রায়গঞ্জ, 6 জুন : নদীর ধারে লাইন করে বসে রয়েছেন মহিলারা। মাটিতে ফুল, ধূপকাঠি, ফল সাজিয়ে পুজো করছেন তাঁরা। একঝলক দেখলে মনে হবে কোনও দেবীর পুজো চলছে। কিন্তু, কাছে গেলেই ভুল ভাঙবে আপনার। দেবীর পুজো হচ্ছে বটে, তবে সে দেবীর কোনও মূর্তি নেই, মাটিতেই চলছে দেবীর পুজো। "দেবী কোরোনা"-র পুজো। এভাবে পুজো করলে নাকি দেবী কোরোনা শান্ত হয়ে পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবেন। তাহলেই, প্রত্যেকে তাঁদের পরিজনদের নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকতে পারবেন। এমনই বিশ্বাস নিয়ে উত্তর দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন প্রান্তে চলছে দেবী কোরোনার পুজো।
শুরুটা হয়েছিল রায়গঞ্জ শহর থেকে। তারপর জেলার বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয় কোরোনা পুজো। সামাজিক দূরত্ব মানা, মাস্ক বা স্যানিটাইজ়ার- সে সবের বালায় নেই। দেবী কোরোনা আছেন তো রক্ষা করবেন তিনি। এমন বিশ্বাস নিয়ে সকাল থেকে কালিয়াগঞ্জের শ্রীমতি নদীর তীরে চলছে কোরোনা পুজো।
পুজোর উপকরণ নেহাত কম নয়। 9টি লাড্ডু, 9টি লবঙ্গ, 9টি জবা ফুল ও সরবত দিয়ে দেবী কোরোনাকে তুষ্ট করলেন তাঁরা। পুজো শেষে সেই ভোগ ও অন্যান্য সামগ্রী মাটিতে পুঁতে দেন। মহিলাদের বিশ্বাস, এভাবেই দেবীরূপে পুজো করে কোরোনাকে শান্ত করা সম্ভব। তাহলে দেশকে কোরোনামুক্ত করা যাবে।
জেলার বিভিন্ন প্রান্তে যখন কোরোনা পুজো চলছে, তখন সচেতনতার বার্তা দিতে পিছিয়ে নেই বিজ্ঞান মঞ্চ। এপ্রসঙ্গে কালিয়াগঞ্জ বিজ্ঞান মঞ্চের সভাপতি তপন চক্রবর্তী বলেন, “হিন্দুদের অন্য পুজোর সঙ্গে এই কোরোনা পুজোর আবির্ভাব কবে তা জানা নেই। কয়েকজনের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে এই কোরোনা মাতার আবির্ভাব ঘটানো হয়েছে। এর কোনোও যুক্তি নেই। বাস্তবের চিত্রের সঙ্গে এর কোনও মিল নেই। মানুষকে এবিষয়ে সচেতন করা হবে।"