ETV Bharat / sukhibhava

সমস্যা যখন পিঠে ব্যথা - লিগামেন্ট

‘ওয়্যার অ্যান্ড টিয়ার’ আঘাত সাধারণত অতিরিক্ত পরিশ্রমের পর ক্লান্তি থেকে হয় । শরীরে যদি দুর্বলতা আগে থেকেই থাকে, তাহলে তা একে আরও খারাপ করে দিতে পারে । পিঠের মাংসপেশীর দুর্বলতা অথবা পুষ্টির কোনও রকম ঘাটতির সঙ্গেও পিঠের ব্যথার সমস্যার যোগসূত্র থাকতে পারে ।

backache problem
পিঠে ব্যাথা
author img

By

Published : Jan 21, 2021, 12:26 PM IST

পিঠে ব্যথার সমস্যা খুবই অস্বস্তিকর বিশেষ করে যদি এই ব্যথা দৈনন্দিন কাজকর্ম করার সময় হয় বা পেশাগত কোন দায়িত্ব পালন করার সময় হয়। কারণ এর ফলে আক্রান্তের মানসিক চাপ এতটাই বেড়ে যেতে পারে যে, তা তার জীবনযাত্রায় প্রভাব ফেলতে পারে। পিঠ কোন দিকে হেলে থাকবে, তা এমন কারও পক্ষে অত্যন্ত জরুরি প্রসঙ্গ, যে পিঠের ব্যথায় ভুগছে অথবা যে পিঠের ব্যথাজনিত সমস্যাগুলি এড়াতে চাইছে। আমরা এই সমস্যা সম্পর্কে আরও জানতে এবং এর নিয়ন্ত্রণের উপায় জানতে অলটারনেটিভ মেডিসিন প্র্যাকটিশনার এবং যোগ—শিক্ষিকা ডা. জাহ্নবী কাঠরানির সঙ্গে কথা বলেছি ।

মেরুদণ্ডের হাড়কে একের পর এক, সারিতে এমনভাবে সাজানো হয়েছে যাতে ওই কাঠামোয় মাংসপেশী এবং লিগামেন্টসমূহ জুড়ে গিয়ে তাকে আরও জটিল করে তোলে । এই কাঠামোর ফলেই মাসল ফাইবারের সঙ্গে অংশে টান তৈরিতে সক্ষম, এমন কোণ তৈরি হয় আর এর জেরেই পিঠের যে কোনও গতিবিধি নিয়ন্ত্রিত হয় । এই কাঠামোয় যদি কোনও বিন্যাস সরে যায় কিংবা সামান্য ‘ওয়্যার অ্যান্ড টিয়ার’ জনিত ক্লান্তি দেখা দিলেও পিঠে ব্যথা হয় যা কাজ করার সময়ও হতে পারে আবার বিশ্রামকালেও হতে পারে ।

পিঠে ব্যথা কেন হয়?

পিঠে ব্যথার কারণ অতিরিক্ত পরিশ্রম, দুর্বলতা অথবা আপাতভাবে বসে থাকা-নির্ভর জীবনযাত্রাও হতে পারে, যা সরাসরি পিঠের ভিতরের শারীরিক কাঠামোএবং কারও ফিটনেসের উপর প্রভাব ফেলতে পারে । হতে পারে মাংসপেশী বা লিগামেন্টের কোনও আঘাত থেকে এটা হচ্ছে, যা ভারী কোনও ওজন তুলতে গিয়ে হয়েছে কিংবা হঠাৎকোনও হ্যাঁচকা টান লেগে হয়েছে ।

‘ওয়্যার অ্যান্ড টিয়ার’ আঘাত সাধারণত অতিরিক্ত পরিশ্রমের পর ক্লান্তি থেকে হয় । শরীরে যদি দুর্বলতা আগে থেকেই থাকে, তাহলে তা একে আরও খারাপ করে দিতে পারে । পিঠের মাংসপেশীর দুর্বলতা অথবা পুষ্টির কোনও রকম ঘাটতির সঙ্গেও পিঠের ব্যথার সমস্যার যোগসূত্র থাকতে পারে ।

তাছাড়াও এটা দেখা গিয়েছে যে, কম জল খেলে তার থেকে স্পর্শকাতর পরিস্থিতির উদ্ভব হয় এবং তার থেকে পিঠে ব্যথা হয় । মানসিক চাপ, অবসাদও পিঠের মাসলের ক্লান্তিকে আরও গভীরে নিয়ে যেতে পারে । এমনকী, উদ্বেগ থেকেও ঘাড়ের সঙ্গে পিঠের ব্যথার সংযোগ রয়েছে ।

সুস্থ পিঠ কী?

পিঠের ভঙ্গি সবসময় যথাযথ হওয়া উচিত, কখনও পিঠ বা কাঁধ ঝুঁকিয়ে বসা বা হাঁটা উচিত নয় আবার ঘাড় এবং পিঠের নিচের দিকের অংশ ভুল ভঙ্গিতে রাখাও ঠিক

নয় ।

পিঠের মাংসপেশী সবসময় মজবুত হওয়া উচিত কারণ তা গোটা শরীরে মাংসপেশীর কাঠামোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা দেহের ভঙ্গির প্রধান ভাগ গঠন করে। মাসলে কোনও দুর্বলতা থাকলে সামান্য আঘাত বা অবসাদেই ক্ষতি হতে পারে ।

পিঠের স্বাস্থ্যরক্ষায় পুষ্টি একটি বড় ভূমিকা পালন করে । জল কতটা খাওয়া হচ্ছে থেকে শুরু করে সম্পূর্ণ মাইক্রো থেকে মেজর ‘নিউট্রিয়েন্টস’ তথা পুষ্টিকর পদার্থ পিঠের আরও ভাল স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য দায়ী ।

শরীরে স্বাস্থ্যকর রক্ত সঞ্চালন এবং পর্যাপ্ত অক্সিজেনের প্রবাহ হল পিঠের স্বাস্থ্যরক্ষার সঙ্গে সংযুক্ত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথা সবচেয়ে বেশি এড়িয়ে যাওয়া বিষয়।

শরীরে যে বিষাক্ত পদার্থসমূহ জমা হয়, যা লিভার এবং ‘লিম্ফ্যাটিক’ সিস্টেম তথা শরীরের অন্যান্য সিস্টেমের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। যদি সেগুলি সময়ে শরীর থেকে বার করা না হয়, তাহলে তা মাসকিউলেটার্স এবং জয়েন্টগুলিতে জমতে পারে এবং তার থেকে ব্যথা হতে পারে যখন সেই স্থানের মাংসপেশী কিংবা জয়েন্টে কোনও রকম গতিবিধি হয় ।

পিঠে ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে কী করা উচিত?

ফিজিওথেরাপি : পিঠের জন্য স্ট্রেন্থেনিং এবং কণ্ডিশনিং এক্সারসাইজ় করা যেতে পারে । তার সঙ্গে চলতে পারে স্ট্রেচিং সেশন । এক্সারসাইজ করার সময় শিরদঁাড়ার হাড়ের প্রতিটি অংশের দিকে খেয়াল রাখা উচিত, খেয়াল রাখা উচিত লিগামেন্টগুলির দিকেও। পিঠের বিপরীত দিকের অংশ অর্থাৎ পেটের অংশেও গুরুত্ব দিতে হবে, সেই অংশলাগোয়া মাংসপেশীগুলি যাতে মজবুত থাকে আর পশ্চাদ্দেশ যাতে শক্ত হয়, পিঠের স্বাস্থ্যের জন্য তা জরুরি । কারণ তাতে গোটা শরীরের ভারসাম্য বজায় থাকে ।

যোগচর্চা : যোগাসনে পিঠে ব্যথা কমতে পারে কারণ তাতে শরীর স্ট্রেচ করা যায় আর ‘স্ট্যাটিক এনডিউরেন্স ট্রেনিং’ও করা যায় ।

পুষ্টিগত পরামর্শ এবং পেশার নিরিখে যথাযথ সহযোগিতা পেতে পেশাদারদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন ।

কোনও প্রশ্ন থাকলে যোগাযোগ করুন ডা. জাহ্নবী কাথরানির ইমেইল jk.swasthya108@gmail.com-এ

আরও পড়ুন : হাঁচি-কাশিতেও ভেঙে যায় পিঠের হাড়, এ কেমন রোগ?

