ETV Bharat / sukhibhava

অশ্বগন্ধা : মানসিক চাপ প্রশমনকারী ঔষধি গাছগাছড়া

অনিদ্রা-মানসিক চাপের বিরুদ্ধে লড়তে পারার জন্য, অনাক্রম্যতা গড়ে তোলার জন্য এবং অ্যানাবোলিক ওষুধ হিসাবে ব্যবহারের উপযোগী হওয়ার মতো গুণাগুণ থাকার কারণে বিশেষভাবে পরিচিত অশ্বগন্ধা এমনই একটি ঔষধি গাছগাছড়া, যা একাধিক স্বাস্থ্যজনিত সমস্যার সমাধানে ব্যবহৃত হয় ।

Ashwagandha: The Stress Busting Herb
Ashwagandha: The Stress Busting Herb
author img

By

Published : Dec 3, 2020, 1:40 PM IST

অশ্বগন্ধাকে উইন্টার চেরি অথবা ইন্ডিয়ান জেনসিং-ও বলা হয় । আমাদের বিশেষজ্ঞ, ড. রঙ্গনায়ুকুলু, যিনি আয়ূর্বেদের ইতিহাসে PHD প্রাপ্ত, ব্যাখ্যা করে বলেছেন, ‘Withania Somnifera’ (অশ্বগন্ধা) সোলানাসিয়ে পরিবারের অর্ন্তভুক্ত । এর শিকড়ের ঔষধি গুণাগুণ রয়েছে । অশ্বগন্ধা ভারতের সর্বত্র হয় এবং বেড়ে ওঠার সময় এটির জন্য অপেক্ষাকৃত শুষ্ক আবহাওয়া প্রয়োজন হয় ।

  • কোথায় পাওয়া যায়

ড. রঙ্গনায়ুকুলু জানিয়েছেন, অশ্বগন্ধা বাজারে সহজেই পাওয়া যায় এবং নানা রকমভাবে, যেমন শুকনো কাণ্ড এবং চূর্ণ হিসাবে । এছাড়া ‘ফিনিশড প্রোডাক্ট’ যেমন ঘৃতম (ঘি), ক্বাথ (পাচন), অরিস্তা (সামান্য অ্যালকোহলযুক্ত টনিক), তৈল (তেল), লেপা (মলম), চূর্ণ (পাউডার), লেহ্য (আপাত কঠিন, চুষে খাওয়া যায় এমন) এবং ট্যাবলেট হিসাবেও আয়ূর্বেদিক ওষুধের দোকান এবং সাধারণ ওষুধের দোকানে এটি সহজেই মেলে ।

  • অশ্বগন্ধার গুণাগুণ

আমাদের বিশেষজ্ঞের মতামত অনুযায়ী, অশ্বগন্ধার নিম্নলিখিত গুণাগুণ রয়েছে ।

1.পুনরুজ্জীবিত করে

1 থেকে 3 গ্রাম অশ্বগন্ধা শিকড়চূর্ণ দুধ, ঘি বা উষ্ণ জলের সঙ্গে 15 দিন ধরে গ্রহণ করতে হবে । এটি শরীরকে পুনরুজ্জীবিত করে এবং এর সেবনে ওজন বাড়ে ।

2.ক্ষীণতা রোধ করে

1 ভাগ অশ্বগন্ধা 4 ভাগ ঘিয়ের সঙ্গে মিশিয়ে নিন । এর সঙ্গে 10 ভাগ দুধ যোগ করে যে মিশ্রণ তৈরি হবে, তা গ্রহণে ওজন বৃদ্ধি হয় ।

3. অনিদ্রা

2 থেকে 4 গ্রাম অশ্বগন্ধা চূর্ণের সঙ্গে চিনি এবং ঈষদুষ্ণ দুধ মিশিয়ে নিন । এটি গ্রহণে অনিদ্রা কমে, ঘুম ভালো হয় । তাছাড়াও এটি মানসিক চাপ, নিউরোসিসের উপসর্গ লাঘব করে এবং অবসাদনাশক তথা সাইকোট্রপিক ওষুধ হিসাবে কাজ করে ।

