রায়গঞ্জ, 16 জুন : রাজ্যেজুড়ে চিকিৎসকরা যখন নিজেদের দাবি পূরণের জন্য কর্মবিরতিতে অনড় তখন দুই থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুকে রক্ত দিলেন রায়গঞ্জ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের এক চিকিৎসক । নাম নীলাঞ্জন মুখার্জি । তবে, তিনি আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের পাশেও আছেন । জানিয়েছেন, চিকিৎসকদের দাবি ফেলনার নয় ।
বৃহস্পতিবার রায়গঞ্জ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভরতি হয় বিহারের কাটিহার জেলার আনাদপুর থানার বেলুয়া গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ আরজ়ুর পাঁচ বছরের ছেলে মহম্মদ জিসান ও দুই বছরেরে কন্যা আরজ়ান ঋতু । তারা দু'জনেই থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত । শনিবার রাউন্ডে যান শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ নীলাঞ্জন মুখার্জি । চেক আপের পর তিনি জানতে পারেন শিশু দুটির শারীরিক অবস্থা ভালো নয় । তৎক্ষনাৎ রক্ত দেওয়া প্রয়োজন । দুই শিশুর রক্তের গ্রুপ A+ । কাকতালীয়ভাবে ওই চিকিৎসকের রক্তের গ্রুপও এক । তাই দেরি না করে শিশু দুটিকে রক্ত দেন তিনি । চিকিৎসকের এই পদক্ষেপে খুশি শিশুদের পরিবার ।
থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশু দুটির বাবা মহম্মদ আরজ়ু বলেন, "তিনদিন ধরে হাসপাতালে ভরতি রয়েছে আমার সন্তানরা । রক্ত পাচ্ছিলাম না । তার উপরে ডাক্তারদের ধর্মঘট চলছে । এইসময়ে নীলাঞ্জনবাবু আমার সন্তানদের রক্ত দিয়ে প্রাণ বাঁচিয়েছেন । এখন ওরা ভালো আছে ।"
চিকিৎসক নীলাঞ্জন মুখার্জি বলেন, "আমি রাউন্ডে গিয়ে দেখি শিশু দুটির শারীরিক অবস্থা খারাপ হচ্ছে । আমি শুনি ওদের ব্লাড গ্রুপ A+। আমার হঠাৎ করেই মনে হয় যখন আমার ব্লাড গ্রুপের সঙ্গে মিলেই যাচ্ছে, তাহলে তো আমি রক্ত দিতেই পারি ।"
তিনি জানান, এটা খুবই সামান্য কাজ । এরকম কাজ প্রায়শই অনেক চিকিৎসক করে থাকেন । কিন্তু NRS-এর প্রতিবাদে যে কর্মবিরতি চলছে সেটাকেও তিনি সমর্থন করেন । নীলাঞ্জনবাবু বলেন, "চিকিৎসকদের প্রাথমিক কাজ আজও আমরা করে চলেছি । নেহাত নিরুপায় না হলে পরিষেবা বন্ধ করতে দিতাম না । মানুষের কাছে একটাই কথা বলতে চাই, আমরাও মানুষ । সুস্থ মানসিকতা নিয়ে কাজ করার পরিবেশ ফিরিয়ে দিন ।"