রায়গঞ্জ, 27 এপ্রিল: কালিয়াগঞ্জে পুলিশের গুলিতে বিজেপি কর্মীর মৃত্যুর ঘটনার জেরে শুক্রবার 12 ঘণ্টার উত্তরবঙ্গ বনধের ডাক দিল বিজেপি। বৃহস্পতিবার এই বনধের কথা ঘোষণা করেন রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী। কিশোরীর মৃত্যুর পর দফায়-দফায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে কালিয়াগঞ্জ ৷ সেই সংঘর্ষে পুলিশেরই গুলিতে বিজেপি কর্মীর মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ ৷ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে জেলা পুলিশ ৷
দু'দিন আগেই আগুন লাগানো হয়েছিল কালিয়াগঞ্জ থানায় ৷ উত্তেজিত গ্রামবাসীদের হাতে আক্রান্ত হয় পুলিশও ৷ অভিযোগ, ওইদিনই পুলিশের একটি টিয়ার গ্যাসের বন্দুক খোয়া যায় ৷ তা উদ্ধার করতেই বুধবার রাতে গ্রামে হানা দিয়েছিল পুলিশ ৷ অভিযোগ, তখনই পুলিশের সঙ্গে বচসার মধ্যেই মৃত্যুঞ্জয় বর্মনকে খুব কাছ থেকে গুলি করে পুলিশ ৷ রাধিকাপুরে বিজেপি কর্মীকে গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে রায়গঞ্জ-শিলিগুড়ি মোড়ে এদিন ধরনায় বসেছিলেন বিজেপি সাংসদ।
এদিন বেলা চারটে নাগাদ বৃষ্টির জন্য অবশ্য ধরনা তুলতে বাধ্য হন তিনি। বৃষ্টির কারণে ধরনা প্রত্যাহার করলেও শুক্রবার উত্তরবঙ্গে 12 ঘণ্টা বনধের ডাক দিয়েছে বিজেপি। এদিন সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী জানিয়েছেন, রাজবংশী এবং আদিবাসীদের উপর লাগাতর অত্যাচারের প্রতিবাদ জানাতেই বিজেপি এই বনধের ডাক দিয়েছে। বিজেপি কর্মীরা বনধের সমর্থনে রাস্তায় নামবে না বলেও জানান তিনি। বিজেপি নেত্রীর দেবি, মানুষকেই এই অত্যাচারের প্রতিবাদ জানাতে স্বতঃস্ফূর্ত বনধ পালন করতে হবে। বনধের জন্য মানুষকে কিছুটা সমস্যার মধ্যে পড়তে হবে বলে এদিন আগেভাগেই তিনি উত্তরবঙ্গবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন।
রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী ছাড়ায় এদিন ধরনা কর্মসূচিতে যোগ দেন বিজেপি উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকার-সহ বিজেপি নেতা-কর্মীরা। এই ধরনা মঞ্চে এসে উপস্থিত হয়েছিলেন কালিয়াগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপি সদস্য মৃত মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের ভাই, বিষ্ণু বর্মন। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শিলিগুড়ি মোড়ে জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তা-সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন ছিল। পুলিশের পক্ষ থেকে দফায় দফায় সাংসদের কাছে ধরনা তুলে নেওয়ার জন্য আবেদনও করে পুলিশ। সাংসদ অবশ্য নাছোড়বান্দা মনোভাব নিয়েই বসে ছিলেন। তিনি ধরনা তুলতে রাজি না-হলেও পরে বৃষ্টির জন্য উঠে যেতে বাধ্য হন ৷ ধরনা অবস্থানকে কেন্দ্র করে শিলিগুড়ি মোড়ে চাপা উত্তেজনারও সৃষ্টি হয়।
আরও পড়ুন: সেন্ট্রাল ভিস্তার জন্য বাংলার বরাদ্দ আটকে রেখেছে মোদি সরকার, অভিযোগ অভিষেকের