রায়গঞ্জ, 10 জুন: ওড়িশার বালাসোরে ট্রেন দুর্ঘটনা কেড়েছে বহু মানুষের প্রাণ। যার মধ্যে অনেকেই এ রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিক। এই দুর্ঘটনার জেরে বাইরে কাজে যেতে ভয় পাচ্ছেন রায়গঞ্জের বেশিরভাগ পরিযায়ী শ্রমিক। আতঙ্কিত তাদের পরিবারও। অনেকেই বলছেন উপার্জন কম হলেও বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে চান।
2 জুন ঘটে গিয়েছে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনা। ওড়িশার বালাসোরে সেই ঘটনায় শোকস্তব্ধ স্বজনহারা পরিবার ৷ আতঙ্কিত যাঁরা ফিরে এসেছেন মৃত্যুর মুখ থেকে ৷ চোখের সামনে অনেকেই দেখেছেন ভয়ানক মৃত্যুর ছবি। এই ঘটনার রেশ এখনও দগদগে সকলের মনে। বেদনাদায়ক অভিশপ্ত ঘটনায় অনেকেই জীবন বাঁচানোর তাগিদে পথ চলার মোড় ঘোরাতে চাইছেন।
দুুর্ঘটনায় ইতিমধ্যেই 288 জন প্রাণ হারিয়েছেন ৷ আহত হয়েছেন হাজারেরও বেশি যাত্রী ৷ এই দুর্ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের মৃত ও আহতদের মধ্যে প্রায় বেশীরভাগই পরিযায়ী শ্রমিক। যাঁরা পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে একটু বেশি রোজগারের আশায় পাড়ি দিয়েছিলেন ভিন রাজ্যে ৷ আর এই দুর্ঘটনায় ভাবিয়েছে পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবারকে ৷ টাকা নয়, বরং সন্তান থাক বেঁচে-বর্তে ৷ এটাই এখন কাম্য পরিযায়ী শ্রমিকের বাবা-মায়েদের ৷ রায়গঞ্জের বাহিন গ্রাম পঞ্চায়েতের ভিটিয়ার, লহুজগ্রাম, ট্যাগরা-সহ অধিকাংশ এলাকার বেশীরভাগ মানুষই বাইরে যান কাজ করতে। কিন্তু এই ট্রেন দুর্ঘটনার পর তাঁরা ও তাঁদের পরিবারও আতঙ্কিত। আর কেউ কাজের জন্য বাইরে যেতে চাইছেন না।
অল্প উপার্জন হলেও পরিবার নিয়ে একসঙ্গে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে চান তাঁরা। এই গ্রামেরই পরিযায়ী শ্রমিক শাহেনশা ও শ্যামল রবিদাসদের বক্তব্য, এই দুর্ঘটনার পর তাঁরা ভীত হয়ে পরেছেন। টিভিতে স্বজনহারাদের কান্না দেখে হৃদয় ভেঙেছে তাঁদের। পরিবারের লোকেরা আর বাইরে যেতে দিতে চাইছেন না। যদি এমন ঘটনার শিকার হয় তাঁদের বাড়ির ছেলেরা! এই ভয়ে আতঙ্কিত পরিবারের কথা ভেবে পরিযায়ী শ্রমিকরা বাইরে কাজে যেতে চান না।
আরও পড়ুন: দেহ বদল! বিহারের বাসিন্দার দেহ গেল কাকদ্বীপের পরিবারের হাতে
একই বক্তব্য শোনা গিয়েছে এক পরিযায়ী শ্রমিকের বাবা লতিফুর রহমানের গলাতেও। ট্রেন দুর্ঘটনার পর তিনিও তাঁর ছেলেকে বাইরে কাজের জন্য ছাড়তে নারাজ ৷ এই সমস্ত শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের জন্য রাজ্য সরকার এখন কর্মসংস্থানের কি উদ্যোগ নেয় সেই দিকেই তাকিয়ে সকলে।