SASS-CoV-2 নির্ণয় করতে কেমব্রিজ হাসপাতাল ব়্যাপিড পয়েন্ট অফ কেয়ার নিউক্লিক অ্যাসিড ও অ্যান্টিবডি টেস্টকে একসঙ্গে পরীক্ষামূলক ভাবে করা শুরু করেছে । কারণ, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা দেখিয়েছেন যে COVID -১৯ নির্ধারণের জন্য এই পদ্ধতিটি ভাইরাস সনাক্তকরণের সবচেয়ে বড় উপায় ।
পয়েন্ট অফ কেয়ার টেস্টিং – এর অর্থ হল কোনও রোগী হাসপাতালে পৌঁছলেই সঙ্গে সঙ্গে তাঁর পরীক্ষা করা । স্বাস্থ্য সুরক্ষায় থাকা কর্মীদের দ্রুত রোগীর রোগ নির্ণয় করতে হবে এবং যাঁরা পজ়িটিভ তাঁদের নির্দিষ্টি ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য এটা জরুরি । সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা যাচ্ছে যে কেমব্রিজের গবেষকরা SARS-CoV-2 এর PCR টেস্টের জন্য একটি SAMBA II তৈরি করেছেন । যার ফলে COVID -১৯ সন্দেহে ওয়ার্ডে রোগীদের রেখে দেওয়ার সময়কাল নাটকীয় ভাবে কমে গিয়েছে । বর্তমানে গবেষণাগারে পরীক্ষা ব্যবস্থার চেয়ে আরও দ্রুত রোগীদের চিকিৎসা হচ্ছে এবং তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে ।
PCR পরীক্ষায় ভাইরাস থেকে একটি সংক্ষিপ্ত পরিমাণ RNA বের করে নেওয়া হয় । তার পর কয়েক মিলিয়ন বার তার অনুলিপি করা হয় । যা ভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে হয় । ভাইরাস নাকের ভিতরে এবং গলার নিচের দিকে একটি সোয়াবের মাধ্যমে নেওয়া হয় । তবে একজন ব্যক্তির শরীরে COVID ১৯ এর লক্ষণ দেখা দিতে ১৪ দিন পর্যন্ত সময় লেগে যায় । সেই সময়ের মধ্যে ভাইরাস নাক, গলা এবং ফুসফুস সহ অন্যান্য কলা ও অঙ্গগুলির মধ্যে চলে যায় । ফলে তা সোয়াব টেস্টের মাধ্যমে সনাক্ত করা আরও শক্ত হয়ে ওঠে । ফলস্বরূপ, গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে সংক্রমণের পাঁচ দিন পর PCR টেস্টে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে অর্ধেকের ফলাফল ভুল আসতে পারে ।
অ্যান্টিবডি পরীক্ষা একটি বিকল্প উপায়, যার মাধ্যমে সংক্রমিত ব্যক্তিদের সনাক্ত করা যায় । কিন্তু সংক্রমণ প্রতিরোধে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যে প্রতিক্রিয়া দেয়, তার অনু থেকেই অ্যান্টিবডি তৈরি হয় । এটা সাধারণত সংক্রমণের পর কমপক্ষে ছয় দিনের আগে পাওয়া যায় না ।
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমব্রিজ ইনস্টিটিউট অফ থেরাপিউটিক ইমিউনোলজি এবং সংক্রামক রোগের অধ্যাপক রবি গুপ্ত বলেন, " COVID-১৯ এর পরীক্ষা করার জন্য এখনও আমাদের কাছে এমন কোনও ব্যবস্থা নেই, যাকে সর্বোচ্চ বলা যায় । কীভাবে ও কোথায় রোগীর চিকিৎসা করতে হবে, দ্রুত ও সুরক্ষিত ভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সংক্রান্ত কর্মীদের ।’’
অধ্যাপক গুপ্তর নেতৃত্বে একটি দল কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল এনএইচএস ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের অ্যাডেনব্রুকের হাসপাতালে ৪৫ জন রোগী নির্ণয়ের জন্য ব়্যাপিড পয়েন্ট অফ কেয়ার PCR এবং অ্যান্টিবডি টেস্ট করেন । এই পর্যালোচিত অধ্যয়নের ফলাফল সেল রিপোর্টস মেডিসিনে প্রকাশিত হয় ।
যে সমস্ত রোগীদের মাঝারি থেকে মারাত্মক COVID ১৯ রোগী বলে সন্দেহ করা হয়েছিল, তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়ার গড় হিসেবে সাতদিনের মধ্যে তাঁদের গলা বা নাক থেকে সোয়াব নেওয়া হয় । আর নিউক্লিক অ্যাসিড (ভাইরাস জেনেটিক উপাদান) এবং ব্লাড সেরামের সাহায্যে অ্যান্টিবডি টেস্ট করা হয় ।
সর্বোচ্চ মানের পরীক্ষার জন্য গবেষকরা দু’টি অংশের নকশা তৈরি করেছেন । যার যে কোনও একটিতে COVID ১৯ এর পজ়িটিভ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা যাবে । প্রথম অংশে একটি ইন ভিট্রো টেস্ট করা হবে । যেখানে প্রথমে SARS-Cov-2 ভাইরাস কৃত্রিম ভাবে তৈরি করা হবে । তার পর তা রোগীর থেকে সংগ্রহ করা সেরামের মধ্যে মিশিয়ে দেওয়া হবে । এরপর দেখা হবে যে সেরাম অ্যান্টিবডিকে অসাড় করে দিতে পারে কি না । আর সর্বোচ্চ মানের পরীক্ষার দ্বিতীয় অংশটি হল রোগীর নাক ও গলা থেকে নেওয়া নমুনায় জেনেটিক ভাইরাল উপাদান খুঁজে বের করা পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড গবেষণাগারের মান অনুযায়ী । এই সর্বোচ্চ মানের পরীক্ষা পদ্ধতি ব্যবহার করে ২৪ জন রোগীর শরীরে COVID ১৯ এর অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে ।