রায়গঞ্জ, 20 ফেব্রুয়ারি: অবশেষে হদিশ মিলল নবান্নের সামনে কেরোসিন তেল ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করা যুবকের। তাঁর বাড়ি রায়গঞ্জ পৌরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডে। যুবকের নাম রাজীব মজুমদার। তিনি বিশেষভাবে সক্ষম। জানা গিয়েছে, রাজীব বিশেষভাবে সক্ষম হলেও ছোটবেলা থেকেই মেধাবি ছাত্র হিসেবে পরিচিতি ছিলেন। তাই তাঁর ইচ্ছে একটা সরকারি চাকরির।
জানা গিয়েছে, 2010 সালে বামফ্রন্ট সরকারের আমলে মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কাছে গিয়েছিলেন রাজীব ৷ তাঁর কাছে তিনি সরকারি চাকরির আবেদন করেছিলেন। তবে সরকারি চাকরি পাননি তিনি ৷ তারপর রাজ্যে পালাবদল ঘটে ৷ সরকারে আসে তৃণমূল ৷ পালাবাদলের পরও হাল ছাড়েননি রাজীব। সরকারি চাকরির আশায় তিনি নবান্নে যান ৷ সেখানে গিয়ে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Chief Minister Mamata Banerjee) কাছে কম করে ছয় থেকে সাতবার লিখিত আবেদন করেছিলেন বলে জানা গিয়েছে । সেখানেই থেমে থাকেননি রাজীব । মমতার কালীঘাটের বাড়িতে গিয়েও তাঁর চাকরির জন্য লিখিত আবেদন করেছিলেন তিনি। রাজীবের আশা ছিল রাজ্যের মানবিক মুখ্যমন্ত্রী তাঁর চাকরির ব্যবস্থা করে দেবেন ।
বাড়িতে রাজীবের বৃদ্ধা মা রয়েছেন । বয়স আনুমানিক 54 বছর । মা লোকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন । যে কোনদিন মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে চাকরি জন্য ডেকে নিতে পারেন । রাজীব সেই আশায় কলকাতায় বেসরকারি সংস্থায় পার্সেল সরবরাহের কাজ করতেন । দীর্ঘ কয়েকবছর এই কাজ করার পরও চাকরির জন্য ডাক না-পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েন তিনি ৷ এরপর কাজ ছেড়ে রায়গঞ্জে চলে আসেন রাজীব ।
গত 15 ফেব্রুয়ারি চাকরি চাইতে আবার নবান্নে যান তিনি। সেখানে নিরাপত্তা কর্মীরা তাঁকে নবান্নে ঢুকতে বাধা দেয় ৷ ঢুকতে না-দেওয়ার হতাশায় ব্যাগে রাখা কেরোসিন গায়ে ঢেলে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেন রাজীব। নিরাপত্তা কর্মীদের তৎপরতায় প্রাণে বেঁচে যান তিনি । পুলিশ তাঁকে হাওড়া হাসপাতালে ভর্তি করে। রায়গঞ্জ থানার পুলিশের মাধ্যমে রাজীবের পরিবার এবং রায়গঞ্জ পৌরসভার কো-অর্ডিনেটর অরুণ চন্দ ঘটনার খবর পান । 16 ফেব্রুয়ারি রাজীবের মা কল্পনা মজুমদারকে সঙ্গে নিয়ে কলকাতায় যান। শিবপুর থানা থেকে রাজীবকে তারা রায়গঞ্জে নিয়ে আসেন।
রাজীবের বোন রিঙ্কি মজুমদার জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ চাকরি জন্য বিভিন্ন জায়গায় ছোটাছুটি করছেন রাজীব। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁর আবেদন দাদার একটি চাকরি করে দিলে তিনি প্রাণে বেঁচে যান। কো-অর্ডিনেটর অরুণ চন্দ জানান, রাজীবের পরিবার দুঃস্থ। তিনি মেধাবি ছাত্র। বিশেষভাবে সক্ষম হয়েও দ্বিতীয় বর্ষ পর্যন্ত পড়াশুনা করেছে রাজীব। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দিলে ভালো হয় বলে জানান অরুণ চন্দ।
আরও পড়ুন: প্রতিশ্রুতির পরেও মেলেনি চাকরি, নবান্নের সামনে আত্মহত্যার চেষ্টা যুবকের