রায়গঞ্জ, 3 জুন : সাধারণত জুন মাসের শেষ সপ্তাহে বা জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের দিকে পরিযায়ী পাখিতে ভরে ওঠে কুলিক পাখিরালয় । তবে বর্তমানে কোরোনা ভাইরাস নিয়ে বিশ্বজুড়ে আতঙ্কের পরিবেশের মধ্যেই খুশির খবর প্রকৃতি প্রেমীদের কাছে । পরিযায়ী পাখিরা বিভিন্ন জায়গা থেকে উড়ে এসে বর্তমানে ভিড় জমিয়েছে কুলিক পাখিরালয়ে । কুলিক বনাঞ্চলের বিভিন্ন গাছে বর্তমানে ডেরা জমিয়েছে তারা । যা দেখে খুব স্বাভাবিক ভাবেই উচ্ছ্বসিত প্রকৃতি প্রেমীরা । কুলিক পাখিরালয় সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন । যদিও বনদপ্তরের দাবি সরকারি নির্দেশিকা না আসা পর্যন্ত কোনওভাবেই পাখিরালয় সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া যাবে না ।
এশিয়ার বৃহত্তম পক্ষীনিবাসদের মধ্যে অন্যতম কুলিক পাখিরালয় । প্রতি বছরই প্রায় লক্ষাধিক পাখি তাদের প্রজনন এবং তার পরবর্তী প্রক্রিয়াগুলো সম্পন্ন করতে আসে । মূলত জুন মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে এদের আগমন শুরু হয় । মায়ানমার, চিন, পাকিস্তান, বাংলাদেশ-সহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে কয়েক হাজার প্রজাতির পাখি ভিড় করে কুলিক পাখিরালয় । এই পাখিদের দেখতে সাধারণ মানুষের উৎসাহ আরও বাড়ে । প্রতি বছরই এই পাখির গণনা কাজে নানা ধরনের পরিবর্তন লক্ষ্য করেন পক্ষী বিশারদরা । এবারে মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে এদের আগমন নিয়ে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত প্রকৃতি প্রেমীরা ।
এ বিষয়ে রায়গঞ্জ ডিভিশনের DFO সোমনাথ সরকার বলেন, ‘‘এ বছরের জুন মাসের শেষ সপ্তাহে পরিবর্তে মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে পাখিরা কুলিক পাখিরালয় ভিড় জমিয়েছে । সাধারণত তারা যে সময় আসে তার থেকে কিছুদিন আগে চলে আসার জন্য আমাদের মনে হয় প্রাক বর্ষা, তাপমাত্রায় উষ্ণতার পরিমাণ কম এবং বাতাসে দূষণের মাত্রা কম থাকার জন্যই এমন ঘটনা ঘটেছে । এদের খাবারের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে । জলাশয়গুলোতে মাছ ছাড়া হয়েছে বনদপ্তরের তরফ থেকে । তবে সর্বসাধারণের জন্য এক্ষুনি কুলিক পাখিরালয় খুলে দেওয়া হচ্ছে না । সরকারি নির্দেশিকা আসলে তবে আমরা এই বিষয়ে চিন্তাভাবনা করব ।’’
রায়গঞ্জের পক্ষীবিশারদ তথা পাখি গণনাকারীদের মধ্যে অন্যতম চন্দ্রনারায়ণ সাহা বলেন, ‘‘প্রতি বছরই আমরা পাখিদের সংখ্যায় কমবেশি তারতম্য লক্ষ্য করে থাকি । তবে এবারে পাখিরা অনেক আগেই কুলিক পাখিরালয়ে প্রবেশ করেছে । মূলত পরিবেশ দূষণ না থাকার জন্যই এমন ঘটনা ঘটেছে বলে মনে হয় ।’’