রায়গঞ্জ, 16 জুন : একেই করোনা আবহে কার্যত লকডাউনে কাজ নেই ৷ তার উপর দুই ছেলে প্রতিবন্ধী ৷ দুই প্রতিবন্ধী ছেলে একজনের বয়স পনোরো আর অন্যজন সাড়ে তিন বছর ৷ এছাড়াও এক মেয়ে এবং স্ত্রীকে নিয়ে তাঁর সংসার ৷ অন্যের জমিতে দিনমজুরি করে কোনও মতে দিনে দু-আড়াইশো টাকা জোগাড় হত ৷ এই বাজারদরে ওই টাকায় সংসার চলেই না ৷ এখন লকডাউনে সেই দিনমজুরিটুকুও নেই ৷ এই পরিস্থিতিতে বাচ্চাদের মুখে কোথা থেকে খাবার তুলে দেবেন ভেবে পাচ্ছেন না গৃহকর্তা ৷
উত্তর দিনাজপুরে গোয়ালপোখরের গতি পঞ্চায়েতের ইন্দু গ্রামের বাসিন্দা মনোজ দাস । পেশা দিনমজুরি ৷ নিজের জায়গা-জমি কিছু নেই ৷ অন্যের জমিতে কাজ করেন ৷ করোনাকালে নিয়মিত কাজ জুটছে না ৷ এমনটা চলছে সেই আগের বছর মার্চের শেষ থেকে ৷ সেই কবে থেকে স্বামী-স্ত্রী আধপেটা খেয়েও বাচ্চাদের মুখে ঠিকমতো খাবার তুলে দিতে পারছেন না ৷ এখনও অবধি কোনও সরকারি বেসরকারি সুযোগ-সুবিধা পাননি ৷ চরম সংকটের মুখে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ভাতার জন্য কাতর আবেদন জানাচ্ছেন মনোজ ৷
মনোজ জানান, তাঁর ছেলে দু'টি জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী । চলাফেরা করার ক্ষমতা নেই । প্রতিবন্ধী সন্তানদের জন্য যদি সরকারি কোনও সাহায্য বা ভাতা পাওয়া যায় তার জন্য বহু জায়গায় ঘুরেছেন । গোয়ালপোখরে বিডিও অফিসে গিয়েছেন ৷ রায়গঞ্জে ডিএম অফিসেও গিয়েছেন ৷ চিকিৎসার জন্য শিলিগুড়ি মেডিক্যাল কলেজেও গিয়েছেন ৷ হালে রাজ্য সরকারের 'দুয়ারে সরকার' ক্যাম্পেও দুই ছেলেকে নিয়ে গিয়েও আবেদন করে এসেছিলেন ৷ কিন্তু হয়রানি ছাড়া কোনও সুরাহা হয়নি ৷ প্রায় দিনই কাটে অনাহার বা অর্ধাহারে ৷ নিজেদের কথা ভাবেন না, বাচ্চাদের কীভাবে বাঁচাবেন সেই দুশ্চিন্তাই গ্রাস করেছে ৷ মনোজ বলেন, 'সরকার যদি পাশে না দাঁড়ায় তাহলে বাচ্চাদের নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে ৷'
মনোজের এমন দুরাবস্থার কথা জানতে পেরে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য ফয়জল আহমেদ বলেন, 'গোয়ালপোখর ব্লক অফিসে তাঁদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা করতে বলা হয়েছে । খুব শীঘ্রই তাঁদের ভাতা চালু করে দেওয়া হবে ।' পাশাপাশি অন্যান্য সাহায্য সহযোগিতার আশ্বাসও দেন তিনি ।
আরও পড়ুন : মদের টাকা জোগাতে 5 বছরের মেয়েকে বিক্রি করেছিল বাবা