রায়গঞ্জ, 25 জুলাই: ভিনরাজ্যে কাজ করতে গিয়ে বিজেপি সমর্থকের ছেলে পরিযায়ী শ্রমিকের রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয়েছে ৷ ঘটনায় খুনের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ৷ উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের বিগনোর এলাকার ঘটনা । মৃত ওই পরিযায়ী শ্রমিকের নাম সঞ্জয় শীল (37) । তাঁর বাড়ি রায়গঞ্জ থানার বীরঘই গ্রাম পঞ্চায়েতের রায়পুর এলাকার পিঁয়াজিমোড় হাঁটে । ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে ।
সঞ্জয়ের মা বেবীরানি শীলের অভিযোগ, তাঁর ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে । তিনি বলেন, "সোমবার সকাল 5 টা নাগাদ ছেলের ফোন আসে ৷ সেখানে বলা হয়, 26 হাজার টাকা পাঠানোর জন্য ৷ এরপরই 7টা নাগাদ ফোন করে বলা হয় সঞ্জয় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে ।" আর এই খবর আসতেই বাড়ির লোকের মনে সন্দেহ দানা বাঁধে । শুক্রবার কাজের জন্য বেরিয়ে সোমবার কীভাবে ওই যুবক আত্মহত্যা করে, এই বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন সঞ্জয়ের বাড়ির লোক ।
সঞ্জয়ের মা আরও জানান, তিনি বিজেপির কর্মী ৷ কিন্তু তাঁকে এবং তাঁর ছেলেকে এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলকে ভোট দিতে বলা হয় ৷ যার সঙ্গে সঞ্জয় উত্তরপ্রদেশে কাজ করতে গিয়ছিলেন তিনিও তৃণমূল করেন । সন্দেহ করা হচ্ছে পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোনও ঝামেলার সূত্রপাতের জেরে সঞ্জয়কে উত্তরপ্রদেশে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয়ে থাকতে পারে ৷ পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশ থেকে সঞ্জয়ের দেহ নিয়ে আসতে নানা টালবাহানা করা হয় বলে অভিযোগ ৷ সেখান থেকেই পরিবারের লোকের সন্দেহ জোড়াল হয় যে সঞ্জয়কে খুন করা হয়েছে । তবে ছেলের মৃত্যুর সঠিক তদন্তের দাবি করেছেন তাঁর মা ৷ পাশাপাশি যারা সঞ্জয়কে খুন করেছে তাদের উপযুক্ত শান্তির দাবি জানিয়েছেন বেবীরানি শীল ।
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েতে হিংসার তথ্য সংগ্রহে রাজ্যে বিজেপির প্রতিনিধি দল, রিপোর্ট যাবে নাড্ডার কাছে
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সঞ্জয় শীল আগে সেলুনে কাজ করতেন । বর্তমানে সেলুনের কাজ করে সংসার চালাতে পারছিলেন না তিনি । তাই তিনি সিদ্ধান্ত নেন ভিনরাজ্যে কাজ করে সংসার চালাবেন । সেই মতো শুক্রবার স্থানীয় এক ব্যক্তি রতন বিশ্বাসের সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের বিগনোর এলাকায় কাজের উদ্দেশ্যে যান তিনি । রবিবার সঞ্জয় সেখানে পৌঁছন । সোমবার সকালে বাড়ির লোকেদের কাছে ফোন আসে সঞ্জয় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন । উত্তরপ্রদেশ থেকে বাড়ির লোককে একটি ছবিও পাঠানো হয় তাঁর । সেই ছবিতে দেখা যায়, একটি জলের ট্যাংকের সিঁড়িতে ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলছেন ওই যুবক । আর এই খবর আসতেই কান্নায় ভেঙে পড়ে বাড়ির লোক ।