রায়গঞ্জ, 19 জুলাই : বড় ব্যবসায়ীদের অবস্থা তবু এক রকম ৷ তবে গত দেড় বছর চরম অসহায়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন ছোট ব্যবসায়ীরা ৷ গোটা দেশের পাশাপাশি এরাজ্যের অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীই রুজিরুটি হারিয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন ৷ উত্তর দিনাজপুরেও ছবিটা একই ৷
করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্যে ফের জারি হয়েছে কড়া বিধি-নিষেধ ৷ রায়গঞ্জ শহরের ডেকরেটরস থেকে ক্যাটারিং, ফুল বা ভিডিওগ্রাফির ব্যবসার সঙ্গে যুক্তরা পড়েছেন ফাঁপড়ে ৷ মাঝে দু-তিন মাস আনলক পিরিয়ড চললেও ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে সরকারি বিধি-নিষেধ থাকায় মার খাচ্ছেন এই ব্যবসায়ীরা । তাঁদের অভিযোগ, রাজনৈতিক সভা, মিটিং-মিছিলে হাজার হাজার লোকের সমাবেশ হলেও ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ জারি রয়েছে ৷ আনলক পিরিয়ডে রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছেন তাঁরা । পেশা বদল করেও অনেক ব্যবসায়ীকে পরিবারের অন্নের সংস্থান করতে পারছেন না ৷ শুধু তাই নয়, পড়ে থেকে থেকে অনেক ক্ষেত্রেই ব্যবসার সামগ্রী, কাঁচামাল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ৷ করোনা পরিস্থিতি এখন মোটামুটি স্বাভাবিকের দিকে, তাঁদের দাবি আপাতত ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানের উপর থেকে বিধি-নিষেধ তুলে দিক রাজ্য সরকার ।
2020 সালের মার্চ মাস থেকে করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে দেশজুড়ে শুরু হয়েছিল লকডাউন । বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছিল সমস্ত রকমের সভা-সমিতি, মিটিং, সমাবেশ এবং সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের উপর । করোনার প্রথম ঢেউ কিছুটা শিথিল হতেই অন্যান্য সব কিছু ফের চালু হলেও অনুষ্ঠানের উপর বিধি-নিষেধ খুব একটা শিথিল করা হয়নি ৷ এরপর আবার চলতি বছরে নতুন করে করোনা দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে দেশজুড়ে । শুরু হয় ফের কড়া বিধি-নিষেধ । কিন্তু এরই মাঝে করোনা আবহে রাজ্য বিধানসভা নির্বাচন হয় । রাজ্যের সর্বত্র হাজার হাজার মানুষের সমাবেশ, মিটিং-মিছিল চলতে থাকে ।
বর্তমানে কিছু ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ জারি থাকলেও খানিকটা সচল হয়েছে রাজ্য ৷ কিন্তু বিয়ে, অন্নপ্রাশন কিংবা ধর্মীয় অনুষ্ঠানের উপর থেকে বিধি-নিষেধ সরায়নি সরকার ৷ বিয়ের মতো অনুষ্ঠানে 50 জনের বেশি লোক বলা যাচ্ছে না ৷ ফলে সাধারন মানুষ অই ধরনের অনুষ্ঠানে ক্ষেত্রে খব একটা আগ্রহও দেখাচ্ছে না ৷ ধর্মীয় অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রেও তাই ৷ এতেই সমস্যায় পড়েছেন ডেকরেটরস বা ফুল ব্যবসায়ীরা ৷ ক্যাটারিং বা ফটোগ্রাফি ব্যবসার ক্ষেত্রেও সমস্যাটা একই ৷ বড় ধরনের কোনও অনুষ্ঠানই করছেন না রায়গঞ্জের মানুষ । ফলে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন এই ব্যবসায়ীরা । এইসব ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকদেরও অবস্থা তথৈবচ ৷
এখন ব্যবসায়ীদের আশা সামনের অক্টোবর মাস থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত দূর্গাপুজো, কালীপূজো সহ নানান সামাজিক অনুষ্ঠান যেমন বিবাহ অন্নপ্রাশনের দিনগুলো রয়েছে তাতে যদি সরকার বিধিনিষেধ তুলে দেয় তবে তাঁরা খেয়েপড়ে বেঁচে থাকবেন। কিন্তু করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের ভ্রুকুটি তাদের আশঙ্কিত করে তুলেছে ।
আরও পড়ুন : খুলেছে বই বাজার, ক্রেতার অপেক্ষায় চাতক পাখি কলেজ স্ট্রিট