রায়গঞ্জ, 26 এপ্রিল: একদিকে কোরোনা সতর্কীকরণে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার যেমন জমায়েত নিষিদ্ধ করে দিয়েছে । অন্যদিকে সারা দেশজুড়ে লকডাউন জারি হয়েছে । এতে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে সর্বত্র । এবার বাংলার শ্রেষ্ঠ দুর্গাপুজোয় তার প্রভাব ব্যাপকভাবে পড়তে চলেছে । একের পর এক ক্লাব কর্তৃপক্ষ এবারের পুজো বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে । প্রতিমা অর্ডার দিয়েও বাতিল করে দিল রায়গঞ্জের কিছু ক্লাব । অর্ডার বাতিল হওয়ায় বেশ সমস্যায় পড়লেন রায়গঞ্জ শহরের কাঞ্চনপল্লি এলাকার মৃৎশিল্পী অর্পিতা পাল ।
2015 সালে স্বামী গণেশ পাল মারা যাওয়ার পর থেকে অর্পিতা দেবী নিজেই এই পেশাকে আঁকড়ে ধরেছেন । গণেশ বাবুও ছিলেন মৃৎশিল্পী । বিগত কয়েক বছর ধরেই প্রতিমা তৈরির বরাত বেশ ভালোই পাচ্ছিলেন । একা হাতেই প্রতিমার কাঠামোয় মাটির প্রলেপ থেকে শুরু করে, তুলির টান সবেতেই তাঁর দক্ষতার পরিচয় মেলে । কিন্তু কোরোনায় এলোমেলো হয়ে গেল পরিস্থিতি । অর্ডার বেশ ভালই মিলেছিল । সেইমত কাজও শুরু করে দিয়েছিলেন তিনি । কিন্তু লকডাউনে প্রতিমা বানিয়ে ক্ষতির মুখে পড়তে হল অর্পিতা দেবীকে ।
ক্লাবগুলি বাজেট সমস্যার সম্মুখীন হওয়ায় এবছরের পুজো বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে । প্রথম দিকে অর্ডার দিয়েছিল অর্পিতা দেবীর কাছে । কোরোনার থাবায় লকডাউন চলছে । বাড়ি থাকতে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য কেন্দ্রীয় সরকার । এছাড়া প্রশাসনের তরফে জমায়েত করে অনুষ্ঠান করায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে । তাই কোনও পুজো কিংবা কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠান করা যাবে না । সেই মত পুজো কমিটিগুলি বাতিল করেছে এবছরের পুজো । কার্যত চরম সমস্যায় পড়েছেন মৃৎ শিল্পী অর্পিতা দেবী ।
অর্পিতা দেবীর কথায়, "স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে প্রতিমা গড়েই সংসার চালাতে হত । লোকজন দিয়ে কাজ শুরু করেছি । কিন্তু হঠাৎ কোরোনা সংক্রমণে এবছর দুর্গাপুজো হবে কিনা তা নিয়ে চিন্তায় আছি । সমস্ত অর্ডার বাতিলে চরম সমস্যায় পড়েছি ।"