রায়গঞ্জ, 8 মে : রাজ্য সরকারের দেওয়া অনগ্রসর সম্প্রদায়ের ছাত্রছাত্রীদের স্কলারশিপের কোটি কোটি টাকা লোপাটে অভিযুক্ত মাহাতাবুদ্দিন গত 4 বছর আগেও মাটির বাড়িতে থাকতেন (Embezzlement Scholarship money from students)। তখন স্থানীয় দোকানদাররাও মাহাতাবুদ্দিনকে কোনও সামগ্রী দিতে চাইতেন না দাবি স্থানীয়দের । কিন্তু 4 বছর পর এখন তার বিশাল অবস্থা । তার নামে কয়েকটি বাড়ির সঙ্গে সঙ্গে জমিজমা-সহ বেশ কয়েকটি মার্কেটও রয়েছে । অন্যদিকে চার চারটি ব্য়াঙ্ক অ্য়াকাউন্টও রয়েছে তার । প্রশ্ন উঠেছে বছর পাঁচেক আগে যে কিনা ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজে যুক্ত ছিল, সেই মাহাতাবুদ্দিন কি করে এত টাকা ও সম্পত্তির মালিক হলেন ।
করণদিঘির অনগ্রসর সম্প্রদায়ভুক্ত ছাত্রছাত্রীদের রাজ্য সরকারের দেওয়া স্কলারশিপের টাকা আত্মসাতের মূল চক্রী মাহাতাবুদ্দিনকে কদিন আগেই গ্রেফতার করে করণদিঘি থানার পুলিশ । করণদিঘির সাবধান এলাকার বাসিন্দা মাহাতাবুদ্দিন তার নিজের নামে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্য়াকাউন্ট বানিয়ে এসসি, এসটি ও ওবিসি সম্প্রদায়ের ছাত্রছাত্রীদের জাতি সংশাপত্র ব্যবহার করে তাঁদের স্কলারশিপের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল । তিনি এই কাজে একা নন বলেও অভিযোগ । এখানে জড়িয়ে আছে তার তিন ভাই হায়াত আলি, হুমাউন কবির, সারজাহান আলি-সহ একাধিক ব্যক্তি । এই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই করণদিঘি থানার আইসি, বিডিও-কে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছিলেন স্থানীয় মানুষ ।
আরও পড়ুন : Scholarship Embezzlement : রায়গঞ্জে স্কলারশিপের টাকা আত্মসাৎ কাণ্ডে গ্রেফতার এক
ঘটনার প্রকৃত তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে উত্তর দিনাজপুরের জেলা শাসকের কাছেও লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন এলাকাবাসী । তারপরেই জেলা প্রশাসন পুলিশের কাছে মাহাতাবুদ্দিন-সহ একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে । এরপরেই করণদিঘি থানার পুলিশ মাহাতাবুদ্দিনকে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে । তার বিরুদ্ধে পুলিশ 420/406/468/471/120B ধারায় মামলা দায়ের করে তাকে জিঞ্জাসাবাদের জন্য 14 দিনের জন্য পুলিশি হেফাজত চেয়ে ইসলামপুর আদালতে পাঠায় ৷ আদালত তাকে 12 দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয় ।
এই কদিন মাহাতাবুদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদ্ধার করেছে পুলিশ । আরও কিছু তথ্য উদ্ধারের জন্য আবারও দু'দিনের পুলিশি হেফাজত চেয়ে শনিবার আদালতে তোলা হয় । বিচারক 2 দিনের পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর করেন । এরপরেই কীভাবে এত টাকা ও সম্পত্তি হল গ্রামে গিয়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বললে তাঁরা জানান, আগে মাহাতাবুদ্দিনের কিছুই ছিল না । স্কলারশিপের টাকা আত্মসাত করে কোটি কোটি টাকা রোজগার করেছে ৷ তাঁদের দাবি, তার সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি কঠোর সাজা হোক । আর এই ঘটনায় যুক্ত সবাইকে খুঁজে বের করা হোক ।