ETV Bharat / state

Panchayat Poll Results 2023: পঞ্চায়েতে তৃণমূলের জয়জয়কারের মাঝেও কাঁটা, মন্ত্রীর এলাকায় হার ঘাসফুলের - জেলার 98টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে

উত্তর দিনাজপুরে রাজনীতিতে তৃণমূলের জয়জয়কারের মাঝেও কাঁটা গোয়ালপোখর ৷ সদ্য শেষ হওয়া পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যের মন্ত্রী গোলাম রব্বানির নিজের এলাকাতেই হেরে গেল তৃণমূল ৷

Etv Bharat
পঞ্চায়েতে তৃণমূলের জয়-জয়কারের মাঝেও কাঁটা
author img

By

Published : Jul 15, 2023, 4:03 PM IST

রায়গঞ্জ, 14 জুলাই: উত্তর দিনাজপুরের রাজনীতিতে কার্যত ঘাসফুলের জয়জয়কার ৷ সদ্য শেষ হওয়া পঞ্চায়েত নির্বাচনে অধিকাংশ জায়গাতেই শেষ হাসি হেসেছেন তৃণমূল প্রার্থীরা ৷ জেলার 98টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে 64টিতেই দোলা দিচ্ছে ঘাসফুল ৷ এর মাঝে অবশ্য একমাত্র কাঁটা রাজ্যের মন্ত্রী গোলাম রব্বানির এলাকা ৷ গোয়ালপোখর জেলা পরিষদের দু'টি আসনেই হেরে গিয়েছে তৃণমূল ৷ যা নিয়ে দল কিছুটা চিন্তিত হলেও, মন্ত্রী নিজে অবশ্য নিশ্চিন্ত ৷

অধিকাংশ পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে গেলেও ত্রিশঙ্কু হয়েছে 19টি ৷ যার মধ্যে 11টিতেই অবশ্য বোর্ড গঠনের ক্ষেত্রে 100 শতাংশ আশাবদী রাজ্যের শাসকদল ৷ পঞ্চায়েত সমিতির ন'টি আসনের একটিতেও খাতা খুলতে পারেনি বিরোধীরা ৷ কাউকে ধারেকাছে ঘেঁষতে দেয়নি তারা ৷ একইভাবে, জেলার 26টি জেলা পরিষদ আসনের মধ্যে 23টি দখল করেছে শাসকদল ৷ মাত্র ছয়টি গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে বিজেপিকে ৷ আর জেলা পরিষদের তিনটি আসন দখল করে যেন ফিনিক্স পাখির মতো জেলায় ফের মাথা তুলেছে কংগ্রেস ৷ কিন্তু এমন মৃগয়াভূমিতেও দলের মন্ত্রী আর জেলা সভাপতির দুয়ারে পরাজয়ে চিন্তিত শাসকদল ৷ কৌতূহল রয়েছে আমআদমির মধ্যেও ৷

পঞ্চায়েতের ফল প্রকাশের পর দেখা যাচ্ছে, মন্ত্রী গোলাম রব্বানির গোয়ালপোখরে জেলা পরিষদের দু'টি আসনেই হেরে গিয়েছে তৃণমূল ৷ জয় পেয়েছে কংগ্রেস ৷ যেখানে কিছুদিন আগে পর্যন্ত কংগ্রেসের পতাকা ধরার মতো লোক খুঁজে পাওয়া যেত না বলে দাবি করা হত, সেখানে হাতের এমন অভূতপূর্ব জয়ের কারণ নিয়ে বিশ্লেষণ শুরু করেছে শাসকদল ৷ শোনা যাচ্ছে, কংগ্রেসের এই জয়ের পিছনে অন্যতম কারণ আলি ইমরান রমজ ওরফে ভিক্টর ৷ ফরওয়ার্ড ব্লকের দাপুটে এই নেতা ঘাসফুলের আমলেও এই এলাকায় নিজের কর্তৃত্বের জানান দিয়েছেন বহুবার ৷ দলীয় গোলমালের জেরে তিনি পরবর্তীতে কংগ্রেসে যোগ দেন ৷ তারপর থেকেই ধীরে ধীরে ইসলামপুর মহকুমায় পুনরুত্থান হচ্ছে কংগ্রেসের ৷

