হায়দরাবাদ: গর্ভাবস্থা একজন মহিলার জীবনে এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়। মহিলা এবং তার সন্তানের জন্য এটি একটি বিশেষ সময়। এই সময়ের স্বাস্থ্যের বিশেষ যত্ন নেওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে সারা দেশে ডেঙ্গির প্রকোপ দ্রুতহারে বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে এই মারাত্মক রোগ থেকে বাঁচতে মানুষকে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। ডেঙ্গি একটি মারাত্মক রোগ, যা এডিস ইজিপ্টাই মশার কামড়ে ছড়ায় । সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা করা না-হলে তা মারাত্মকও হতে পারে । বিশেষ করে যদি গর্ভাবস্থায় এই সংক্রমণ ঘটে তাহলে সংক্রমণটি গর্ভস্থ শিশুর মধ্যেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। এমন পরিস্থিতিতে এই সময়ে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি মাথায় রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ ।
ডেঙ্গি থেকে বাঁচার উপায়: গর্ভাবস্থায় মহিলাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রায়শই দুর্বল হয়ে পড়ে ৷ যে কারণে তারা সহজেই সংক্রমণের শিকার হতে পারেন। এই পরিস্থিতিতে তাদের সুস্থ রাখতে সঠিক খাওয়ার পাশাপাশি তারা যাতে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় যাওয়া এড়িয়ে যায়, তা নিশ্চিত করাও গুরুত্বপূর্ণ ।
ডেঙ্গি সম্পর্কে এই বিষয়গুলি মাথায় রাখুন: যদি একজন গর্ভবতী মহিলার ডেঙ্গি হয় তাহলে সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং হাইড্রেশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ । মা ও শিশুকে সুস্থ রাখতে অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি ও তরল খাবার গ্রহণের দিকে খেয়াল রাখা জরুরি। ডেঙ্গি প্লেটলেটের মাত্রাও কমাতে পারে । এক্ষেত্রে রক্ত সঞ্চালনের প্রয়োজন হতে পারে । একই সময়ে যদি আমরা গর্ভবতী মহিলাদের ডেঙ্গির লক্ষণগুলির কথা বলি তবে এই সময়ে নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি দেখা যেতে পারে ৷
যেমন- মাত্রাতিরিক্ত জ্বর, পেট ব্যথা, বমি, মাথা ঘোরা ইত্যাদি ৷
ডেঙ্গির চিকিৎসা ও প্রতিরোধ: ডেঙ্গির ক্ষেত্রে সঠিক চিকিৎসার পাশাপাশি হাইড্রেশন, বিশ্রাম এবং সঠিক পুষ্টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ । জ্বর হলে ডাক্তাররা প্রায়ই প্যারাসিটামল এবং এনএসএআইডি দিয়ে থাকেন ৷ তবে গর্ভবতী মহিলাদের ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনও ওষুধ খাওয়া উচিত নয় । পরিবর্তে আপনি ঠান্ডা কাপড় দিয়ে স্পঞ্জিং বা চন্দন কাঠের পেস্ট ব্যবহার করার মতো প্রাকৃতিক উপায়ে জ্বর কমানোর চেষ্টা করতে পারেন ।
প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ সনাক্ত করা এবং সঠিক চিকিৎসা সেবার মাধ্যমে ডেঙ্গিতে মৃত্যুহার 1% এ কমিয়ে আনা যায় । এমন পরিস্থিতিতে গর্ভবতী মহিলারা যারা জন্ম দেওয়ার কিছুক্ষণ আগে বা পরে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হন তাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন কারণ তাদের ঝুঁকি বেশি ।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, মায়ের ডেঙ্গি হলে স্তন্যপান করানোর ফলে নবজাতকের জন্য কোনও ঝুঁকি তৈরি করে না । ডেঙ্গি ভাইরাস স্তন্যপান করানোর মাধ্যমে ছড়ায় না । বরং স্তন্যপান অনেক প্রয়োজনীয় পুষ্টি এবং অ্যান্টিবডি সরবরাহ করে যা শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে ৷ ডেঙ্গি-সহ গুরুতর সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। তবে মা গুরুতর অসুস্থ হলে শিশুকে বিকল্প হিসেবে ফরমুলা দুধ দেওয়া যেতে পারে ।
আরও পড়ুন: ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি হার্টের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে, জেনে নিন বিশদে
(পরামর্শগুলি শুধুমাত্র সাধারণ তথ্যের ভিত্তিতে ৷ আপনার কোনও প্রশ্ন থাকলে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন)