রায়গঞ্জ, 16 মে : বেনারস থেকে ট্রেনে করে কাটিহার । তারপর সেখান থেকে হেঁটে নিজের গ্রাম । কিন্তু কোরোনা সংক্রমণের আতঙ্কে বাড়ি যাননি তিনি । গ্রামের ফাঁকা মাঠেই রাত কাটাচ্ছেন । জানালেন, আগামীকাল পরীক্ষার পর সিদ্ধান্ত নেবেন বাড়ি ফিরবেন কিনা ।
তিনি রঞ্জিত বর্মণ । রায়গঞ্জ ব্লকের 12-বরুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের শিশগ্রামের বাসিন্দা । ছয় মাস আগে বেনারসে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে গিয়েছিলেন । কাজকর্ম ঠিকই চলছিল । কিন্তু লকডাউনে বন্ধ হয়ে যায় কাজ । কিন্তু, পরিবহন বন্ধ থাকায় বাড়ি ফিরতে পারছিলেন না তিনি । বাড়ির ফিরতে চান বলে সব জায়গায় জানিয়েছিলেন । তাতেও কোনও কাজ হয়নি । লকডাউনে মালিকও আর থাকতে দিতে পারবে না বলে জানিয়ে দেয় । তারপরই খবর পান, ভিনরাজ্যে আটকে পড়া শ্রমিকদের বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে । কেন্দ্রীয় সরকার থেকে কয়েকটি বিশেষ ট্রেন চালু করা হয় । সেই ট্রেনেই গতরাতে কাটিহার পৌঁছান রঞ্জিতবাবু ।
কিন্তু, কাটিহার স্টেশন থেকে বাড়ি আসার জন্য কোনও গাড়ি পাননি । তাই বাধ্য হয়েই সারাদিন হেঁটে আজ সন্ধ্যায় নিজের গ্রামে পৌঁছান । কিন্তু, নিজের বাড়ি না গিয়ে সোজা গ্রামের ফাঁকা জায়গায় পুকুরের পাশে চলে যান । পরিবারের লোকজন তাঁকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে এলেও তিনি বাড়ি যেতে রাজি হননি । তিনি বলেন, "এতদিন কষ্ট করেছি । আর এক রাত কষ্ট করতে পারব না? পরিবারের কথা ভেবেই আজ রাতটা পুকুর পাড়ে কাটিয়ে দেব । কাল আমার শারীরিক পরীক্ষা হলে দেখা যাবে বাড়ি ফিরব কিনা ।"