যার প্রথম প্রমাণ পাওয়া গেল এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৷ ভিক্টর যে এই এলাকায় বড় ফ্যাক্টর, তা বিলক্ষণ জানেন খোদ রাজ্যের মন্ত্রী গোলাম রব্বানি ৷ তাই পঞ্চায়েত ভোটের আগে তিনি নিজের জমি আঁকড়ে পড়ে ছিলেন ৷ এমনকী দলীয় প্রার্থীদের হয়ে প্রচার করতেও তাঁকে সেভাবে নিজের এলাকার বাইরে যেতে দেখা যায়নি ৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও ব্যর্থ হয়েছেন তিনি ৷ একই কথা খাটে তৃণমূলের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের ক্ষেত্রেও ৷ তাঁর ইসলামপুর বিধানসভা কেন্দ্রেও একটি আসনে জয় পেয়েছে কংগ্রেস ৷

যদিও এসব নিয়ে প্রশ্ন করলে ফুৎকারে উড়িয়ে দিচ্ছেন কানাইয়া ৷ তাঁর সাফ কথা, “আমরা জেলার 26টি জেলা পরিষদ আসনেই জিতেছি ৷ কংগ্রেসের তিন জয়ী প্রার্থীও আমাদের ৷ দলের টিকিট না পেয়ে তাঁরা কংগ্রেসে গিয়ে প্রার্থী হয়েছিলেন ৷ ওরা আবার দলে ফিরে আসতে চাইছে ৷ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে গোটা বিষয়টি জানাচ্ছি ৷ উপর থেকে সামান্য সবুজ বার্তা পেলেই ওদের দলে টেনে নেব ৷” ভোটের আগে মমতা-অভিষেক বারবার হুঙ্কার দিয়েছিলেন, দলের টিকিট না-পেয়ে কেউ অন্য দল কিংবা নির্দল হয়ে ভোটে দাঁড়ালে, ভোটে জিতলেও তাঁকে দলে ফেরানো হবে না ৷ তাঁদের নির্ঘোষ কি শুধুই কথার কথা! উত্তর দিনাজপুরের তিন জয়ী কংগ্রেস প্রার্থীকে কানাইয়া দলে ফিরিয়ে আনলে শাসকদলের শীর্ষ দুই স্তম্ভের কথার ভীত যে টলে যেতে পারে তাও একরকম হলফ করে বলা যায় ৷

আরও পড়ুন: সন্ত্রাস সত্ত্বেও দারুণ ফল করেছে বিজেপি, দাবি শাহের; পালটা দিলেন ডেরেক-অভিষেক

তুলনায় দিব্যি আছেন কৃষ্ণ ৷ এবারের নির্বাচনে তাঁর উপর চারটি জেলা পরিষদ আসনের দায়িত্ব ছিল ৷ চারটিতেই জিতেছেন তিনি ৷ নিন্দুকরা অবশ্য বলছে, ওই চারটির কোনওটিতেই ভোট গণনা হয়নি ৷ যে অভিযোগে বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী, বিজেপির জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকার-সহ পদ্ম শিবিরের নেতৃত্ব ডিসিআরসিতে ঢুকে বিডিও শুভদীপ মণ্ডলের উপর চড়াও হয়েছিলেন ৷ নিন্দুকদের সিন্দুকে ভরে তৃণমূল এখন জেলায় জয়ের সুখনিদ্রায় মগ্ন ৷ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব বলছে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে ৷ তাই ভোটের ফলাফলে মানুষের রায় প্রতিফলিত হয়নি ৷ নয় মাস পর লোকসভা ভোট হবে অন্যরকম ৷ অন্যদিকে, কংগ্রেস তিনটি জেলা পরিষদ আসন দখল করলেও বিজেপি কেন পারেনি তা নিয়ে অবশ্য মুখে কুলুপ এঁটেছেন দলের নেতারা ৷ তবে গেরুয়া শিবির গত লোকসভা ভোটের ফল 24-এও ধরে রাখতে পারবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছেই ৷