পিঠে ব্যথার সমস্যা খুবই অস্বস্তিকর বিশেষ করে যদি এই ব্যথা দৈনন্দিন কাজকর্ম করার সময় হয় বা পেশাগত কোন দায়িত্ব পালন করার সময় হয়। কারণ এর ফলে আক্রান্তের মানসিক চাপ এতটাই বেড়ে যেতে পারে যে, তা তার জীবনযাত্রায় প্রভাব ফেলতে পারে। পিঠ কোন দিকে হেলে থাকবে, তা এমন কারও পক্ষে অত্যন্ত জরুরি প্রসঙ্গ, যে পিঠের ব্যথায় ভুগছে অথবা যে পিঠের ব্যথাজনিত সমস্যাগুলি এড়াতে চাইছে। আমরা এই সমস্যা সম্পর্কে আরও জানতে এবং এর নিয়ন্ত্রণের উপায় জানতে অলটারনেটিভ মেডিসিন প্র্যাকটিশনার এবং যোগ—শিক্ষিকা ডা. জাহ্নবী কাঠরানির সঙ্গে কথা বলেছি ।

মেরুদণ্ডের হাড়কে একের পর এক, সারিতে এমনভাবে সাজানো হয়েছে যাতে ওই কাঠামোয় মাংসপেশী এবং লিগামেন্টসমূহ জুড়ে গিয়ে তাকে আরও জটিল করে তোলে । এই কাঠামোর ফলেই মাসল ফাইবারের সঙ্গে অংশে টান তৈরিতে সক্ষম, এমন কোণ তৈরি হয় আর এর জেরেই পিঠের যে কোনও গতিবিধি নিয়ন্ত্রিত হয় । এই কাঠামোয় যদি কোনও বিন্যাস সরে যায় কিংবা সামান্য ‘ওয়্যার অ্যান্ড টিয়ার’ জনিত ক্লান্তি দেখা দিলেও পিঠে ব্যথা হয় যা কাজ করার সময়ও হতে পারে আবার বিশ্রামকালেও হতে পারে ।

পিঠে ব্যথা কেন হয়?

পিঠে ব্যথার কারণ অতিরিক্ত পরিশ্রম, দুর্বলতা অথবা আপাতভাবে বসে থাকা-নির্ভর জীবনযাত্রাও হতে পারে, যা সরাসরি পিঠের ভিতরের শারীরিক কাঠামোএবং কারও ফিটনেসের উপর প্রভাব ফেলতে পারে । হতে পারে মাংসপেশী বা লিগামেন্টের কোনও আঘাত থেকে এটা হচ্ছে, যা ভারী কোনও ওজন তুলতে গিয়ে হয়েছে কিংবা হঠাৎকোনও হ্যাঁচকা টান লেগে হয়েছে ।

‘ওয়্যার অ্যান্ড টিয়ার’ আঘাত সাধারণত অতিরিক্ত পরিশ্রমের পর ক্লান্তি থেকে হয় । শরীরে যদি দুর্বলতা আগে থেকেই থাকে, তাহলে তা একে আরও খারাপ করে দিতে পারে । পিঠের মাংসপেশীর দুর্বলতা অথবা পুষ্টির কোনও রকম ঘাটতির সঙ্গেও পিঠের ব্যথার সমস্যার যোগসূত্র থাকতে পারে ।

তাছাড়াও এটা দেখা গিয়েছে যে, কম জল খেলে তার থেকে স্পর্শকাতর পরিস্থিতির উদ্ভব হয় এবং তার থেকে পিঠে ব্যথা হয় । মানসিক চাপ, অবসাদও পিঠের মাসলের ক্লান্তিকে আরও গভীরে নিয়ে যেতে পারে । এমনকী, উদ্বেগ থেকেও ঘাড়ের সঙ্গে পিঠের ব্যথার সংযোগ রয়েছে ।

সুস্থ পিঠ কী?

