রায়গঞ্জ (উত্তর দিনাজপুর), 13 জুন: অভিনব উপায়ে দল ছাড়লেন উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ ব্লকের বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল কংগ্রেসের চার প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য । মঙ্গলবার তৃণমূলের পতাকা ডাকযোগে জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের কাছে ফেরত পাঠালেন দলত্যাগীরা ৷
যাঁরা এই কাজ করেছেন, তাঁরা রায়গঞ্জ ব্লকের বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েতের বিন্দোল, কয়লাডাঙ্গি, বালিয়াদিঘি গ্রাম সংসদের প্রাক্তন সদস্য । আর পতাকা পাঠানোর খামে যে চারজনের নাম রয়েছে, তাঁরা হলেন - মনসুর আলি, প্রশান্ত জালি, মলয় সরকার ও উৎপলা বর্মন৷ তাঁদের দাবি, তাঁদের সঙ্গে আরও 2 হাজার কর্মীও তৃণমূল ছাড়লেন ৷ তৃণমূল কংগ্রেসের উত্তর দিনাজপুর জেলার সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল জানিয়েছেন, ক্ষোভ থাকলে আলোচনার মধ্যে সমাধান করা উচিত ছিল ৷
দলত্যাগীদের অভিযোগ, তৃণমূল কংগ্রেস এখন চোরেদের দলে পরিণত হয়েছে । বাড়ি থেকে বের হলেই মানুষ তাঁদের দেখে চোর চোর বলে চিৎকার করেন । সেই কারণে তাঁদের কালো চশমা পড়ে বাড়ি থেকে বের হতে হয় । এই অপমানেই তাঁদের দলত্যাগ ।
দলত্যাগী এক পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামী প্রশান্ত জালির অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল কংগ্রেস এখন আর ভালো লোকের দল নয় । পঞ্চায়েত টিকিট পেতে বুকিং সিস্টেম চালু হয়েছে । পঞ্চায়েতের টিকিট এক দেড় লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ৷ সারা বছর মানুষের সঙ্গে থাকি । সেই কারণে টাকা দিয়ে টিকিট নিইনি । তৃণমূল দুর্নীতিগ্রস্ত লোকে ভরে গিয়েছে ।’’ অন্যদিকে আরেক দলত্যাগী এক পঞ্চায়েত সদস্য মনসুর আলির দাবি, ‘‘আমরা চারজন সদস্য ও 2 হাজার কর্মী তৃণমূল ছেড়ে বেরিয়ে এলাম ৷ এই মুহূর্তে কোনও দলে যোগ দিচ্ছি না ৷ পরে বিষয়টি ভেবে দেখব৷ তবে তৃণমূল আর করব না ৷’’
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, ডাকযোগে কেন তৃণমূলের পতাকা তাঁরা জেলা সভাপতির কাছে পাঠালেন ? দলত্যাগীদের দাবি, তৃণমূল কংগ্রেসের পতাকা দলীয় কর্মীদের কাছে একটা আবেগ । তৃণমূল ছাড়লেও দলীয় পতাকা অনাদরে অবহেলায় যাতে পড়ে না থাকে, সেই কারণে ডাকযোগে জেলা সভাপতির কাছে তা ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷
অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের উত্তর দিনাজপুর জেলার সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, ‘‘মনসুর আলিকে দল থেকে বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান করা হয়েছিল । কী কারণে তিনি প্রধান থাকতে পারলেন না, সেটা তো আমি জানি না । মনসুরের যদি কোনও ক্ষোভ থাকে, দলের মধ্যে আলোচনা করা উচিত ছিল । যেহেতু আমার কাছে তিনি দলীয় পতাকা পাঠিয়েছেন, তার মানে তিনি আর তৃণমূল কংগ্রেস দল করবেন না ৷ তাহলে আমি আর কী বলব ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি চেয়েছিলাম মনসুর দলেই থাকুক ৷ কেন দল ছাড়বে ? দলের মধ্যে ওঠানামা হতেই পারে । আমার কারও সঙ্গে মতের মিল নাও হতে পারে । আর ব্যক্তিগত ভাবে দল তো কারও না । ক্ষোভ থাকলে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা উচিত ছিল ৷’’
আরও পড়ুন: তৃণমূলের বিদায়ী পঞ্চায়েত প্রধানকে যোগদানে বাধা ! তবু শাসকের 130 গেরুয়া শিবিরে