রায়গঞ্জ, 2 জানুয়ারি: শ্বশুরবাড়িতে ঘুরতে আসা জামাইকে নৃশংসভাবে খুন। পোল্ট্রি ফার্ম থেকে উদ্ধার দেহ ৷ ঘটনা জানাজানি হতেই মঙ্গলবার তীব্র উত্তেজনা ছড়াল এলাকায় । পোল্ট্রি ফার্মে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দিল উত্তেজিত জনতা । ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ থানার বীরঘই গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত পিপলান এলাকায় । মৃত ওই জামাইয়ের নাম বানু বাস্কে (25)। বাড়ি ডালখোলা থানার অন্তর্গত পাতনৌর এলাকায় । পেশায় পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করতেন তিনি । ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আসে রায়গঞ্জ থানার পুলিশ । জল দিয়ে আগুন নেভান পুলিশ আধিকারিকরা ৷ গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তবে যুবকের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে ।
জানা গিয়েছে, সোমবার পিপলান এলাকায় একটি পোল্ট্রি ফার্মে অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তির ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয় । প্রথমে তাঁর নাম পরিচয় না পাওয়া গেলেও পরবর্তী সময়ে জানা যায় তিনি বানু বাস্কে । এরপরেই মৃত্যু ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা ৷ পোল্ট্রি ফার্মে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় ।স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ওই পোল্ট্রি ফার্মটিতে আখড়া জমিয়েছে কিছু নেশা করা ব্যক্তিরা । রীতিমতো সেখানে নেশার দ্রব্যের লেনদেন চলত । নানান সমাজ বিরোধীদের আনাগোনা লেগে থাকতে এই এলাকায় বলেও অভিযোগ ।
মৃতের পরিবারের লোকজনদের অভিযোগ, দুষ্কৃতীরাই মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে নৃশংসভাবে খুন করেছে বানুকে । এই খুনের ঘটনার সঙ্গে ওই পোল্ট্রি ফার্মে আগত দুষ্কৃতীদের যোগ রয়েছে বলে অভিযোগ । এই ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের দ্রুত গ্রেফতারের পাশাপাশি কঠোর শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছে পরিবারের সদস্য থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দারাও । একইসঙ্গে ওই এলাকায় দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম কমানো ও নেশার ব্যবসা বন্ধের দাবি তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা ।
মৃতের শ্যালক অনিল মার্ডি বলেন, "কিছুদিন আগে আমার বোনের বর বানু বাস্কে আমাদের বাড়িতে এসেছে । গতকাল সে তাঁর মামারবাড়ি থেকে ফিরছিল ৷ সেসময় দুষ্কৃতীরা তাঁর পথ আটকায় এবং তাঁর মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে । বানু বাঁধা দিতে গেলে তাঁকে নৃশংসভাবে খুন করা হয় এবং এরপর ওই পোল্ট্রি ফার্মে তাঁর দেহ রেখে দেয় দুষ্কৃতীরা । যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি ।"
অন্যদিকে স্থানীয় বাসিন্দা কালা টুডু জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকায় নেশার দ্রব্যের ব্যবসা চলত । দুষ্কৃতীদের আনাগোনা লেগেই থাকত । কিন্তু তাঁরা ভাবতে পারেননি এভাবে খুনের ঘটনা ঘটবে সেখানে । আগামীতে এ ধরনের ঘটনা আরও ঘটবে বলে মনে করে তাই গ্রামবাসীরা ওই পোল্ট্রি ফার্মটি ভেঙে আগুন জ্বালিয়ে দেয় । যাতে দুষ্কৃতীদের আনাগোনা এই এলাকায় কম হয় ।
অপরদিকে এই ঘটনায় স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী পূরণ বর্মন বলেন, "দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকায় নেশার ব্যবসা ও দুষ্কৃতীদের আনাগোনা চলছিল । বারংবার পুলিশ প্রশাসনকে বলা সত্ত্বেও পুলিশ তেমন কোনও পদক্ষেপ নেয়নি । আমরা চাই পুলিশ প্রশাসন দ্রুত দোষীদের চিহ্নিত করে তাদের উপযুক্ত শাস্তি দিক যাতে এই ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে যেন না ঘটে ।"
আরও পড়ুন: