হায়দরাবাদ: প্রত্যেক গৃহস্থালিরত মশলার বাক্সে আবশ্যিক একটি মশলার অন্যতম জিরে ৷ জিরের অনেক উপকারি গুণ রয়েছে। এটি কেবল স্বাদই নয়, খাবারগুলিতেও সুন্দর সুবাস দেয়। এছাড়াও এর অনেক ঔষধি গুণ রয়েছে । বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জিরের সীমিত ব্যবহার ছাড়াও সঠিক পদ্ধতিতে ব্যবহার করলে এর অনেক উপকারিতা রয়েছে । চলুন দেখা যাক এর উপকারি দিক গুলি কী কী (Cumin)?
রেসিপিতে জিরের ভূমিকা:
আমরা রান্না করার সময় জিরের বীজ পছন্দ করি । জিরে গুঁড়ো শুধু স্বাদেই নয়, খাবারকে সুস্বাদু করতেও ব্যবহার করা হয় । জিরে ও জিরের গুঁড়ো বিরিয়ানি, পেস্ট্রি এবং বিভিন্ন ধরনের তরকারিতে ব্যবহার করা হয় । খাবারের স্বাদের পাশাপাশি সুগন্ধও দেয় । গবেষণায় দেখা গিয়েছে, রান্নায় জিরের গুঁড়ো ব্যবহার করলে কিছু ধরনের ক্যানসার কমানো যায় ।
স্বাস্থ্য উপকারে জিরের ভূমিকা:
জিরে শুধু রান্নাই নয় স্বাস্থ্য বজায় রাখতেও মুখ্য ভূমিকা পালন করে । জিরে আয়রন, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, পটাসিয়াম, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি সমৃদ্ধ । জিরে লিভারে পিত্তের উৎপাদন বাড়ায় । জিরে পেট ব্যাথা, ডায়রিয়া এবং মর্নিং সিকনেস থেকে রক্ষা করে । যারা মাসিকের সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য জিরে ভালো কাজ করে । এগুলি ছাড়াও জিরে অনেক ধরনের রোগ থেকে মুক্তি দেয় ।
1) রক্তস্বল্পতা কমাতে
রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় একটি প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান হল আয়রন । জিরেতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে । শরীরে আয়রনের অভাবজনিত রক্তস্বল্পতা কমাতে সাহায্য করে । শিশু ও মহিলাদের মধ্যে অ্যানিমিয়া বেশি দেখা দিলে খাবারে ঘন ঘন জিরে গ্রহণ করা ভালো ।
2) ডায়াবেটিস কমাতে
ডায়াবেটিস কমাতে জিরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । প্রতিদিনের খাবারে জিরে খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে । এটি গ্যাস্ট্রিক রোগ প্রতিরোধ করতে পারে ।
3) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে
জিরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে । জিরেতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট । জিরে শরীর থেকে অমেধ্য অপসারণ করে, প্রাক- ব়্যাডিকাল প্রতিরোধ করে এবং রোগ প্রতিরোধ করে । এইভাবে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জোগাতে জিরে বিশেষ ভূমিকা পালন করে । আপনি যদি প্রতিদিন জিরের সঙ্গে গরম জল পান করেন তবে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ করবে ।
4) ঠান্ডা কমাতে
এর অ্যান্টিসেপটিক বৈশিষ্ট্যের কারণে জিরে ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে যা সর্দি এবং ফ্লু সৃষ্টি করে । এক কাপ ফুটানো জলে জিরে, আদা ও মধু মিশিয়ে পান করলে ঠান্ডা থেকে উপশম হয় ।
5) ব্রণ কমাতে
জিরেতে রয়েছে ফাইবার, অ্যান্টিফাঙ্গাল, ল্যাক্সেটিভ, কার্মিনেটিভ প্রপার্টি । এগুলি আঁচিল দূর করতে সাহায্য করে ।
6) চুলের বৃদ্ধির জন্য
জিরা শুধু স্বাস্থ্যের জন্যই নয়, চুলের যত্নেও ভালো। মাথার ত্বকে সমান পরিমাণে জিরা তেল এবং অলিভ অয়েল লাগালে চুলের বৃদ্ধি বাড়বে। এইভাবে এটি চুলের বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করে এবং চুল পড়া কমায়। খাবারে নিয়মিত জিরা খেলে টাক পড়া এবং চুল পড়ার মতো সমস্যা কমে।
7) ত্বকের যত্নে
জিরে ত্বকের সুরক্ষায় সাহায্য করে । জিরেতে ভিটামিন ই বেশি থাকে । এটি অ্যান্টি-এজিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং ত্বকে বলিরেখা রোধ করে । তাছাড়া নিয়মিত জিরে খেলে ত্বক উজ্জ্বল হয় । জিরের তেল মুখে লাগালে ব্রণ, খোসপাঁচড়া এবং সোরিয়াসিসের মতো চর্মরোগ দ্রুত কমে যায় ।
8) হজমের জন্য জিরে
জিরের জল পান করলে বদহজম, বমি বমি ভাব, আলসার, গ্যাস এবং অ্যাসিডিটি উপশম হয় । পেটে কৃমি থাকলে মরে যাবে । জিরে পরিপাকতন্ত্র পরিষ্কার করে । কিডনির পাথরও দ্রবীভূত হয় ৷