রায়গঞ্জ, 5 এপ্রিল : সরকারি নিয়ম মেনে 14 দিন হোম কোয়ারান্টাইনে থাকার জন্য 12টি পরিবারকে ফুল, চকোলেট, মাস্ক দিয়ে ধন্যবাদ জানালেন রায়গঞ্জ পৌরসভার 25 নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলর অসীম অধিকারী । আজ সকালে প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে COVID-19 পোস্টার তুলে নেওয়া হয়। আগামীদিনেও লকডাউন মেনে চলার জন্য অনুরোধ করেন কাউন্সিলর । তাঁর দাবি, লকডাউনকে উপেক্ষা করে বিভিন্ন জায়গায় যেভাবে মানুষ ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তার ঠিক ভিন্ন চিত্র ধরা পড়েছে তাঁর ওয়ার্ডে। সে কারণেই সরকারি নির্দেশ পালন করা ওই বাসিন্দাদের ধন্যবাদ দেন । এদিন স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বাড়িতে বাড়িতে চকোলেট, গোলাপ, মাস্ক পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি COVID-19 এর পোস্টারও খুলে ফেলেন।
কোরনা মোকাবিলায় একাধিক পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার । দেশজুড়ে বর্তমানে লকডাউন চলছে । ভিনরাজ্য বা বিদেশ থেকে আসা মানুষদের রাখা হচ্ছে স্বাস্থ্য দপ্তর বা হোম কোয়ারানটাইনে । রায়গঞ্জ পৌরসভা এলাকাযর মধ্যে হোম কোয়ারান্টাইনে থাকা মানুষের সংখ্যার অনেক । ভিন রাজ্যে পড়াশোনা করতে যাওয়া পড়ুয়া হোক বা বিভিন্ন কাজে বিদেশে যাওয়া ব্যক্তি , তাঁরা বর্তমানে হোম কোয়ারান্টাইনে রয়েছেন । তাঁদের বাড়ির বাইরে স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে একটি করে পোস্টার টাঙানো হয়েছিল । যেখানে কবে তাঁরা বাইরে থেকে এসেছেন এবং তাঁদের হোম কোয়ারান্টাইনে দিন কবে শেষ হচ্ছে তা লিখিতভাবে রয়েছে ।
রায়গঞ্জ পৌরসভা এলাকার 25 নম্বর ওয়ার্ডের হোম কোয়ারান্টাইনে রাখা হয় 21টি পরিবারকে । এই পরিবারগুলির সদস্য এবং তাঁদের পরিবার পুরোপুরিভাবে বাড়িতে নিজেদেরকে বন্ধ করে রেখেছেন । যে কোনও ধরনের সাহায্যের জন্য স্থানীয় কাউন্সিলর অসীম অধিকারীর কাছে তাঁরা ফোন করছেন । বাড়ি থেকে কোনও ভাবেই তাঁরা বাইরে বের হচ্ছেন না । এই পদক্ষেপ যথেষ্ট প্রয়োজনীয় বলে ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য দপ্তর এবং রাজ্য সরকার জানিয়েছে । তবে বহু জায়গায় দেখা যাচ্ছে বাড়িতে পোস্টার লাগানো নিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে বচসা বেঁধেছে মানুষের । বিভিন্ন জায়গায় স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করেছেন বিদেশ থেকে ফিরে আসা মানুষজন । সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে রায়গঞ্জ পৌরসভার 25 নম্বর ওয়ার্ডের এই পরিবারগুলি যথেষ্ট সততার সঙ্গে এই সমস্ত ব্যবস্থা মেনে চলছে বলে দাবি করেন স্থানীয় কাউন্সিলর । তাঁর ওয়ার্ডে থাকা 21টি পরিবারের মধ্যে 12টি পরিবারের হোম কোয়ারান্টাইনে থাকার দিন আজ শেষ হয়ে গিয়েছে ।
আজ তাঁদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করতে বেরিয়ে পড়েন অসীমবাবু। তাঁর এই উদ্যোগে রীতিমতো খুশি হোম কোয়ারান্টাইনে থাকা পরিবারগুলি । তাঁরা কাউন্সিলরকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং যতদিন পর্যন্ত লকডাউন চলবে ততদিন সমস্ত ধরনের নির্দেশিকা মেনে চলার শপথ নিয়েছেন ।
পুনে থেকে শহরে ফেরা এক পড়ুয়া দেবাঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, " আমি পড়াশোনার জন্য পুনেতে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে ফেরার সময় এয়ারপোর্ট , ট্রেন, বাস ইত্কযাদি যানবাহন ব্যবহার করে আমাকে ফিরতে হয়েছে । বিভিন্ন লোকের সংস্পর্শে আমি ছিলাম । তাই যেদিন আমি বাড়ি ফিরেছি তারপর থেকে নিজেকে পুরোপুরিভাবে সবার থেকে আলাদা করে রেখেছিলাম। সরকারি নির্দেশিকা মেনে আমি ঘরের বাইরে যাইনি ।"
এই বিষয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর অসীমবাবু বলেন, "আমার ওয়ার্ডের 21 টি পরিবারের মধ্যে 12টি পরিবারের কোয়ারান্টাইনে দিন শেষ হয়েছে । তাই ওই পরিবারগুলিকে এত ভালোভাবেই নির্দেশিকা মানার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছি।"