রায়গঞ্জ, 1 জুন : পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে ছোটো ছোটো অংশে ভাগ করে ব্রাউন সুগার পাচার করে যাচ্ছে উত্তর দিনাজপুরের ডিলাররা । মূলত যারা ব্রাউন সুগার আসক্ত তাদের ক্যারিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয় এই কাজে । ব্রাউন সুগার পাচারকারীর মূল পান্ডাদের প্রাথমিকভাবে জেরা করে এমনই তথ্য হাতে পেয়েছে রায়গঞ্জ পুলিশ । তদন্তকারীদের দাবি, পাচারকারীরা জানিয়েছে এক জায়গায় স্টক করে ব্রাউন সুগার প্রচুর ভাগে ভাগ করা হয় । সেগুলি পরবর্তীকালে ক্যারিয়ার এর মাধ্যমে মাদকাসক্তদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হয় ।
রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ এবং রায়গঞ্জ থানার যৌথ অভিযানে সম্প্রতি বারদুয়ারি এলাকা থেকে দুইজন ব্রাউন সুগার ডিলারকে গ্রেপ্তার করে । তাদের কাছ থেকে প্রায় 1 কেজি ব্রাউন সুগার উদ্ধার হয় । আপাতত পুলিশি হেপাজতে রাখা হয়েছে ওই দুই ডিলারকে । তাদের জেরা করে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে পেয়েছেন তদন্তকারীরা ।
তদন্তকারী অফিসারদের একাংশ জানিয়েছেন, পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে ব্রাউন সুগার একজনের থেকে আর একজনের হাতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য অভিনব উপায় বের করেছে পাচারকারীরা । ডিলাররা প্রথমে ব্রাউন সুগারগুলি এক জায়গায় জোগাড় করে । সেখান থেকে এক গ্রাম বা হাফ গ্রাম ওজনে ভাগ করে । তারপর এলাকার মাদকাসক্তদের চিহ্নিত করা হয় । তাদের হাত দিয়েই একের পর এক মাদকাসক্তের হাতে পৌঁছে যায় ব্রাউন সুগার । ছোটো ছোটো অংশে ভাগ করা ব্রাউন সুগারগুলিকে "পুড়িয়া" বা "পাতা" নামে চিহ্নিত করে ডিলাররা । কোনও কারণে পুলিশের হাতে কোনও ক্যারিয়ার ধরা পড়লেও মাদক আইনে অত্যন্ত কম সাজা থাকায় তাতে খুব একটা অসুবিধায় পড়ে না তারা । এই আইনের ফাঁকের সুযোগ নিয়েই মাদকাসক্তদের ক্যারিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ডিলাররা । কোনও কোনও সময় এলাকার দুঃস্থ যুবক বা কিশোরদের চিহ্নিত করেও ক্যারিয়ারে কাজে লাগানো হয় । তাদেরও নানাভাবে মাদক পাচারে ঢুকিয়ে নিতে সক্ষম হয় এই ব্রাউন সুগার ডিলাররা ।
এই বিষয়ে রায়গঞ্জ পুলিশ জেলা সুপার সুমিত কুমার বলেন,''আমরা এই মুহূর্তে ধৃত ব্রাউন সুগার ডিলারদের জিজ্ঞাসাবাদ করছি । তাদের থেকে অনেক ধরনের তথ্য আমরা হাতে পেয়েছি । তবে তদন্তের স্বার্থে এই মুহূর্তে আমরা সবটা জানাতে পারছি না । তবে যারা ক্যারিয়ার থাকে তাদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে ।''