4. ব্রঙ্কিয়াল অ্যাস্থমা

অশ্বগন্ধার ভস্ম (অ্যালকালি), মধু এবং ঘিয়ের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে ব্রঙ্কিয়াল অ্যাস্থমা দূরীভূত হয় ।

5. গর্ভধারণের জন্য

অশ্বগন্ধার ক্বাথ থেকে তৈরি ঘিয়ের সঙ্গে দুধ মিশিয়ে খেতে হবে বন্ধ্যাত্ব প্রতিরোধে ।

6. ক্ষত নিরাময়ে

2 থেকে 4 গ্রাম অশ্বগন্ধা চূর্ণ ঘি অথবা গুড়ের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে হবে । এতে দ্রুত ক্ষত নিরাময় হবে ।

7. প্রস্রাব চেপে রাখার অসুস্থতা সারাতে

দৈনিক 20 মিলিলিটার অশ্বগন্ধা ক্বাথ সেবনে প্রস্রাব চেপে রাখার অসুস্থতা লাঘব হয় এবং স্বাভাবিক মূত্রত্যাগে সাহায্য মেলে । মূত্র চেপে রাখার অসুস্থতা ডিহাইড্রেশন, কিডনির সমস্যা, প্রস্টেট স্ফীত হয়ে যাওয়ার সমস্যার জন্য হতে পারে ।

এছাড়াও ড. রঙ্গনায়ুকুলুর মতে, “অশ্বগন্ধা হল অ্যান্টি ব্যাকটিরিয়াল, অ্যান্টি পাইরেটিক (জ্বর কমাতে সাহায্য করে), অ্যানালজেসিক (ব্যথা নিরাময়ে সাহায্য করে), প্রদাহনাশক, অ্যান্টি কনভারস্যান্ট (পেশির নড়াচড়া সহজ করতে সাহায্য করে), অ্যান্টি টিউমার কার্যকলাপ, অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট, ইমিউনোমডিউলেটরি । এটি শরীর থেকে বিষ তাড়াতে সাহায্য করে ।”

  • ডোজ়

আমাদের আয়ূর্বেদ বিশেষজ্ঞের মতে অশ্বগন্ধা সেবন করা উচিত । শিশুদের ক্ষেত্রে 500 মিলিগ্রাম এবং প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে 1 থেকে 3 গ্রাম, তরল হিসাবে হলে 10 থেকে 20 মিলিলিটার ।

  • নিরাপত্তা সচেতনতা

অশ্বগন্ধা গর্ভাবস্থায় নেওয়া ঠিক নয় কারণ এর সেবনে প্রসবের সময় এগিয়ে আসতে পারে । তাছাড়াও সন্তানকে স্তন্যদুগ্ধ পান করাচ্ছেন যে মায়েরা, তাদের এর সেবন করা ঠিক নয় ।

  • অতিরিক্ত গুণাগুণ

ড. রঙ্গনায়ুকুলুর মতে অশ্বগন্ধার আরো কিছু গুণাগুণ রয়েছে । এগুলি হল-

ক. এতে শরীরে শক্তি সঞ্চয় হয় ।

খ. মানসিক চাপ লাঘব হয়, উদ্বেগ অবসাদ কমে ।

গ. ভালো ঘুম আসে ।

ঘ. কোলেস্টরল কম হয় ।

ঙ. ওজন বাড়ে ।

চ. স্মৃতিশক্তি বাড়ে ।

ছ. মাংসপেশি সবলতা বৃদ্ধি পায় ।

জ. ক্যানসার প্রতিরোধ করে, এটি ক্যানসার প্রতিরোধে প্রোফাইল্যাকটিক থেরাপির মতো কাজ করে ।

