হায়দরাবাদ, 3 জুলাই: আমরা সকলেই জানি মহর্ষি ব্যাসদেব ছিলেন বেদের প্রথম প্রচারক ও মহাভারতের রচয়িতা ৷ তিনিই বেদকে চারভাগে ভাগ করে সেগুলোর নাম দেন ঋক, সাম, যজু ও অথর্ব ৷ এই কারণেই তিনি বেদব্যাস নামেও পরিচিত ৷ মানবতার প্রথম গুরু হিসেবে তাঁকেই মনে করা হয় ৷ কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, তিনিই সহজ ভাষায় বেদের জ্ঞান মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন ৷ তাই আষাঢ় পূর্ণিমার দিনে তাঁর জন্মবার্ষিকী গুরু পূর্ণিমা হিসেবেও পালিত হয় ৷ এই দিনে মহর্ষি পরাশর ও সত্যবতীর পুত্র হিসেবে জন্মগ্রহণ করেন ব্যাসদেব ৷
হিন্দু ঐতিহ্যে গুরু পূর্ণিমার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে ৷ এই দিনে জ্ঞানদানকারী গুরুদের পূজা ও সম্মান জানানোর প্রথা রয়েছে ৷ গুরু পূর্ণিমার উদযাপন মানুষের জীবনে গুরুর গুরুত্ব প্রতিফলিত করে ৷ একই সঙ্গে গুরুর নির্দেশ মেনে সঠিক পথে চলতে অনুপ্রাণিত করে ৷ তাই স্বাভাবিকভাবেই আমাদের হিন্দুশাস্ত্রে গুরুকে সর্বোচ্চ স্থান দেওয়া হয়েছে ৷ গুরুই আমাদের সত্য ও মুক্তির পথ দেখান ৷
সংস্কৃত শ্লোকে গুরুর মহিমা বর্ণিত হয়েছে ৷ সেখানে লেখা আছে:
গুরু ব্রহ্মা, গুরু বিষ্ণু, গুরু দেবো মহেশ্বরঃ
গুরু সাক্ষাত, পরম ব্রহ্মা, তস্মৈ শ্রী গুরুবে নমঃ ৷
এর অর্থ হল, গুরু হলেন ব্রহ্মা, গুরু হলেন ভগবান বিষ্ণু এবং গুরু হলেন স্বয়ং শিব ৷ গুরু পরম জ্ঞানের সমান ৷ তাই গুরুর কাছে সর্বদা প্রার্থনা করা উচিত ৷
গুরু পূর্ণিমার দিনে গৌতম বুদ্ধ প্রথম ধর্মোপদেশ দিয়েছিলেন ৷ বৌদ্ধধর্মেও গুরু পূর্ণিমার গুরুত্ব রয়েছে ৷ আষাঢ়ের পূর্ণিমা তিথিতে ভগবান বুদ্ধ সারনাথে তাঁর শিষ্যদের প্রথম উপদেশ দিয়েছিলেন ৷ বুদ্ধগয়ায় তাঁর জ্ঞানলাভের পর যখন তিনি গুরু পূর্ণিমার দিন প্রথমবার কাশীতে আসেন সেই সময় এই দিনের গুরুত্ব ব্যাখা করেন এবং বৌদ্ধ ধর্মোপদেশ দিয়েছিলেন ৷ তাই গুরু পূর্ণিমার দিনটি বৌদ্ধধর্মের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয় ৷
আরও পড়ুন : গুরু পূর্ণিমায় কোন রাশির ভাগ্যোদয়, জানুন রাশিফলে