পিঠের ভঙ্গি সবসময় যথাযথ হওয়া উচিত, কখনও পিঠ বা কাঁধ ঝুঁকিয়ে বসা বা হাঁটা উচিত নয় আবার ঘাড় এবং পিঠের নিচের দিকের অংশ ভুল ভঙ্গিতে রাখাও ঠিক

নয় ।

পিঠের মাংসপেশী সবসময় মজবুত হওয়া উচিত কারণ তা গোটা শরীরে মাংসপেশীর কাঠামোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা দেহের ভঙ্গির প্রধান ভাগ গঠন করে। মাসলে কোনও দুর্বলতা থাকলে সামান্য আঘাত বা অবসাদেই ক্ষতি হতে পারে ।

পিঠের স্বাস্থ্যরক্ষায় পুষ্টি একটি বড় ভূমিকা পালন করে । জল কতটা খাওয়া হচ্ছে থেকে শুরু করে সম্পূর্ণ মাইক্রো থেকে মেজর ‘নিউট্রিয়েন্টস’ তথা পুষ্টিকর পদার্থ পিঠের আরও ভাল স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য দায়ী ।

শরীরে স্বাস্থ্যকর রক্ত সঞ্চালন এবং পর্যাপ্ত অক্সিজেনের প্রবাহ হল পিঠের স্বাস্থ্যরক্ষার সঙ্গে সংযুক্ত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথা সবচেয়ে বেশি এড়িয়ে যাওয়া বিষয়।

শরীরে যে বিষাক্ত পদার্থসমূহ জমা হয়, যা লিভার এবং ‘লিম্ফ্যাটিক’ সিস্টেম তথা শরীরের অন্যান্য সিস্টেমের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। যদি সেগুলি সময়ে শরীর থেকে বার করা না হয়, তাহলে তা মাসকিউলেটার্স এবং জয়েন্টগুলিতে জমতে পারে এবং তার থেকে ব্যথা হতে পারে যখন সেই স্থানের মাংসপেশী কিংবা জয়েন্টে কোনও রকম গতিবিধি হয় ।

পিঠে ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে কী করা উচিত?

ফিজিওথেরাপি : পিঠের জন্য স্ট্রেন্থেনিং এবং কণ্ডিশনিং এক্সারসাইজ় করা যেতে পারে । তার সঙ্গে চলতে পারে স্ট্রেচিং সেশন । এক্সারসাইজ করার সময় শিরদঁাড়ার হাড়ের প্রতিটি অংশের দিকে খেয়াল রাখা উচিত, খেয়াল রাখা উচিত লিগামেন্টগুলির দিকেও। পিঠের বিপরীত দিকের অংশ অর্থাৎ পেটের অংশেও গুরুত্ব দিতে হবে, সেই অংশলাগোয়া মাংসপেশীগুলি যাতে মজবুত থাকে আর পশ্চাদ্দেশ যাতে শক্ত হয়, পিঠের স্বাস্থ্যের জন্য তা জরুরি । কারণ তাতে গোটা শরীরের ভারসাম্য বজায় থাকে ।

যোগচর্চা : যোগাসনে পিঠে ব্যথা কমতে পারে কারণ তাতে শরীর স্ট্রেচ করা যায় আর ‘স্ট্যাটিক এনডিউরেন্স ট্রেনিং’ও করা যায় ।

পুষ্টিগত পরামর্শ এবং পেশার নিরিখে যথাযথ সহযোগিতা পেতে পেশাদারদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন ।

কোনও প্রশ্ন থাকলে যোগাযোগ করুন ডা. জাহ্নবী কাথরানির ইমেইল jk.swasthya108@gmail.com-এ

আরও পড়ুন : হাঁচি-কাশিতেও ভেঙে যায় পিঠের হাড়, এ কেমন রোগ?

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.