সুতরাং অশ্বগন্ধা হল আয়ূর্বেদিক ওষুধসমূহের মধ্যে অন্যতম সেরা । কিন্তু সবসময় মনে রাখা উচিত, নিজে থেকে ওষুধ খাওয়ার পরিবর্তে কোনও চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই ওষুধ খান । বিশেষ করে, যাদের থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের অতি বা নাতি সক্রিয়তার সমস্যা আসে, তারা অশ্বগন্ধা সেবনের আগে নিজের চিকিৎসকের সঙ্গে আগে কথা বলে নিন ।

অশ্বগন্ধাকে উইন্টার চেরি অথবা ইন্ডিয়ান জেনসিং-ও বলা হয় । আমাদের বিশেষজ্ঞ, ড. রঙ্গনায়ুকুলু, যিনি আয়ূর্বেদের ইতিহাসে PHD প্রাপ্ত, ব্যাখ্যা করে বলেছেন, ‘Withania Somnifera’ (অশ্বগন্ধা) সোলানাসিয়ে পরিবারের অর্ন্তভুক্ত । এর শিকড়ের ঔষধি গুণাগুণ রয়েছে । অশ্বগন্ধা ভারতের সর্বত্র হয় এবং বেড়ে ওঠার সময় এটির জন্য অপেক্ষাকৃত শুষ্ক আবহাওয়া প্রয়োজন হয় ।

  • কোথায় পাওয়া যায়

ড. রঙ্গনায়ুকুলু জানিয়েছেন, অশ্বগন্ধা বাজারে সহজেই পাওয়া যায় এবং নানা রকমভাবে, যেমন শুকনো কাণ্ড এবং চূর্ণ হিসাবে । এছাড়া ‘ফিনিশড প্রোডাক্ট’ যেমন ঘৃতম (ঘি), ক্বাথ (পাচন), অরিস্তা (সামান্য অ্যালকোহলযুক্ত টনিক), তৈল (তেল), লেপা (মলম), চূর্ণ (পাউডার), লেহ্য (আপাত কঠিন, চুষে খাওয়া যায় এমন) এবং ট্যাবলেট হিসাবেও আয়ূর্বেদিক ওষুধের দোকান এবং সাধারণ ওষুধের দোকানে এটি সহজেই মেলে ।

  • অশ্বগন্ধার গুণাগুণ

আমাদের বিশেষজ্ঞের মতামত অনুযায়ী, অশ্বগন্ধার নিম্নলিখিত গুণাগুণ রয়েছে ।

1.পুনরুজ্জীবিত করে

1 থেকে 3 গ্রাম অশ্বগন্ধা শিকড়চূর্ণ দুধ, ঘি বা উষ্ণ জলের সঙ্গে 15 দিন ধরে গ্রহণ করতে হবে । এটি শরীরকে পুনরুজ্জীবিত করে এবং এর সেবনে ওজন বাড়ে ।

2.ক্ষীণতা রোধ করে

1 ভাগ অশ্বগন্ধা 4 ভাগ ঘিয়ের সঙ্গে মিশিয়ে নিন । এর সঙ্গে 10 ভাগ দুধ যোগ করে যে মিশ্রণ তৈরি হবে, তা গ্রহণে ওজন বৃদ্ধি হয় ।

3. অনিদ্রা

2 থেকে 4 গ্রাম অশ্বগন্ধা চূর্ণের সঙ্গে চিনি এবং ঈষদুষ্ণ দুধ মিশিয়ে নিন । এটি গ্রহণে অনিদ্রা কমে, ঘুম ভালো হয় । তাছাড়াও এটি মানসিক চাপ, নিউরোসিসের উপসর্গ লাঘব করে এবং অবসাদনাশক তথা সাইকোট্রপিক ওষুধ হিসাবে কাজ করে ।

4. ব্রঙ্কিয়াল অ্যাস্থমা

অশ্বগন্ধার ভস্ম (অ্যালকালি), মধু এবং ঘিয়ের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে ব্রঙ্কিয়াল অ্যাস্থমা দূরীভূত হয় ।

