শিলিগুড়ি, 9 জানুয়ারি: বঙ্গে জাঁকিয়ে পড়েছে শীত ৷ সেই শীতের আঁচ থেকে বাঁচাতে চিড়িয়াখানার প্রাণীদের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে হিটার ও ব্লোয়ারের ৷ পরিবর্তন আনা হয়েছে তাদের ডায়েট প্ল্যানেও ৷
কথায় আছে, 'পৌষের শীত মোষের গায়ে, আর মাঘের শীত বাঘের গায়ে'। এখন অবশ্য বঙ্গে এমনই অবস্থা । উত্তর সিকিমে তুষারপাত হয়েছে । সান্দাকফুও মুখ ঢেকেছে সাদা বরফের চাদরে । ফলে শীতের কামড়ে কাবু হয়েছে উত্তরবঙ্গবাসী । একই অবস্থা চিড়িয়াখানার প্রাণীগুলোর ক্ষেত্রেও । এক্কেবারে জবুথবু পরিস্থিতি । শীতের কারণে যাতে চিড়িয়াখানার প্রাণীদের কোনও কষ্ট না হয়, সেজন্য বিশেষ নজর দিচ্ছে রাজ্যের বন দফতর ও জু অথরিটি ।
চিড়িয়াখানায় রাজকীয় আয়োজন
এক কথায় বলতে গেলে রাজকীয় ব্যবস্থা করা হয়েছে চিড়িয়াখানার প্রাণীদের জন্য । আনা হয়েছে 6টা ব্লোয়ার । জ্বালানো হচ্ছে 6টি হিটার । দেওয়া হয়েছে চটের বস্তা । আবার কোথাও খড় । প্রাণীদের গা গরম রাখতে খাবারের ডায়েট প্ল্যানেও করা হয়েছে পরিবর্তন । উত্তরের দুই প্রধান চিড়িয়াখানা দার্জিলিংয়ের পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান জুলজিকাল পার্ক ও শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্কে প্রাণীদের শীতের থেকে বাঁচতে এলাহি আয়োজন করেছে পার্ক কর্তৃপক্ষ ।
ঠান্ডা থেকে বাঁচাতে বিশেষ ব্যবস্থা
এই বিষয়ে রাজ্য জু অথরিটির সদস্য সচিব সৌরভ চৌধুরী বলেন, "শীতের সময় প্রাণীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে । তবে সব প্রাণীদের ক্ষেত্রে নয় । সরীসৃপ প্রাণীরা, বিশেষ করে সাপ এই সময় শীতঘুমে চলে যায় ৷ সেজন্য তাদের ক্ষেত্রে খুব একটা পরিবর্তন করা হয়নি । তবে যাতে ঠান্ডা হাওয়া না লাগে সেজন্য কাঠের পাটাতন দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে । বাঘ ও সিংহদের ক্ষেত্রে ভোরের দিকে ব্লোয়ার ও হিটার জ্বালানো হচ্ছে । মাটির ঠান্ডা থেকে বাঁচাতে কাঠের মঞ্চ করে বস্তা দেওয়া হয় । হরিণদের ক্ষেত্রে শুকনো পাতা, বস্তা, খড় দেওয়া হয়েছে ।"
খাবারের তালিকায় পরিবর্তন
বেঙ্গল সাফারি পার্কের ডিরেক্টর ই বিজয় কুমার বলেন, "শীত থেকে বাঁচাতে সবরকম ব্যবস্থা করা হয়েছে । রাখা হয়েছে হিটার, ব্লোয়ার । খাবারেও কিছু বদল করা হয়েছে । হরিণ, গণ্ডার-সহ অন্যান্য প্রাণীদের ক্ষেত্রে বাদাম দেওয়া হচ্ছে । সিংহ, চিতাবাঘ, বাঘের মতো মাংসাশী প্রাণীদের ক্ষেত্রে দেওয়া হচ্ছে রেড মিট । অর্থাৎ খাসি, ছাগল ও গরুর মাংস । এতে শরীর গরম থাকে ।"
এছাড়াও জানা গিয়েছে, প্রতি রাতে নাইট শেল্টারে কর্মীদের বিশেষ নজর রাখতে বলা হয়েছে । বিশেষ করে রাত বারোটা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত । প্রত্যেক শেল্টারে তাপমাত্রা মাপার জন্য থার্মোমিটার দিয়ে যাচাই করা হচ্ছে । শীতের সময় মাংসাশী প্রাণীদের খাবারের পরিমাণ কিছুটা বেড়ে যায় । সেইমতো তাদের খাবার দেওয়া হচ্ছে ।