হায়দরাবাদ: রাতে খেয়ে শুয়ে পড়েছেন ৷ হঠাৎ আপনার মনে হচ্ছে, বাঁ-দিকের বুকের কাছে চিনচিনে ব্যথা হচ্ছে ৷ সেই ব্যথা থাকছে অনেকক্ষণ ৷ আপনার মনে হচ্ছে, শ্বাস নিতে পারছেন না ৷ কষ্ট হচ্ছে বুকের কাছে ৷ এমন লক্ষণ দেখলে স্বাভাবিকভাবেই বাড়ির লোকজন ভয় পেয়ে যান ৷ হার্ট-অ্যাটাক কি না, এই ভেবে ছোটেন ইমারজেন্সিতে ৷ কিন্তু সেখানে চিকিৎসক জানালেন ভয়ের কিছু নয় ৷ গ্যাস থেকে ব্যথা ৷ এই বিষয়টা অনেকের জীবনে একটা বড় সমস্যা ৷ বুকে গ্যাস থেকে ব্যথা, না হার্ট-অ্যাটাকের লক্ষণ পার্থক্য করা অনেক সময় সম্ভবপর হয়ে ওঠে না ৷ চিকিৎসকরা বলছেন, গ্যাসের ব্যথা ও হার্ট-অ্যাটাকের ব্যথার সূক্ষ্ম পার্থক্য রয়েছে ৷
গ্যাসের ব্যথা কীভাবে বুঝবেন
হাইড্রোজেন, মিথেন, নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, হাইড্রোজেন সালফাইড এবং কার্বন ডাই-অক্সাইডের মতো ডিওডোরাইজড গ্যাসের সমন্বয়ে পেটের গ্যাসের কারণে বুকে গ্যাসের ব্যথার লক্ষণ দেখা দেয়। প্রতিদিন পরিষ্কার প্রাতঃক্রিয়া না-হলে, রাতে তেল-ঝাল-মশলা জাতীয় খাবার খেলে, খাবার ঠিক মতো হজম না-হলে, অসময়ে ভুল খাবার গ্রহণ করলে ইত্যাদি নানা কারণে বুকে গ্যাসের ব্যথার লক্ষণগুলি অনুভূত হয় ৷ যা প্রায়ই হার্ট-অ্যাটাকের মতো মনে হয় ৷ তবে সাধারণ পর্যায়ে এই সমস্যার সমাধান বাড়িতেই সম্ভব। আপনি যদি বুকে গ্যাস ব্যথার নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি অতিরিক্ত পর্যায়ে অনুভব করেন তবে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন ৷
- বেলচিং (মুখ দিয়ে গ্যাস বের হওয়া)
- পেট ফাঁপা (বাত কর্ম হওয়া)
- পেটের ব্যথা (ক্র্যাম্পস যেমন হয়)
- বমি হওয়া
- ভিতর থেকে অতিরিক্ত একটা চাপ অনুভব করা (ডিসটেনশন)
- বদহজমের ঢেঁকুর ওঠা
- মুখের ভিতর টকটকভাব
- বুকে একটা জ্বলুনিভাব
- শুলে বুকে বেশি ব্যথা অনুভব করা
- ভিতর থেকে অস্থিরভাব হওয়া
মূলত, এই লক্ষণগুলি গ্যাসের ব্যথার লক্ষণ হিসাবে ধরতে পারেন ৷
হার্ট-অ্যাটাকের ব্যথা কীভাবে বুঝবেন
হার্ট-অ্যাটাক অনেক সময় অতীতে সেই ব্যক্তির মেডিক্যাল রিপোর্টের উপর নির্ভর করে ৷ অর্থাৎ সেই ব্যক্তির করোনারি আর্টারিতে ব্লকেজ আছে কি না, বা অনান্য শারীরিক সমস্যা রয়েছে কি না, তা অবশ্য জেনে রাখতে হয় ৷ তবে যেহেতু গ্যাসের ব্যথার মতোই হার্ট-অ্যাটাকের ব্যথা মনে হলেও কিছু পার্থক্য থাকে ৷ যেমন-
- বুকে ব্যথা (ভারীভাব অনুভব, চাপ মনে হওয়া, বুকের মধ্যে স্কুইজিং-এর মতো হওয়া ৷)
- বাম কাঁধ-সহ এক বা উভয় বাহুতে তীব্র ব্যথা অনুভব হওয়া
- হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া
- হার্ট রেট বেড়ে যাওয়া
- শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়া (স্বাভাবিক প্রশ্বাস-নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া)
- প্রচন্ড ক্লান্তিভাব আসা
- বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া
- শরীর ঠান্ডা হয়ে ঘাম হওয়া বা অতিরিক্ত ঘাম হওয়া
- এমন লক্ষণ যদি কারোর মধ্যে দেখেন তাহলে তড়িঘড়ি চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া উচিত ৷
আরও পড়ুন: হার্টের সমস্যায় ভুগছেন ? এই ফলগুলি খেলে পেতে পারেন উপকার
(প্রতিবেদনটি সাধারণ তথ্যের উপর নির্ভর করে লেখা ৷ বিশদে জানতে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন ৷)