রায়গঞ্জ, 4 মে : প্রথম থেকেই বাড়িতে টুকিটাকি সেলাইয়ের কাজ করতেন উত্তর দিনাজপুর জেলা BJP-র সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ির স্ত্রী রেখা লাহিড়ি । তবে এবার কোরোনা মোকাবিলায় গরিব মানুষের স্বার্থে আরও এক প্রতিবেশীকে সঙ্গী করে 10 হাজার মাস্ক তৈরির কাজে দিনরাত মেহনত করে চলেছেন রেখা দেবী । ইতিমধ্যেই প্রায় সাত হাজার মাস্ক তিনি তৈরি করে ফেলেছেন । BJP কর্মীদের মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে সেই মাস্কগুলো বিতরণ করার কাজ চলছে । কোরোনা মোকাবিলায় দুস্থ মানুষের মধ্যে বেশি সংখ্যক মাস্ক বিতরণ করতে চান তিনি ।
বিশ্বজুড়ে কোরোনা ভাইরাস থাবা বসিয়েছে । লাখ লাখ মানুষ মারা গিয়েছেন কোরোনায় আক্রান্ত হয়ে । এই মুহূর্তে লকডাউনই মূলত এই ভাইরাস থেকে মানুষকে দূরে থাকার একমাত্র উপায় । তবে এই লকডাউনের মধ্যে সবথেকে বেশি সমস্যায় পড়েছে শ্রমিক সম্প্রদায় । পাশাপাশি দিন আনা দিন খাওয়া মানুষও সমস্যার মধ্যে রয়েছে । তাদের কোথাও জুটছে না ত্রাণ কোথাও জুটছে না মাস্ক । তবে বিশেষজ্ঞরা বর্তমানে মাস্ক ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি বলে রায় দিয়েছেন । এই সমস্যার কথা মাথায় আসতেই রেখা লাহিড়ী প্রাথমিকভাবে নিজে থেকে 100 মাস্ক তৈরি করে বিতরণ করেছিলেন । তার তৈরি করা মাস্ক যথেষ্ট ভালো মানের হওয়ায় এরপরই BJP-র নেতা কর্মীরা দাবি করেন, গরিব পিছিয়ে পড়া মানুষদের জন্য মাস্ক তৈরি করে দিতে । তবে এই আবদারে পিছিয়ে না গিয়ে এক লহমায় রাজি হয়ে যান রেখা দেবী ।
দ্রুত প্রতিবেশী প্রার্থনা দত্তকে সঙ্গে নিয়ে সেলাই মেশিনে হাত লাগান তিনি । বিশ্বজিৎবাবু গেরুয়া কাপড় এবং সুতো দিয়ে স্ত্রীকে সাহায্য করেন । তারপর থেকেই লাগাতার তৈরি করা হচ্ছে মাস্ক । ইতিমধ্যেই প্রায় সাত হাজার গেরুয়া রঙের মাস্ক তৈরি করে ফেলেছেন তিনি । BJP-র কর্মীরা সেই মাস্কগুলোকে বিভিন্ন এলাকায় গরিব মানুষকে বিনামূল্যে বিতরণ করছেন । এই কাজের জন্য দলের থেকে এক পয়সাও পারিশ্রমিক নিচ্ছেন না রেখা দেবী এবং প্রার্থনা দেবী ।
রেখা লাহিড়ি বলেন, "আমি নিজের থেকে প্রথমে 100টি মাস্ক বিতরণ করেছিলাম । এরপর দলের বিভিন্ন নেতা কর্মীরা এসে আমার কাছে আরও মাস্ক তৈরি করার আবদার করে । তারপরই ঘরের সমস্ত কাজকর্ম সেরে প্রতিবেশী প্রার্থনাকে সঙ্গে নিয়ে মাস্ক তৈরি কাজ করছি । ইতিমধ্যেই প্রায় সাত হাজার মাস্ক তৈরি করে ফেলেছি । কাপড়ের জোগান থাকলে আগামী দিনেও আমি লাগাতার মাস্ক তৈরি করে যাব । এই কাজের জন্য কোনও পারিশ্রমিক নিচ্ছি না আমি ।" সহযোগী প্রার্থনা দত্ত বলেন, "রেখা দি আমাকে এই কাজে সাহায্য করার কথা বলতেই আমি রাজি হয়ে যাই । আমার স্বামী একটি ব্যাঙ্কে কাজ করেন । তিনি বেরিয়ে যেতেই বাড়ির সমস্ত কাজ শেষ করে দুপুর থেকে রাত ন'টা অবধি মাস্ক তৈরির কাজ করি । এই কাজে শামিল হতে পেরে আমি খুব খুশি ।"