5. গর্ভধারণের জন্য

অশ্বগন্ধার ক্বাথ থেকে তৈরি ঘিয়ের সঙ্গে দুধ মিশিয়ে খেতে হবে বন্ধ্যাত্ব প্রতিরোধে ।

6. ক্ষত নিরাময়ে

2 থেকে 4 গ্রাম অশ্বগন্ধা চূর্ণ ঘি অথবা গুড়ের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে হবে । এতে দ্রুত ক্ষত নিরাময় হবে ।

7. প্রস্রাব চেপে রাখার অসুস্থতা সারাতে

দৈনিক 20 মিলিলিটার অশ্বগন্ধা ক্বাথ সেবনে প্রস্রাব চেপে রাখার অসুস্থতা লাঘব হয় এবং স্বাভাবিক মূত্রত্যাগে সাহায্য মেলে । মূত্র চেপে রাখার অসুস্থতা ডিহাইড্রেশন, কিডনির সমস্যা, প্রস্টেট স্ফীত হয়ে যাওয়ার সমস্যার জন্য হতে পারে ।

এছাড়াও ড. রঙ্গনায়ুকুলুর মতে, “অশ্বগন্ধা হল অ্যান্টি ব্যাকটিরিয়াল, অ্যান্টি পাইরেটিক (জ্বর কমাতে সাহায্য করে), অ্যানালজেসিক (ব্যথা নিরাময়ে সাহায্য করে), প্রদাহনাশক, অ্যান্টি কনভারস্যান্ট (পেশির নড়াচড়া সহজ করতে সাহায্য করে), অ্যান্টি টিউমার কার্যকলাপ, অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট, ইমিউনোমডিউলেটরি । এটি শরীর থেকে বিষ তাড়াতে সাহায্য করে ।”

  • ডোজ়

আমাদের আয়ূর্বেদ বিশেষজ্ঞের মতে অশ্বগন্ধা সেবন করা উচিত । শিশুদের ক্ষেত্রে 500 মিলিগ্রাম এবং প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে 1 থেকে 3 গ্রাম, তরল হিসাবে হলে 10 থেকে 20 মিলিলিটার ।

  • নিরাপত্তা সচেতনতা

অশ্বগন্ধা গর্ভাবস্থায় নেওয়া ঠিক নয় কারণ এর সেবনে প্রসবের সময় এগিয়ে আসতে পারে । তাছাড়াও সন্তানকে স্তন্যদুগ্ধ পান করাচ্ছেন যে মায়েরা, তাদের এর সেবন করা ঠিক নয় ।

  • অতিরিক্ত গুণাগুণ

ড. রঙ্গনায়ুকুলুর মতে অশ্বগন্ধার আরো কিছু গুণাগুণ রয়েছে । এগুলি হল-

ক. এতে শরীরে শক্তি সঞ্চয় হয় ।

খ. মানসিক চাপ লাঘব হয়, উদ্বেগ অবসাদ কমে ।

গ. ভালো ঘুম আসে ।

ঘ. কোলেস্টরল কম হয় ।

ঙ. ওজন বাড়ে ।

চ. স্মৃতিশক্তি বাড়ে ।

ছ. মাংসপেশি সবলতা বৃদ্ধি পায় ।

জ. ক্যানসার প্রতিরোধ করে, এটি ক্যানসার প্রতিরোধে প্রোফাইল্যাকটিক থেরাপির মতো কাজ করে ।

সুতরাং অশ্বগন্ধা হল আয়ূর্বেদিক ওষুধসমূহের মধ্যে অন্যতম সেরা । কিন্তু সবসময় মনে রাখা উচিত, নিজে থেকে ওষুধ খাওয়ার পরিবর্তে কোনও চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই ওষুধ খান । বিশেষ করে, যাদের থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের অতি বা নাতি সক্রিয়তার সমস্যা আসে, তারা অশ্বগন্ধা সেবনের আগে নিজের চিকিৎসকের সঙ্গে আগে কথা বলে নিন ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.