রায়গঞ্জ, 26 এপ্রিল: কালিয়াগঞ্জ কাণ্ডের জেরে আচমকা পুলিশের উপর চড়াও হয়েছে সাধারণ মানুষ ৷ মঙ্গলবার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষে জড়িয়ে পরেন পুলিশ কর্মীরা ৷ ঘটনায় পুলিশ কর্মীদের পাশাপাশি সিভিক ভলেন্টিয়ারদেরও ব্যাপক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। যা নিয়ে বুধবার তীব্র উষ্মা প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ৷
কালিয়াগঞ্জে কিশোরী মৃত্যুর ঘটনার পর থেকেই উত্তপ্ত হয়ে আছে এলাকা ৷ কিশোরীর দেহ রাস্তায় রেখে আন্দোলন করতে দেখা যায় গ্রামবাসীদের ৷ এরপর দেহ উদ্ধার করতে এসেও বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে পুলিশকে ৷ কিশোরীর দেহ টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল পুলিশের বিরুদ্ধে ৷ সেই ঘটনার কয়েকদিন কেটে যাওয়ার পর এবার পুলিশের উপর চড়াও হল সাধারণ মানুষ ৷ এমনকী পুলিশ কর্মীদের ব্যাপক মারধরও করা হয়েছে ৷ সামাজিক মাধ্যমে এই ছবি ও ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই রাজ্য জুড়ে ব্যাপক আলোড়ন পড়ে যায়। তবে ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি ইটিভি ভারত।
ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে আন্দোলনকারীদের ক্ষোভের মুখে পড়ে দুই সিভিক ভলেন্টিয়ার। তাঁদের তাড়া করলে সিভিক ভলেন্টিয়াররা একটি বাড়িতে ঢুকে পড়লেও আন্দোলনকারীদের হাত থেকে রেহাই পাননি তাঁরা। বাড়িতে ঢুকে ওই দুই সিভিক ভলেন্টিয়ারকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে। এমনকী ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, ওই দুই সিভিক ভলেন্টিয়ার প্রাণ বাঁচাতে হামলাকারীদের কাছে রীতিমতো হাত জোর করে ক্ষমাও চাইছে ৷ শুধু ক্ষমা চাওয়া নয়, প্রাণ বাঁচাতে কান ধরেও ক্ষমা চাইতেও দেখা যাচ্ছে তাঁদের। এরপরই আহত সিভিক ভলেন্টিয়ারদের ফেলে রেখে হামলাকারীরা সেখান থেকে চম্পট দেয়।
উল্লেখ্য, কিশোরীকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার কালিয়াগঞ্জ থানা ঘেরাও-এর ডাক দিয়েছিল রাজবংশী, তপসিলি এবং আদিবাসী যৌথ মঞ্চ। এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পুলিশ ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে। থানায় মজুত রাখা হয়েছিল জল কামান, কাঁদানে গ্যাসও। জানা গিয়েছে, আন্দোলনকারীরা থানার সামনে আসতেই পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট বৃষ্টি শুরু হয়। পালটা পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। এরপরই লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ ৷ কিন্তু আন্দোলনকারীদের চাপে শেষে পুলিশ পিছু হটতে থাকে।
আরও পড়ুন: মালদায় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে স্কুলে ঢুকে পড়ার ঘটনায় পুলিশের প্রশংসায় মুখ্যমন্ত্রী
অবস্থা বেগতিক দেখে শেষ পর্যন্ত থানায় ঢুকে পরে পুলিশ ৷ পাশাপাশি আশপাশের বাড়িতে ঢুকে আশ্রয় নেয় পুলিশ কর্মীরা। অন্যদিকে, আন্দোলকারীরা থানায় ঢুকে পুলিশ বাজেয়াপ্ত করা গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুলিশের কোয়াটারেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ পিছু হটায় এক সময় আন্দোলনকারীদের দখলে চলে যায় গোটা এলাকা। আশপাশের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েও অবশ্য রক্ষা পেল না পুলিশ। বাড়িতে ঢুকে তাঁদের বেধড়ক মারধর করতে থাকে আন্দোলনকারীরা। এই ঘটনার অবশ্য বুধবার কড়া সমালোচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