পুরুষদের তুলনায় মহিলারা সাধারণত বেশিদিন বাঁচেন তবে তাঁদের শরীরে নানা রকম রোগের প্রাদুর্ভাবও দেখা দেখা দেয় ৷ জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় এই সমস্য়ার একটি মুশকিল আসান সামনে নিয়ে এসেছে ৷ এর থেকে মুক্তির উপায় হিসাবে চিকিৎসকদের পরামর্শ হল ইয়াম, কালে, পালং শাক, তরমুজ, গোলমরিচ, টমেটো, কমলা এবং গাজর জাতীয় ফলমূল বেশি খাওয়া ৷ কারণ এই ধরণের ফলগুলি হল পিগমেন্টেড ক্যারোটিনয়েড সমৃদ্ধ যা রোগের সমস্য়া কমায় ৷ আর রঙিন ফলের আরও একটি ভূমিকা আছে এটি আপনার কগনেটিভ এবং ভিসুয়াল ডিক্লাইন-এর সমস্য়াকে কম করে(Benefits of Eating Bright Coloured Fruits) ৷
ইউজিএ-এর ফ্র্যাঙ্কলিন কলেজ অফ আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস বিভাগের মনোবিজ্ঞান আচরণগত এবং মস্তিষ্ক বিজ্ঞান প্রোগ্রামের অধ্যাপক এবং গবেষণার সহ-লেখক বিলি আর হ্যামন্ড বলেন,"এই ধারণাটি হল এই যে পুরুষরা প্রায়ই অনেক রোগে আক্রান্ত হয় এবং তাঁদের মৃত্যুও হয় তাড়াতাড়ি ৷ কিন্তু মহিলাদের ক্ষেত্রে এই রোগগুলি আসে অনেক পরে ৷ তাই প্রথম পর্যায়ে তাঁরা রোগের থেকে অব্যহতি পান ঠিকই পরে রোগের জেরে শরীর মারাত্মক দুর্বল হয়ে পড়ে ৷"
তিনি আরও বলেন, "উদাহরণস্বরূপ বলা যায় বর্তমানে বিশ্বের সমস্ত ম্যাকুলার ডিজেনারেশন এবং ডিমেনশিয়া রোগের যত কেস রয়েছে তার দুই-তৃতীয়াংশই মহিলাদের মধ্যে দেখা যায় । এই অসুস্থতাগুলিতে মহিলারা বছরের পর বছর ধরে ভোগেন ৷ জীবনধারায় কিছু পরিবর্তনের মাধ্যমে কিন্তু এর প্রতিরোধ করা যেতে পারে।" তাঁর কথায়, "আপনি যদি সমস্ত অটোইমিউন অসুস্থতাকে এক জায়গায় সম্মিলিত করেন তবে দেখা যাবে রোগীদের 80 শতাংশ হল নারী । নারীদের ক্ষেত্রে সংবেদনশীলতার কারণে আরও প্রতিরোধমূলক যত্নের প্রয়োজন হয় ৷ যা সরাসরি জীববিজ্ঞানের সাথে সম্পর্কিত ৷"
মহিলারা যেভাবে তাঁদের দেহে ভিটামিন এবং খনিজ ধরে রাখেন তা এই সংবেদনশীলতার অন্যতম কারণ । হ্যামন্ডের মতে, পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের শরীরে প্রায়শই চর্বি বেশি থাকে । অনেক ভিটামিন এবং খনিজ শরীরের চর্বি দ্বারা শোষিত হয়, যা গর্ভবতী মহিলাদের একটি সহায়ক রিজার্ভ প্রদান করে । কিন্তু রেটিনা এবং মস্তিষ্কের জন্য খনিজ এবং ভিটামিনের কম থাকার ফলে ডিমেনশিয়া জাতীয় রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায় ৷
আরও পড়ুন: যৌনসঙ্গীর সংখ্যা কমান, মাঙ্কিপক্স রুখতে সমপ্রেমী পুরুষদের পরামর্শ হু-এর
আমাদের খাদ্যে পিগমেন্টেড ক্যারোটিনয়েড অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে । লুটেইন এবং জেক্সানথিন হল চোখ এবং মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট টিস্যুতে উপস্থিত দুটি স্বতন্ত্র ক্যারোটিনয়েড ৷ এর কাজ হল কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের অবক্ষয়কে সরাসরি প্রশমিত করা ৷ সাধারণত পুরুষ এবং মহিলারা প্রায় একই পরিমাণে এই ক্যারোটিনয়েডগুলি গ্রহণ করে ৷ তবে হ্যামন্ডের মতে মহিলাদের ক্ষেত্রে চাহিদা বেশি এবং যোগান কম হয়ে যায় ৷ ফলে নানা ধরণের সমস্য়া তৈরি হয় ৷ চিকিৎসকরা বলছেন খাবারের মাধ্যমে লুটেইন এবং জেক্সানথিন গ্রহণ করা বড়ি ব্যবহার করার থেকে অনেক ভাল উপায় ৷ ইয়াম, কালে, পালং শাক, তরমুজ, গোলমরিচ, টমেটো, কমলা এবং গাজর জাতীয় রঙিন ফলমূল খেলেই কমতে পারে ডিমেনশিয়া এবং অন্যান্য রোগের ঝুঁকি ৷