রায়গঞ্জ, 18 জুলাই: পঞ্চায়েত ভোটে উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি কে হবেন, সেই নিয়েই নতুন জল্পনা । কারণ, নজরে প্রার্থীরা নন, বরং তাঁদের প্রভাবশালী স্বামীরাই । তাই প্রশ্ন উঠছে, কোন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার স্ত্রী হবেন জেলা-পরিষদের সভাধিপতি । জেলার বেশিরভাগ প্রার্থীর স্বামীরাও রাজ্যের মন্ত্রী বা বিধায়ক পদে । পাল্লা ভারী কার ? উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের মোট আসন 26টি ৷ এবারের নির্বাচনে তৃণমূল 23টি এবং কংগ্রেস 3টি আসনে জয়ী হয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ার কারণে সভাধিপতি যে তৃণমূলেরই কেউ, তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই ৷ কিন্তু কে বসবেন সভাধিপতির চেয়ারে ? আপাতত এই আলোচনা শাসকদলের অন্দরে ৷ জেলা পরিষদের সভাধিপতি হওয়ার দৌড়ে মূলত তিনটি নাম উঠে আসছে। পম্পা পাল, জ্যোৎস্না সিনহা বর্মন এবং নবনীতা দাস মিত্র।
করণদিঘি ব্লকের 15 নম্বর জেলা পরিষদ আসনের তৃণমূল প্রার্থী পম্পা পাল। যাঁর স্বামী গৌতম পাল করণদিঘির বিধায়ক। বিজেপি প্রার্থী কমলা সরকারকে 11,300 ভোটে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন তিনি । জেলা ও রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গেও তাঁর বেশ ভালো সম্পর্ক ৷ অন্যদিকে, রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী তথা হেমতাবাদের বিধায়ক সত্যজিৎ বর্মনের স্ত্রী জ্যোৎস্না সিনহা বর্মন হেমতাবাদ ব্লকের 16 নম্বর জেলা পরিষদের জয়ী তৃণমূল প্রার্থী। বিজেপি প্রার্থী বিভাস বিশ্বাসকে 12,447 ভোটে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন। নবনীতা দাস মিত্র রায়গঞ্জ ও কালিয়াগঞ্জ ব্লকের গ্রাম পঞ্চায়েতের 18 নম্বর জেলা পরিষদের তৃণমূল প্রার্থী ৷ যাঁর স্বামী সঞ্জয় মিত্র তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক ও রায়গঞ্জ বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী ঘনিষ্ঠ ।
এই তিন জনেই জেলা সভাধিপতির দৌড়ে বলে মনে করা হচ্ছে । এমনিতেই গোষ্ঠী কোন্দলে জর্জরিত জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। ইসলামপুরের বিধায়ক আবদুল করিম চৌধুরী পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। চোপড়ার বিধায়ক হামিদুল রহমানের অনুগামীরাও জেলা নেতৃত্বের সমস্ত কর্মসূচি বয়কটের ডাক দিয়েছেন। এই অবস্থায় জেলা পরিষদের সভাধিপতির চেয়ারে নিজের অনুগামীদের বসাতে তৎপর রায়গঞ্জ, করণদিঘি ও হেমতাবাদের বিধায়করা। এনিয়ে চিন্তায় তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বও৷ অন্তত দলের তরফে সেটাই খবর ৷ যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল জানিয়েছেন, “উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি কে হবেন তা রাজ্য নেতৃত্ব ঠিক করবে। এখানে আমার কিছু বলার নেই ৷”
আরও পড়ুন: ভোট পরবর্তী হিংসা থেকে বাঁচতে অসমে পাড়ি মালদার বিজেপি কর্মীদের
এরই মধ্যে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, উত্তর দিনাজপুরে সবচেয়ে বড় কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে, প্রার্থীদের হেভিওয়েট স্বামীরা । দেখার , কোন বিধায়ক বা মন্ত্রীয় বা তৃণমূল ঘনিষ্ঠ নেতার স্ত্রী উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি হবেন ।