আপনার বয়স যখন তিরিশ, তখন শরীর ব্যাপক পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যায় । আপনি এমন সব ঝুঁকির মুখে পড়েন, যা নিতে কুড়ি থেকে তিরিশ বছর বয়সের মধ্যে আপনাকে ভাবতে হয়নি । স্বাস্থ্যের দিক থেকে দেখলে, মহিলাদের মধ্যে হঠাৎ শরীরে ব্যাথা, মেটাবলিজমের হার কমে যাওয়া, কিডনি স্টোনের ঝুঁকি বৃদ্ধি, ইউটিআই-এর মতো একগুচ্ছ সমস্যা আসতে পারে । সৌভাগ্যবশত, তিরিশের কোঠায় নিজের যত্ন নেওয়ার জন্য কয়েকটি সাধারণ পদ্ধতি রয়েছে, যা আপনি নিজেই করতে পারেন ।
১. খাওয়া-দাওয়ার দিকে নজর দিন
তিরিশ হল শরীরের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নিজের জীবনচর্যারও কিছু পরিবর্তন করে নেওয়ার সময়। কম বয়সে আপনার অনেক বেশি স্বাধীনতা থাকে, কারণ তখন আপনার শরীর সবথেকে ভালভাবে কাজ করে। এই প্রক্রিয়াগুলো তিরিশের কোঠায় পৌঁছে ধীরগতির হয়ে যায়, এবং আপনারও তা করা উচিত। প্রক্রিয়াজাত খাবার, তেল, মশলা ও মিষ্টি যতটা সম্ভব কমিয়ে দিন। খাবারে স্যালাড, ফল, পাতা প্রধান সব্জি, ফাইবার সমৃদ্ধ খাদ্য যোগ করুন, কারণ এগুলো কলেস্টেরলের ঝুঁকি, হৃদযন্ত্রের সমস্যা, হাইপারটেনশন ইত্যাদি কমাবে। আর মায়ের কথা শুনে নির্দিষ্ট সময়ে খেতে ভুলবেন না।
2.ওয়ার্ক আউট শুরু করুন
আপনি নিশ্চই এতদিনে লক্ষ বার কথাটা শুনেছেন, আর এটাই সময় তার দিকে মনোযোগ দেওয়ার। আপনার ফিটনেসের জন্য একটা নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ করুন। হাঁটা, আস্তে জগিং, সিট-আপের মতো হালকা ব্যায়াম দিয়ে শুরু করুন, আর তারপর আরও এগিয়ে যান। একজন পেশাদারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখলে ভাল, কারণ তাঁরা সঠিক পদ্ধতিটা দেখিয়ে দিতে পারেন। বহু গবেষণায় দেখা গেছে যে নিয়মিত ব্যায়াম আপনার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও শরীরের সুস্থ কাজকর্ম নিশ্চিত করতে পারে।
3.স্ট্রেস থেকে দূরে থাকুন
এটা একটুখানি স্বার্থপর হয়ে নিজের শান্তির ব্যাপারে ভাবার সময়, আর যদি তার জন্য কিছু বিষাক্ত মানুষকে জীবন থেকে ছেঁটে ফেলতে হয়, তবে তাই হোক। আপনাকে উত্তেজিত করে বা নিরাপত্তাহীনতা দেয়, তেমন পরিস্থিতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার কঠোর সিদ্ধান্ত নিন। নিজেকে ভালবাসা অভ্যেস করুন, নিজের সীমাকে বেশিদূর ঠেলবেন না। প্রিয়জনদের চাহিদাই হোক বা অফিসের কাজ, একটা সীমা অতিক্রম করলে না বলতে শিখুন। স্ট্রেস ও টেনশন হরমোনের ভারসাম্যহীনতা বা হৃদযন্ত্রের সমস্যা তৈরি করতে পারে।
4.একটা রুটিন তৈরি করুন
একেবারে রুটিন বেঁধে দিন কাটালে অপ্রত্যাশিতভাবে ভাল ফল মিলতে পারে, বিশেষ করে যখন আফনি সুস্থ ও চনমনে থাকার চেষ্টা করছেন। কিন্তু এর অর্থ নিজের অস্বস্তি তৈরি নয়, আস্তে আস্তে করুন, প্রয়োজনে সময় নিন। বড় পরিবর্তন রাতারাতি হয় না। দিনের বড় কাজগুলোর জন্য একটা সময় নির্দিষ্ট করুন, আর দেখুন প্রায় সারাদিন ধরে আপনি কতটা উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে থাকেন। রুটিন বজায় রাখার অর্থ আপনি স্বাস্থ্য ও ফিটনেসের পক্ষে দরকারি কাজগুলো মিস করবেন না। এটা ভবিষ্যতে আশীর্বাদ বলেই প্রমাণিত হবে।
তাই ভাবনাহীন কলেজ পড়ুয়া থেকে পরিবার ও কাজ সামলানো – তিরিশের কোথায় মেয়েদের জীবনে বড় পরিবর্তন আসে। সবথেকে ভাল হয়, আপনি যদি শারীরিক ও মানসিক ভাবে সুস্থ থাকার রাস্তাগুলো অনুসরণের পাশাপাশি আপনার মনের কথাও শোনেন।