ইসলামপুর, 11 জুন : কুদ্দুস, কাশ্মীরা ও রৌনক ৷ দু'বছরের মধ্যে বাবা-মাকে হারিয়েছে এই তিন শিশু ৷ এমন ঘটনার সাক্ষী ইসলামপুর ব্লকের মাটিকুন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের পোখরপাড়া গ্রাম ৷ প্রতিবেশীরাই আপাতত তাদের দেখভাল করছেন ৷ কিন্তু এভাবে কতদিন ?
স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য থেকে প্রধান সকলের দ্বারস্থ হয়েও কোনও সুরাহা না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় ভুগছেন প্রতিবেশীরাও ৷ বাবা মারা গিয়েছে বছর দুয়েক আগেই । স্বামীহারা মা জেহেরুন বিবি কোনওমতে তিন শিশু নিয়ে দিনমজুরি করে সংসার চালাচ্ছিলেন ৷ মাস দেড়েক হল মা জেহেরুন বিবিও মারা গিয়েছেন । তারপর থেকেই কুদ্দুস, কাশ্মীরা ও রৌনকের ভরণপোষণের দায়িত্ব তুলে নিয়েছিলেন প্রতিবেশীরা ৷
কিন্তু প্রতিবেশীদের পক্ষেও এই তিনজনের দায়ভার নেওয়া আর সম্ভব হয়ে উঠছে না । কি করবেন তাঁরা এদের নিয়ে ? কোথায় যাবেন ? কি খাবে ওরা ? এই নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন গ্রামবাসীরা ।
সাদ্দাম হোসেন নামে এক গ্রামবাসী জানান, ছয় বছর বয়সী বড় ছেলে কুদ্দুস আলম একটি মাদ্রাসাতে পড়াশুনা করে ৷ সে শারীরিকভাবে সক্ষম নয় । তারপর রয়েছে দুটি মেয়ে । একজনের বয়স চার কী পাঁচ হবে ৷ আর অন্যজনের বয়স দুই থেকে তিন বছর । ছোট মেয়েটিকে তার মামার বাড়িতে রাখা হয়েছে । কিন্তু মামারও আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভাল নয় ।
এমতাবস্থায় প্রতিবেশীদের দাবি, কোথাও যদি এই তিন অনাথ শিশুর ভরণপোষণ ও লালনপালন করার ব্যবস্থা করা যায় ৷ যাতে ওরা সেখানে বড় হয়ে উঠতে পারে । প্রতিবেশী থেকে গ্রামের বাসিন্দারা সকলেই এখন এটাই চাইছেন ।
কোনও অনাথ আশ্রমে থাকার ব্যবস্থা নিয়ে ওই শিশুদের মামা স্থানীয় প্রধানের সঙ্গে কথা বলার পরেও কোনও সুরাহা হয়নি বলে তাঁর দাবি । গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, প্রশাসন সহ একাধিক আমলারা ওই অনাথ শিশুদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিক ।
যদিও মাটিকুন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মেহেবুব আলম জানান, ঈদের তিন চারদিন আগে ওই শিশুদের মামার মাধ্যমে খবর পাওয়ার পরেই তিনি তাঁকেই বলেন শিশুদের দেখভাল করতে ৷ এক্ষেত্রে পঞ্চায়েত থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান । পাশাপাশি এলাকার সমাজসেবীদের কাছেও তিনি অনুরোধ জানিয়েছেন, যাতে সবাই শিশুগুলির পাশে এসে দাঁড়ান ।
আরও পড়ুন : লবিবাজি করে অবজ্ঞার করুণ পরিণতি, ফেসবুকে ক্ষোভ অনুপমের