COVID-19-এর জেরে লকডাউনের মাঝে আমরা একমাত্র বাড়িতে রাঁধা খাবারই খাচ্ছি । কিন্তু অনিয়ন্ত্রিত এবং ভুল সময়ে খাওয়াদাওয়া বদহজম, হাইপার অ্যাসিডিটি এবং গ্যাস্ট্রাইটিসের মতো সাধারণ পেটের সমস্যার জন্ম দিতে পারে । আয়ুর্বেদে MD, হায়দরাবাদের চিকিৎসক পদ্মাবতী কুণ্ডরাপু বলেন, “এই সমস্ত হজমের গোলমাল আমাদের শরীরের পাচক অগ্নির ঠিকভাবে কাজ না করার ফল। অগ্নি হচ্ছে আমাদের শরীরের সমস্ত পাচন ক্রিয়ার রূপক । পাচক অগ্নি দুর্বল হলে বদহজম হয়, আর হাইপারঅ্যাসিডিটি এবং গ্যাস্ট্রাইটিস হয় অতিরিক্ত বা অতিসক্রিয় পাচক অগ্নির কারণে।”
তিনি বলেন, “এই সব হজমের সমস্যার সাধারণ কারণ হল নিয়ম না মেনে খাওয়াদাওয়া।“ ডক্টর পদ্মাবতী এই কারণগুলিকে শারীরিক এবং মানসিক দিক থেকে নানা ভাগে ভাগ করেছেন।
শারীরিক কারণ
আগের খাবার হজম হওয়ার আগেই ফের খাওয়া
ভুল সময়ে খাওয়া
খিদের সময় না খাওয়া
খুব বেশি মশলাদার, নোনতা, তৈলাক্ত বা টক খাবার খাওয়া
রাতে অনেক দেরিতে খাওয়া
খাবার সময় খুব বেশি জলপান
প্রক্রিয়াজাত এবং নষ্ট হয়ে যাওয়া খাবার
অতিরিক্ত চা বা কফি খাওয়া
বিশ্রামের অভাব এবং রাতে পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া
খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘুমোনো
স্বাভাবিক প্রাকৃতিক প্রবৃত্তিকে চেপে রাখা
তামাক, ধূমপান আর মদ্যপান
মানসিক কারণ
জীবনযাত্রার স্ট্রেস
অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ, ঈর্ষা, রাগ, ভয়
অসন্তুষ্টি
ডক্টর পদ্মাবতী বলেন, “তাড়াহুড়ো, দুশ্চিন্তা আর মশলাদার খাবার হল এইসব রোগের তিনটি প্রধান কারণ।” তিনি কয়েকটি প্রতিকারের পরামর্শ দিয়েছেন যা ঘরেই সহজে মেনে চলা সম্ভব।
খাবার পর মৌরি বা ধনের বীজ চিবোনো
20 মিলিলিটার করে ধনে ভেজানো জল, দিনে দু’বার খাওয়া
জোয়ানের নির্যাস 20 মিলিলিটার করে দিনে দু'বার
জিরের নির্যাস 20 মিলিলিটার করে দিনে দু'বার
দারচিনি, আদা আর এলাচের নির্যাস 10 মিলিলিটার করে দিনে দু'বার
মধুর সঙ্গে ত্রিফলা ভেজানো জল
আধ চামচ মেথি এবং একচিমটি হিং দিয়ে রাতে দইয়ের ঘোল
কয়েকটি প্রয়োজনীয় আয়ুর্বেদিক ওষুধ
2 গ্রাম আমলকি দিনে দু'বার জলের সঙ্গে
2 গ্রাম যষ্টিমধু দিনে দুবার দুধের সঙ্গে
1 থেকে 2 গ্রাম শুকনো আদা দিনে দু'বার জলের সঙ্গে
বড় মরিচ আধ থেকে এক গ্রাম মধুর সঙ্গে দিনে দু'বার
দুধের সঙ্গে 2 গ্রাম শতভরি দিনে একবার
ডক্টর পদ্মাবতী বলেন, “কথায় আছে যে চিকিৎসার থেকে রোগ প্রতিরোধ করা বেশি ভাল । অসুখের কারণগুলোকে এড়িয়ে চলে স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা বেছে নেওয়া সবসময়ই ভাল।” সুতরাং এই ঘরোয়া চিকিৎসাগুলো যে কোনও সময়, যে কোনও জায়গায় অনুসরণ করা যেতে পারে এবং তা নিরাপদও।