হায়দরাবাদ: প্রতি বছর 11 এপ্রিল পালিত হয় বিশ্ব পারকিনসন্স দিবস ৷ মূলত ইউরোপীয় পারকিনসন্স ডিজিজ অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে এই রোগ নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে এই দিনটি পালন করা হয়(Awareness About Parkinsons) ৷ এটি এমন একটি রোগ যেখানে স্নায়ু কোষগুলি অন্যান্য কোষে যে নিউরোট্রান্সমিটার ডোপামিন সরবরাহ করে, তা সংখ্যায় হ্রাস পেতে শুরু করে ৷ ফলে কোষের মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে বাড়তে তা মস্তিস্কের বৃহত্তর অংশে ছড়িয়ে পড়ে ৷ এর ফলে মোটর এবং নন-মোটর ডিজঅর্ডার বাড়তে থাকে । পারকিনসন্স হল একটি সাধারণ প্রত্যক্ষ ব্যাধি, যা বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের জীবনের মানকে বিরূপভাবে প্রভাবিত করে । এর সঠিক কারণ এখনও অজানা, আর তাই রোগ প্রতিরোধের জন্য় যে উপায়গুলি রয়েছে তাও একটি রহস্যই থেকে যায় ।
তবে এই রোগ ব্য়ক্তি এবং তাঁর পরিবারিক জীবনকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করতে পারে ৷ যখন অল্পবয়সে পারকিনসন্স দেখা দেয়, তখন এর সঙ্গে জেনেটিক লিঙ্ক থাকার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তবে বয়স্কদের ক্ষেত্রে এর কারণ একেবারে অন্য় হতে পারে ৷ আবার রোগের অগ্রগতিও একেবারে অন্য়ধরনের হতে পারে ৷ তাই শুরুর দিকে এর লক্ষণগুলি সম্পর্কে সচেতন হওয়া একান্ত জরুরি ৷ প্রাথমিক পর্যায়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা এবং সহায়তা উপকারি হতে পারে ৷
অ্যাওয়ার গ্লেনিগেলস গ্লোবাল হাসপাতালের কনসালট্যান্ট নিউরো ফিজিশিয়ান সুরেশ রেড্ডি বলেন, " পারকিনসন্স রোগে নির্দিষ্ট ডায়েটের জন্য কোনও প্রেসক্রিপশন নেই ৷ তবে সামগ্রিক ভাল স্বাস্থ্য বজায় রাখতে এই রোগে আক্রান্ত বেশিরভাগ লোকেরই বিভিন্ন ধরণের খাওয়া উচিত ৷ শাকসবজি, ফল, দুধ, দুগ্ধজাত পণ্য আবশ্য়ক ৷ এছাড়া প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন মাংস, মটরশুটি, বাদাম, অলিভ অয়েল, মাছ এবং ডিম এদের উপকারি ফ্যাটের জন্য অবশ্যই রাখা উচিত । বিভিন্ন ধরনের খাবারগুলি আপনাকে প্রয়োজনীয় শক্তি, প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবার পেতে সাহায্য করবে । রোগের উন্নত পর্যায়ে, ওষুধের কার্যকারিতা উন্নত করার জন্য ওষুধের সময়সূচি অনুযায়ী প্রোটিন গ্রহণের সময় সামঞ্জস্য করতে হতে পারে ৷"
এসএলজি হাসপাতালের কনসালটেন্ট নিউরোলজিস্ট অভিনয় এম হুচ্চে বলেন, "ওষুধ তো রয়েছেই, তবে এছাড়াও অনেক পথ রয়েছে যা মেনে চললে পারকিনসন্স আক্রান্ত রোগীরা তাঁদের শারীরিক কার্যকরিতা বাড়ানো, জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন এবং স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সক্ষম হতে পারেন ৷ এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল নিয়মিত ব্যায়াম করা, হাইড্রেটেড থাকা এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম ৷ "
আরও পড়ুন : অবাঞ্ছিত গর্ভধারণ রুখতে পিল ছাড়াও রয়েছে অনেক উপায়, দেখে নিন একনজরে
সেঞ্চুরি হাসপাতালের কনসালটেন্ট নিউরোলজিস্ট এ. প্রীতম রেড্ডি জানান, আয় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অনেকেই মদ্যপানের মত নানা অভ্য়াস শুরু করেন ৷ যার জেরে রোগের সম্ভবনা আরও বেড়ে যায় ৷ কারণ এতে জীবনযাপনের মানের উপর বড় প্রভাব পড়ে ৷