, আগে থেকে থাকা রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে অতিরিক্ত মাত্রায় ঘি খাওয়ার ফলে শরীরের সমস্যা বাড়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে ৷"
দেশি ঘি-তে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, মিনারেল, পটাশিয়াম, ডেয়ারি প্রোটিন, ভিটামিন এ, কে, ই, ডি, ওমেগা থ্রি এবং ওমেগা ৯ ফ্যাটি অ্যাসিডের মতো উপাদান ৷ এতে অ্যান্টি অক্সিডেটিভ এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যও রয়েছে । পুষ্টির পাশাপাশি শরীরকে অন্যান্য সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতেও সহায়তা করে দেশি ঘি ৷
ঘিয়ের অন্যান্য কিছু উপকারিতাও রয়েছে:
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে ঘি ৷
- হজমশক্তি বাড়ানোর পাশাপাশি অন্ত্রকে ঠিক রাখতে সাহায্য করে ঘি ৷
- শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় ৷
- স্থূলতা প্রতিরোধের পাশাপাশি শরীরের চর্বি কমাতে সাহায্য করে ঘি ৷
- হাড়ের জয়েন্টগুলিকে তৈলাক্ত করতে সহায়তা করে এবং হাড়ের ক্যালসিয়াম শোষণ ক্ষমতা বাড়ায় ৷
- ত্বক এবং চুলের স্বাস্থ্যকেও সঠিকভাবে রাখতে সহায়তা করে দেশি ঘি ৷
কী বলছেন গবেষকরা :
ঘিয়ের উপকারিতা নিয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ডেয়ারি রিসার্চ পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে বিশুদ্ধ ঘি শরীরে এনজাইম তৈরি করে যা ক্যান্সারের সংক্রমণ রোধ করে ভাইরাস নির্মূল করতে সহায়তা করে । ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশনে (এনসিবিআই) প্রকাশিত আরেকটি গবেষণা অনুসারে, ঘিয়ের মধ্য়ে ক্যান্সারের প্রভাব হ্রাস করার সম্ভাবনা রয়েছে । ঘিতে পাওয়া লিনোলিক অ্যাসিড কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধেও সাহায্য করে।
আরও পডু়ন : তীব্র দাবদাহে হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে মনে রাখুন কিছু সহজ টিপস
ঘিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করার পাশাপাশি বিপাকীয় শক্তির উন্নতি, হজমে সহায়তা, কোষ্ঠকাঠিন্য, বমি বমি ভাব এবং বমি বমি ভাব-সহ সমস্যা এবং হাড়কে শক্তিশালী করতে সহায়তা করে । ঘিয়ের মধ্যে বেশকিছু চর্বিযুক্ত ভিটামিন রয়েছে যা থাইরয়েড গ্রন্থি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে ৷ এটি গর্ভাবস্থায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর ঔষধি গুণগুলি গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে মা এবং অনাগত শিশু উভয়কেই উপকৃত করে ।