রায়গঞ্জ, 14 জুলাই: উত্তর দিনাজপুরের রাজনীতিতে কার্যত ঘাসফুলের জয়জয়কার ৷ সদ্য শেষ হওয়া পঞ্চায়েত নির্বাচনে অধিকাংশ জায়গাতেই শেষ হাসি হেসেছেন তৃণমূল প্রার্থীরা ৷ জেলার 98টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে 64টিতেই দোলা দিচ্ছে ঘাসফুল ৷ এর মাঝে অবশ্য একমাত্র কাঁটা রাজ্যের মন্ত্রী গোলাম রব্বানির এলাকা ৷ গোয়ালপোখর জেলা পরিষদের দু'টি আসনেই হেরে গিয়েছে তৃণমূল ৷ যা নিয়ে দল কিছুটা চিন্তিত হলেও, মন্ত্রী নিজে অবশ্য নিশ্চিন্ত ৷

অধিকাংশ পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে গেলেও ত্রিশঙ্কু হয়েছে 19টি ৷ যার মধ্যে 11টিতেই অবশ্য বোর্ড গঠনের ক্ষেত্রে 100 শতাংশ আশাবদী রাজ্যের শাসকদল ৷ পঞ্চায়েত সমিতির ন'টি আসনের একটিতেও খাতা খুলতে পারেনি বিরোধীরা ৷ কাউকে ধারেকাছে ঘেঁষতে দেয়নি তারা ৷ একইভাবে, জেলার 26টি জেলা পরিষদ আসনের মধ্যে 23টি দখল করেছে শাসকদল ৷ মাত্র ছয়টি গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে বিজেপিকে ৷ আর জেলা পরিষদের তিনটি আসন দখল করে যেন ফিনিক্স পাখির মতো জেলায় ফের মাথা তুলেছে কংগ্রেস ৷ কিন্তু এমন মৃগয়াভূমিতেও দলের মন্ত্রী আর জেলা সভাপতির দুয়ারে পরাজয়ে চিন্তিত শাসকদল ৷ কৌতূহল রয়েছে আমআদমির মধ্যেও ৷

পঞ্চায়েতের ফল প্রকাশের পর দেখা যাচ্ছে, মন্ত্রী গোলাম রব্বানির গোয়ালপোখরে জেলা পরিষদের দু'টি আসনেই হেরে গিয়েছে তৃণমূল ৷ জয় পেয়েছে কংগ্রেস ৷ যেখানে কিছুদিন আগে পর্যন্ত কংগ্রেসের পতাকা ধরার মতো লোক খুঁজে পাওয়া যেত না বলে দাবি করা হত, সেখানে হাতের এমন অভূতপূর্ব জয়ের কারণ নিয়ে বিশ্লেষণ শুরু করেছে শাসকদল ৷ শোনা যাচ্ছে, কংগ্রেসের এই জয়ের পিছনে অন্যতম কারণ আলি ইমরান রমজ ওরফে ভিক্টর ৷ ফরওয়ার্ড ব্লকের দাপুটে এই নেতা ঘাসফুলের আমলেও এই এলাকায় নিজের কর্তৃত্বের জানান দিয়েছেন বহুবার ৷ দলীয় গোলমালের জেরে তিনি পরবর্তীতে কংগ্রেসে যোগ দেন ৷ তারপর থেকেই ধীরে ধীরে ইসলামপুর মহকুমায় পুনরুত্থান হচ্ছে কংগ্রেসের ৷

যার প্রথম প্রমাণ পাওয়া গেল এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৷ ভিক্টর যে এই এলাকায় বড় ফ্যাক্টর, তা বিলক্ষণ জানেন খোদ রাজ্যের মন্ত্রী গোলাম রব্বানি ৷ তাই পঞ্চায়েত ভোটের আগে তিনি নিজের জমি আঁকড়ে পড়ে ছিলেন ৷ এমনকী দলীয় প্রার্থীদের হয়ে প্রচার করতেও তাঁকে সেভাবে নিজের এলাকার বাইরে যেতে দেখা যায়নি ৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও ব্যর্থ হয়েছেন তিনি ৷ একই কথা খাটে তৃণমূলের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের ক্ষেত্রেও ৷ তাঁর ইসলামপুর বিধানসভা কেন্দ্রেও একটি আসনে জয় পেয়েছে কংগ্রেস ৷

যদিও এসব নিয়ে প্রশ্ন করলে ফুৎকারে উড়িয়ে দিচ্ছেন কানাইয়া ৷ তাঁর সাফ কথা, “আমরা জেলার 26টি জেলা পরিষদ আসনেই জিতেছি ৷ কংগ্রেসের তিন জয়ী প্রার্থীও আমাদের ৷ দলের টিকিট না পেয়ে তাঁরা কংগ্রেসে গিয়ে প্রার্থী হয়েছিলেন ৷ ওরা আবার দলে ফিরে আসতে চাইছে ৷ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে গোটা বিষয়টি জানাচ্ছি ৷ উপর থেকে সামান্য সবুজ বার্তা পেলেই ওদের দলে টেনে নেব ৷” ভোটের আগে মমতা-অভিষেক বারবার হুঙ্কার দিয়েছিলেন, দলের টিকিট না-পেয়ে কেউ অন্য দল কিংবা নির্দল হয়ে ভোটে দাঁড়ালে, ভোটে জিতলেও তাঁকে দলে ফেরানো হবে না ৷ তাঁদের নির্ঘোষ কি শুধুই কথার কথা! উত্তর দিনাজপুরের তিন জয়ী কংগ্রেস প্রার্থীকে কানাইয়া দলে ফিরিয়ে আনলে শাসকদলের শীর্ষ দুই স্তম্ভের কথার ভীত যে টলে যেতে পারে তাও একরকম হলফ করে বলা যায় ৷

আরও পড়ুন: সন্ত্রাস সত্ত্বেও দারুণ ফল করেছে বিজেপি, দাবি শাহের; পালটা দিলেন ডেরেক-অভিষেক

তুলনায় দিব্যি আছেন কৃষ্ণ ৷ এবারের নির্বাচনে তাঁর উপর চারটি জেলা পরিষদ আসনের দায়িত্ব ছিল ৷ চারটিতেই জিতেছেন তিনি ৷ নিন্দুকরা অবশ্য বলছে, ওই চারটির কোনওটিতেই ভোট গণনা হয়নি ৷ যে অভিযোগে বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী, বিজেপির জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকার-সহ পদ্ম শিবিরের নেতৃত্ব ডিসিআরসিতে ঢুকে বিডিও শুভদীপ মণ্ডলের উপর চড়াও হয়েছিলেন ৷ নিন্দুকদের সিন্দুকে ভরে তৃণমূল এখন জেলায় জয়ের সুখনিদ্রায় মগ্ন ৷ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব বলছে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে ৷ তাই ভোটের ফলাফলে মানুষের রায় প্রতিফলিত হয়নি ৷ নয় মাস পর লোকসভা ভোট হবে অন্যরকম ৷ অন্যদিকে, কংগ্রেস তিনটি জেলা পরিষদ আসন দখল করলেও বিজেপি কেন পারেনি তা নিয়ে অবশ্য মুখে কুলুপ এঁটেছেন দলের নেতারা ৷ তবে গেরুয়া শিবির গত লোকসভা ভোটের ফল 24-এও ধরে রাখতে পারবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছেই ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.