রায়গঞ্জ, 11 ডিসেম্বর: অ্যাম্বুলেন্স না-পেয়ে হাসপাতাল যাওয়ার পথে টোটোতেই সন্তান প্রসব করলেন এক প্রসূতি । এই ঘটনায় তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকাজুড়ে । ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার হেমতাবাদ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভে শামিল হন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব ।
রবিবার ভোরে এই ঘটনাটি ঘটে উত্তর দিনাজপুর জেলার হেমতাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত দেউচি এলাকার কোড়াপাড়া গ্রামে । পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার ভোর তিনটে নাগাদ হেমতাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত দেউচি এলাকার কোড়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা প্রশান্ত কোড়ার স্ত্রী কলাবতী নাগবংশীর প্রসববেদনা ওঠে । বহুবার 102 অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবার নম্বরে ফোন করা হলেও অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ । পরিবার সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, 102 অ্যাম্বুলান্সে ফোন করা হলে সেখান থেকে একজন জানান যে, কুয়াশার কারণে রাস্তা চিনতে পারছেন না, তাই যেতে পারবেন না বলে সাফ জানানো হয় ।
বেগতিক দেখে টোটো করে সেই প্রসূতিকে নিয়ে হাসপাতালের দিকে রওনা হন পরিবারের লোকেরা । সেই সময় আর থাকতে না পেরে টোটোতেই সন্তান প্রসব করেন প্রসূতি। পরবর্তী সময়ে তাঁকে এবং সদ্যোজাত শিশুকন্যাকে হেমতাবাদ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয় ।
এই ঘটনা জানাজানি হতেই তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয় এলাকাজুড়ে । প্রতিবাদে সোমবার আন্দোলনে নামে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব । হেমতাবাদ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভে শামিল হন বিজেপির নেতা-কর্মীরা । এই ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে হেমতাবাদ স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরে । খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় হেমতাবাদ থানার পুলিশ ।
প্রসূতির স্বামী প্রশান্ত কোড়া জানিয়েছেন, "ভোরবেলা স্ত্রীর প্রসব যন্ত্রণা ওঠায় বারবার 102 অ্যাম্বুলেন্সে ফোন করি । অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যায়নি । কুয়াশার কারণে রাস্তা চিনতে পারছে না বলে জানানো হয় । পরে টোটো করে হাসপাতালের দিকে রওনা হওয়ার সময় টোটোতেই সন্তান প্রসব করেন আমার স্ত্রী ।"
এই ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলনরত হেমতাবাদের মণ্ডল সভাপতি বিপ্লব সরকার বলেন, "হেমতাবাদের বিএমওএইচ নোটিশ করে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা বন্ধ রেখেছে । ফলে একজন প্রসূতি অ্যাম্বুলেন্সে না আসতে পেরে টোটোতেই সন্তান প্রসব করেছেন । এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাই । কেন জরুরি পরিষেবা বন্ধ থাকল এবং কেন এই ঘটনা ঘটল তার আমরা জবাব চাই বিএমওএইচ-এর কাছে । সেই কারণে আমরা অবস্থান-বিক্ষোভে বসেছি ।"
যদিও গোটা ঘটনায় বিএমওএইচ আনসারুল হক জানিয়েছেন, "102 অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা চালু আছে । গত 1 ডিসেম্বর রাজ্যব্যাপী মাতৃযান পরিষেবা বন্ধ ছিল । পরবর্তীতে আমরা নোটিশ পাই। এবং মাতৃযান পরিষেবাও চালু হয়ে যায় । আমরা তা মিটিং ডেকে সকলকে জানিয়ে দিয়েছি । তবে এই বিষয়টি জানলাম । পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখছি । কারও গাফিলতি থাকলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।"
আরও পড়ুন: